
চলচ্চিত্র, ব্যবসা ও সামাজিক কর্মকান্ডে বিশেষ অবদান রাখায় স্বীকৃতি স্বরুপ আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন সুন্দরী মিস বাংলাদেশ-১৯৯৫ খ্যাত চলচ্চিত্র নায়িকা, কক্সবাজার ওমেন্স চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক মাসুকা নাসরিন রাকা। গত ২৬ জুলাই ঢাকার বাংলা মোটরস্থ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে স্টার বাংলাদেশ মিডিয়া ও জাতীয় দৈনিক অভয়নগর পত্রিকার উদ্যোগে আয়োজিত মিডিয়া অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিয়ার আইকনিক অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ উপলক্ষে ” উদ্যােক্তার সফলতার পেছনের কথা ও মিডিয়ার ভূমিকা ” শীর্ষক আলোচনা সভা ও ই-ক্রয় প্রেজেন্ট’স অনুষ্ঠানে মাসুকা নাসরিন রাকা’কে এ আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই সাথে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোঃ জয়নুল আবেদীনকে।
বিশিষ্ট অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকা বাংলাদেশ মার্শাল আর্টের জনক প্রজোযক, পরিচালক ও নায়ক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম এর সহধর্মিণী।

এছাড়া অনুষ্ঠানে শোবিজ, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক, আইসিটি ও আইটি, রিয়েল এস্টেট, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং নারী উদ্যােক্তা সহ দেশ বরেণ্য মানবিক কাজে যারা দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছেন তাদের মধ্যে বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ৩০ জনকে মিডিয়া অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিয়ার আইকনিক অ্যাওয়ার্ড সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান, স্টার বাংলাদেশ মিডিয়া ও জাতীয় দৈনিক অভয়নগর পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আরিফুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন, ডিএমপি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শাহজাহান সাজু। বিশেষ অতিথি ছিলেন, দৈনিক অভয়নগর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ শাহিন হোসেন, আশিক আহমেদ, ইভান শাহরিয়ার সোহাগ, এ কে এম মুশফিকুল আলম। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম, ব্যবসায়ী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এসময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার ছিলেন এটিএন বাংলা।
উল্লেখ, অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকা ১১ই নভেম্বর কুমিল্লা জেলার চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর বেড়ে উঠা ঢাকা শহরে। তাঁর পিতা আব্দুল মান্নান ও মাতা কামরুন নাহার মন্নান। তিনি ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিমনা ছিলেন। কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়ে ছিলেন বেশ মনোযোগী। তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকা আজিমপুর থেকে। তিনি আজিমপুর গার্লস হাই স্কুল থেকে এস এস সি, বদরুন্নেসা কলেজ থেকে এইচ এস সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওনার্স মাস্টার্স পাশ করেন। পরবর্তীতে স্টামফোর্ট ইউনিভার্সিটি থেকে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়ার উপর পড়াশোনা করে মাস্টার্স পাশ করে ডাবল এম এ উন্নীত হন।

তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনে ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর ধারাবাহিক উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে, তথাপি, মাটির মায়, আপন নিবাস ও অতন্ত্র প্রহর। এছাড়া তিনি বেশ কিছু খন্ড একক নাটকে অভিনয় করেন।যার মধ্যে কোথায় ও ক্ষরন, সোনার বলয়, ভালোবাসবে না কেন মন, মন বলে তুমি, আমার দুটি ভাই, ঢাকা চাঁদনি গড়ের কয়েকদিন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইত্যাদি। এছাড়া তিনি যুক্ত হন লেখালেখি, সাংবাদিকতা, গল্প কবিতার বই লিখাতেও অবদান রাখেন। ১৯৯৩ সালের বই মেলাতে তাঁর প্রথম আবৃত্তির ক্যাসেট প্রকাশ পায়। সেখানে তিনি বেস্ট আবৃত্তিকার হিসেবে বিবেচিত হন এবং
তিনি একমাত্র অভিনেত্রী যিনি বিদেশের মাটিতে মূকাভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন।
মাসুকা নাসরিন রাকা’র ১৯৯৭ সালে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম এর হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ” সুন্দরী মিস বাংলাদেশ “। এ ছবি ব্যবসা সফল হওয়ায় তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, একের পর এক ২৫টি ছবিতে কাজ করেন তিনি। তাঁর উল্লেখ যোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে, সুন্দরী মিস বাংলাদেশ, কুংফু নায়ক, পেশাদার খুনি, বিদ্রোহী মাস্তান, ওস্তাদের ওস্তাদ, ডাইরেক্ট এ্যাকশান, লোহার শিকল, মরণ নিশান, লাল চোখ, জলন্ত বিস্ফোরণ, ক্যাপ্টেন মারুফ, পিতা পুত্রের গল্প, নীল নকশা, তুষের আগুন ও আমি নারী ইত্যাদি। ব্যক্তি জীবনে রাকা ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির ঘরে তাজওয়ার আলম ও রেজওয়ার আলম নামের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ শিক্ষিত এই নায়িকা বর্তমানে অভিনয়ের পাশাপাশি মানবিক ও সামাজিক কর্মকান্ড এবং রিসোর্ট ব্যবসায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।










