আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে আবারও ডিও চক্রের কারসাজি এলাচের কেজি ৩৬শ’ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সপ্তাহ খানেক আগেও ২৯শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল মসলাজাত পণ্যটি।তবে আবারও ডিও চক্রের কারসাজিতে সপ্তাহেরও কম সময়ে এলাচের দাম বেড়ে গেছে ৫-৬শ টাকা পর্যন্ত।ডিও (সরবরাহ আদেশ) চক্রে চার হাজার ছাড়িয়ে যাওয়া এলাচের দাম প্রায় হাজার টাকা কমে যায় কোরবানির ঈদের পর। কিন্তু গতকাল খাতুনগঞ্জে ৩৫শ থেকে ৩৬শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
হঠাৎ এলাচের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, এলাচের দাম হাজারের মত কমেছিল, এখন সেটা ৩৫শ থেকে ৩৬শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এটা মূলত সোনা মিয়া মার্কেট থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছেন ডিও ব্যবসায়ীরা। চক্রে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তবে মূলে আছে একাধিক শীর্ষ ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বৃদ্ধি পায় ডিও বেচাকেনা। বাড়তি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা এলাচসহ নানা মসলাজাত পণ্য মজুত করতে শুরু করেন। এতে চার হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায় এলাচের দাম। সেসময় ৪ হাজার ৫০ থেকে ৪ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
ডিও চক্রে এলাচের দাম বাড়লেও প্রকৃত দামেই পণ্যটি বিক্রির কথা বলছেন খাতুনগঞ্জে এলাচের অন্যতম বড় আমদানিকারক ও বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি অমর কান্তি বণিক। তিনি বলেন, দাম বাড়ছে সোনা মিয়া মার্কেট থেকে, সেখানে খোঁজ নিলে আসল কারণ জানা যাবে। এখন কেউ ৩৭শ বলতেছে, কেউ ৩৮শ, তবে আমি সেসবে মাথা দিচ্ছি না। আমি সেসব কেনাবেচা বন্ধ রাখছি। আমার কাছে যা আছে, আমি ২৮শ ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি।
এই বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, চাহিদা নেই, দাম বাড়ার কোনো কারণও নেই। কিন্তু ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীরা মর্জিমাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন। অনেকে নানা আইন-কানুনের কথা বলেন, তবে বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে কারও তদারকি নেই।
গেল সপ্তাহের শুরুতে খাতুনগঞ্জে সবচেয়ে ভালো মানের এলাচ ২৯শ’ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে জানান চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দীন।
এদিকে কোরবানির ঠিক আগে নূর ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নাজিম উদ্দিন এলাচসহ কয়েকটি পণ্যের ডিও বিক্রির পর পণ্য সরবরাহ না করে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এরপর ধস নামে ডিও ব্যবসায়। আর্থিক জালিয়াতির পর প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে মসলা বেচাকেনা। ঈদের পর এরসঙ্গে যোগ হয় জুন ক্লোজিংয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পক্ষের দেনা-পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। এতে বড় দরপতন ঘটে পণ্যটির। দাম কমে যায় হাজার টাকার বেশি। কয়েক দফায় হাজার থেকে এক হাজার ৭০ পর্যন্ত টাকা কমে যায় দাম। তবে জুন ক্লোজিংয়ের পর ফের দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন ডিও ব্যবসায়ীরা। তাদের তৎপরতায় চাহিদা না থাকার পরও পণ্যটির দাম বেড়ে যায় ৫-৬শ টাকা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

কুষ্টিয়ায় নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ছিনতাইচেষ্টা, যুবক আটক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এক নারী পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল ফোন ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগে আশিকুর রহমান (২১) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে থানাপাড়া পাঁচ বিল্ডিং এলাকায় এই ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে আটক করা হয়। আশিকুর রহমান খোকসা চরপাড়া এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে তাঁকে চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।সন্ধ্যায় খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতালেব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, থানার পাশেই ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবলের বাসা। ডিউটি শেষে ফেরার পথে তাঁর মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ