আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইন্টারনেটে সুরক্ষা:সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ও ব্যবসায়িক সুরক্ষা কৌশল

সানজিদা ইমরান ঝুমু আইন বিভাগ,প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়

বর্তমানে ডিজিটাল যুগে সিকিউরিটি যেমন একটি আতঙ্কের নাম তেমনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত ইন্টারনেট ব্যবহার করে আসছি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সময় কাটানো, অনলাইন কেনাকাটা করা, ব্যাংকের লেনদেন থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মের সাথে আমরা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আমাদের

কোনো না কোনোভাবে বিপদের সম্মুখীন হতে হয় যেমন:ছোট আকারের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গুলোতে পেমেন্ট সিস্টেম বা গ্রাহক তথ্য সুরক্ষিত না হলে,অপ্রতিষ্ঠিত ড্রপ শিপিং ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট বা ফ্রিল্যান্সারের পক্ষ থেকে প্রতারণা, সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম গুলোতে অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং,ভুল তথ্য প্রচার বা প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্টার্টআপ ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে যথেষ্ট ফান্ডিং না পাওয়া ইত্যাদি।সাইবার অপরাধের ফলে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের

বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভয়াবহ ও আর্থিক পরিণতি ঘটতে পারে। একটি সফল সাইবার আক্রমণের ফলে অর্থ, মেধাসত্ত্ব এবং গ্রাহকের ডাটা হারানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে যা পুনরুদ্ধার করা বেশ ব্যয়বহুল।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪,”এর ধারা ২৪ এর উপধারা ১ এ বলা হয়েছে,”কোন ব্যাংক বীম বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হইতে কোন ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করিয়া আইনানুগ কর্তৃত্ব ব্যতিরেকে যদি ই-ট্রানজেকশন করেন,

সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময় সময়, জারিকৃত কোন ই-ট্রানজেকশন কে অবৈধ ঘোষণা করা সত্বেও ই-ট্রানজেকশন করেন, তাহলে তিনি অনধিক এক বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অনধিক ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন”।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ১৯ এর উপধারা ১ এ”ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেরক বা গ্রাহকের অনুমতি ব্যতীত,কোন পণ্য বা সেবা বিপণন এর উদ্দেশ্যে স্পাম উৎপাদন বা বাজারজাত করেন বা করিবার চেষ্টা করেন বা অযাচিত ইলেকট্রনিক মেইল প্রেরণ করেন,তাহলে তিনি অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন”।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ধারা ৬৩ অনুযায়ী,”কোন ব্যক্তি যদি এই আইন বা তদধীন

প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীনে কোন ইলেকট্রনিক রেকর্ড,বই, রেজিস্টার,পত্র যোগাযোগ,তথ্য দলিল বা অন্য কোন বিষয়বস্তুতে প্রবেশাধিকার করে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পত্তিকে ব্যতিরেকে কোন ইলেকট্রনিক রেকর্ড,বই,রেজিস্ট্রার, সেনসিটিভ ডকুমেন্ট অন্য কোন ব্যক্তির কাছে প্রবেশ করে তাহলে তিনি অনধিক দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত বা অনধিক ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণ এবং ডেটা লঙ্ঘন দিন দিন বাড়ছে, যা ব্যবসায়িক নেতার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এসব হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, ব্যবসায়ীদের অবশ্যই সক্রিয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই ঘটনাগুলো সংবেদনশীল তথ্যের ক্ষতি ঘটায় এবং প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি নষ্ট করে। কার্যকরভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে, কোম্পানিগুলোর একটি সামগ্রিক নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে হুমকি সনাক্তকরণ এবং প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা।

এটি অপ্রত্যাশিত প্রবেশ প্রতিরোধের জন্য সিস্টেমগুলোর যথাযথ কনফিগারেশন এবং ডেটা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে একটি সুসংহত প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা নিশ্চিত করা জড়িত। ট্রাস্ট তৈরি এবং উন্নত সাইবার নিরাপত্তায় বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিরাপত্তা অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে।

সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব শুধু কমপ্লায়েন্সের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা চলমান রূপান্তর এবং উদ্ভাবনকে সহায়তা করে। পাশাপাশি সরকারের ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানুয়াল অনুযায়ী যদি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানগুলো চালানো সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই নিরাপত্তা সূচকে আরো অগ্রসর হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ