আজঃ বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

পতিত জমিতে সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে হাকালুকি হাওর।

তিমির বনিক মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার:

এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের সুর্যমুখীর হাসিতে দিগন্তে জুড়ে হলুদের হাঁসি ছড়িয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হাওরের সুর্যমুখী ফুল নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষের ছবি জায়গা পাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

কৃষি অফিস সূত্রের বরাতে জানা যায়, হাকালুকি হাওর তীরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় প্রণোদনার আওতায় ২৩০ জন কৃষক ২৩০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। চাষকৃত সূর্যমুখীর ফুলের মধ্যে হাইসান-৩৩, আরডিএস ২৭৫ জাতের আবাদ করা হয়েছে। বিনোদনের পাশাপাশি মূলত তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের প্রণোদনাসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিচ্ছে।

সকালের সূর্যোদয় থেকে বিকেলের সূর্যাস্ত পর্যন্ত পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে ঠিক তখনই হাকালুকির সৌন্দর্য যেন ফুটে উঠে সূর্যমুখীর হাসিতে। মৃদু রৌদ্র দূর থেকে মনে হয় যেন সূর্য যেন হাট বসিয়েছে। সূর্যমুখীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন হাওর পাড়ে ভিড় করছেন পর্যটকরা। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সূর্যমুখী ফুলের সাথে জুড়ে নিজের ছবি ছড়িয়ে দিতে টিনেজ ছেলে-মেয়েরাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। হাকালুকি হাওরে হলুদ ফুলের মন মাতানো সৌরভ আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের মায়ার ফসলি জমি।

চাষিরা জানান, সূর্যমুখী চাষ করার পদ্ধতি একদম সহজ। প্রতি বিঘা জমিতে তিন কেজি বীজ, সামান্য সার ও কীটনাশক হলেই আর কোনোকিছুর প্রয়োজন হয় না। সবকিছু মিলিয়ে খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলেও তেল সংগ্রহ করার কোনো মেশিন স্থাপন করা হয়নি। ফলে ফুল থেকে তেল সংগ্রহ করা নিয়ে কৃষকরা দুঃশ্চিন্তায় আছেন।

হাকালুকি হাওরে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে আসা পর্যটক নন্দিনী মল্লিক ও নিখিল মালাকার বলেন, পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর সৌন্দর্য্য সত্যি অসাধারণ। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতেই আমরা হাকালুকি হাওরে এসেছি। যদি ফুল থেকে তেল সংগ্রহ করা যায়, তাহলে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে। অল্প ব্যয়ে বাম্পার ফলন হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ আছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেলে এশিয়ার বৃহত্তম এই হাওরে সূর্যমুখী চাষে ভাগ্য পরিবর্তনে খুলে দিতে পারে সম্ভাবনার নতুন দ্বার।

চাষি কামরুল ইসলাম বলেন, হাকালুকি হাওরের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও খুবই ভালো হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সূর্যমুখী চাষে আরও সম্প্রসারণ করবো। সরকারের কাছ থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি।

হাওর তীরের জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল আলম খান বলেন, সূর্যমুখী চাষ করে কৃষকরা যাতে লাভবান হয় সেই লক্ষ্যে সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দিচ্ছে। সূর্যমুখী ভোজ্যতেল হিসেবে গুণগতমানের দিক থেকে বেশ ভালো। বাজারে সূর্যমুখীর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় এবং হাওরের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের উপযোগী হওয়ায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে আমরা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি ফুল থেকে তেল বের করার প্রক্রিয়া কোন দুঃশ্চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন। সরিষা থেকে তেল বের করার মেশিন দিয়েই সূর্যমুখীর তেল সংগ্রহ করা সম্ভব। জুড়ীতে এ ধরনের মেশিন না থাকলেও কুলাউড়া উপজেলার স্কুল চৌমুহনী এলাকায় একটি মেশিন আছে। সেখানে কৃষকদের সুর্যমুখীর বিজ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হনুমান উদ্ধার,চকরিয়া সাফারি পার্কে অবমুক্ত

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল মোড়ে লোকালয়ে ঢুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে একটি মুখপোড়া হনুমান। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হনুমানটি আহত অবস্থায় সড়কে পড়ে গেলে স্থানীয় দুই যুবক মো. মুন্না ও ফয়সাল তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে।

মুন্না জানান, হনুমানটি সকাল থেকে ভবনের ছাদ ও গাছে লাফালাফি করছিল। দুপুরের দিকে একটি গাছ থেকে ছাদে লাফ দিতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা এসএম সাইদুল আলম সাঈদ বলেন, “হনুমানটির আংশিক লোম পুড়েছে, তবে গুরুতর জখম হয়নি। তাকে স্যালাইন দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং এখন অনেকটাই সুস্থ।

পরে বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বনবিভাগের চট্টগ্রাম সদর রেঞ্জার মুহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন জানান, “এটি একটি মুখপোড়া হনুমান, যা প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রাণিটিকে চকরিয়া সাফারি পার্কে পাঠানো হবে, যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকবে।”তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের উদ্ধার ও চিকিৎসা উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মুন্না ও ফয়সালকে ধন্যবাদ জানাই তাদের মানবিকতার জন্য।”

কালিয়াকৈরে পৌর বজ্রের দখলে আঞ্চলিক সড়ক শালবন মানুষের দুর্ভোগ।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা দেশের উন্নত পৌরসভার তালিকায় থাকলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রয়েছে চরম অব্যবস্থা।

সোমবার (২১এপ্রিল) সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় ডাম্পিং ব্যবস্থাপনা থাকলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। নজরদারির অভাবে শহরের সড়ক, ফুটপাত ও শালবন আবাসিক এলাকা ক্রমশই পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে।

পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিকাটা এলাকার সফিপুর-বড়ইবাড়ী আঞ্চলিক সড়কে দেখা গেছে, দিন-রাত সেখানে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। নির্দিষ্ট ডাম্পিং জোন থাকা সত্ত্বেও তা এড়িয়ে ঠিকাদাররা সড়কের ওপরেই ময়লা ফেলছেন, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার কারণে এ সড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলেও সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ ভোগান্তি। দুর্গন্ধে আশেপাশের বাড়িঘরেও অবস্থান করা দায় হয়ে পড়েছে। কখনো কখনো রাস্তা এতটাই ময়লায় ভরে যায় যে, পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় চলাচল।

একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালামপুর পূর্বপাড়া এলাকায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে মহল্লার প্রবেশপথে সরকারি শালবনের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে চলাচলেও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।

এছাড়াও কালিয়াকৈর হাইটেক সিটির পাশে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত ভবনের জমিও দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনায় সয়লাব হয়ে রয়েছে।

নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কালিয়াকৈর পৌরসভায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে। আবাসিক এলাকার বর্জ্য অপসারণে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের ক্ষোভ ও হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আজ থেকেই অতিরিক্ত পরিবহন সংযুক্ত করে ময়লা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ বলেন, নাগরিক ভোগান্তির বিষয়টি আমরা অবগত। পৌর এলাকায় অব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। শহরের পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজন হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব কালিয়াকৈর গড়ে তোলা।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ