আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

টাকা আত্মসাত, এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম পরিবারের তিন সদস্যসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা দুইটি ভারতে অন্তরীণ পি কে হালদার, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের ভাই বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীনও আসামির তালিকায় আছেন।

সোমবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ জানিয়েছেন, সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার রোববার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দুটি দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, দুই মামলার মধ্যে একটিতে ঋণ জালিয়াতি করে ২৯ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা এবং আরেকটিতে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের ভাই ওসমান গণি, ভাগ্নে মোস্তান বিল্লাহ আদিল ও জামাতা বেলাল আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। এরা সাবেক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, যা পরে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক হয়েছে, সেটার পরিচালক ছিলেন। প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোরহানুল হাসান চৌধুরীকে পরিচালক হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ঋণগ্রহীতা সাদ মুসা গ্রুপের কর্নধার মোহাম্মদ মোহসিন (৬৫), তার স্ত্রী মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিস চৌধুরী (৬০), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী (৬৫), সাবেক পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ (৭০), ড. মোহাম্মদ ফারুক (৭১), আরিফ আহমেদ (৪৩), মায়মুনা খানম (৩৪), সরোয়ার জাহান মালেক (৬২), শাহানা ফেরদৌস (৪৯), সাজেদা নুর বেগম (৫৮), সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দৌলা (৭৬) ও এস এ এম সলিমউল্লাহ (৭৫)।

এ ছাড়া গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম সারওয়ার (৭১), সাবেক এসভিপি এন্ড হেড অব ক্রেডিট মোহাম্মদ মাহমুদ আলম (৫৪), উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জাহেদ (৬৮), ব্যবস্থাপকমো. শামসুল আলম (৫২), মুন্নিশ্রী চক্রবর্তী (৪৯), প্রিন্সিপ্যাল অফিসার মো. হাসান আলী (৪৫), জুনিয়র অফিসার রিফাত ইফতেখারুল আলম (৩৯), মো. মিজানুর রহমান এবং নিগার সুলতানা (৩৯)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে চট্টগ্রামের সাদ মুসা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের নামে দুটি ঋণ অনুমোদন হয়। আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন।দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ২০১২ সালের মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় মামলা দুটি করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ