আজঃ শুক্রবার ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ‘জো বাইডেন’ ও ‘জয়া’র ঘরে আসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন মেয়ের নাম প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী, রূপসী রয়েছে সর্বমোট ১৭টি বাঘ, পাঁচটি ছেলে ও ১২টি মেয়ে ছবি-৫-১

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বাঘ ‘জো বাইডেন’ ও বাঘিনী ‘জয়া’র ঘর আলো করে আসা তিন মেয়ের নাম রাখা হয়েছে- প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী। গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে নামকরণের আয়োজনে যোগ দিতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যান। কিউরেটর শুভ বাঘ শাবক তিনটিকে খাঁচা থেকে বের করে জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন। এর মধ্য দিয়ে জন্মের একমাস পর শাবকগুলো মানুষের দৃষ্টির মধ্যে এল। জন্মমাস পার হওয়ার পর বাঘ শাবকগুলোকে প্রথমবারের মতো খাঁচার বাইরে কিছু সময়ের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই ঘটা করে এ নামকরণের আয়োজন। এসময় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, তিনটি ব্যাঘ্র শাবকের বয়স একমাস পূর্ণ হয়েছে। তিনটিই মেয়ে। আমরা এগুলোর নামকরণ করেছি। একটির নাম প্রকৃতি, একটির নাম রূপসী এবং আরেকটির নাম স্রোতস্বিনী। বাঙালির আবহমান সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে আমরা তিনটি বাঘের বাংলা নাম রেখেছি। এ তিনটি বাঘ শাবকের জন্ম হয়েছে ‘জো বাইডেন’ পরিবারে। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে বাঘটির নাম জো বাইডেন রাখা হয়েছিল।
এদিকে চঞ্চলা তিন শাবকই এবার ঈদ বিনোদনে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার প্রধান আকর্ষণ হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ। ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জো বাইডেন পরিবারে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়। সাতদিন পর আমরা লিঙ্গ নির্ধারণ করি যে, তিনটিই মেয়ে। প্রথমবারের মতো এগুলো আমরা উন্মুক্ত করেছি। এজন্য আমরা নামকরণের আয়োজন করেছি। ফিজিক্যালি এগুলো এখন যথেষ্ঠ ভালো আছে। মায়ের ভালো রেসপন্স পাচ্ছে। হাঁটাচলা-দৌঁড়ানো আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করেছে। সামনে ঈদুল ফিতর, এবার ঈদের প্রধান আকর্ষণ হবে এ তিনটি ছোট বাঘ। শুভ জানান, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এ মুহূর্তে ১৭টি বাঘ আছে। এর মধ্যে পাঁচটি ছেলে ও ১২টি মেয়ে। এর মধ্যে আবার পাঁচটি বিরল সাদা বাঘ।
জেলা প্রশাসক বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নিয়ে এসেছিলাম। সেই দুটি বাঘ বংশবিস্তার করে এখন আমাদের ১৯টি বাঘ হয়েছে। প্রাণি বিনিময় চুক্তির আওতায় ঢাকা ও রংপুর চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘ দিয়ে আমরা দুটি জলহস্তী পেয়েছি। সেজন্য এখন বাঘের সংখ্যা ১৭টি।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ টাকায় কেনা ১১ মাস বয়সী রাজ এবং ৯ মাস বয়সী পরীকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রাজ-পরীর তিনটি ছানার জন্ম হয়, যার মধ্যে দু্টি ছিল ‘হোয়াইট টাইগার’, অন্যটি কমলা-কালো ডোরাকাটা। পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। অন্য সাদা বাঘিনীটি ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো বাঘিনীটির নাম দেওয়া হয় ‘জয়া’। শুভ্রা বাংলাদেশে প্রথম সাদা বাঘ। সেই কমলা-কালো জয়া’র ঘরে ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর জন্ম নেয় তিন শাবক। কিন্তু প্রথমবার সন্তান জন্মদানের পর জয়া অসহিঞ্চু আচরণ শুরু করে। তার অবহেলায় পরদিন দু’টি শাবক মারা যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা আরেকটির প্রাণ রক্ষায় নিজের হেফাজতে নেন চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর শুভ।
চিড়িয়াখানার কর্মীরা নিজেরাই দুধ খাইয়ে, নিবিড় পরিচর্যা করে, পেলে-পুষে বাঘের ছানাটিকে বাঁচিয়ে তোলেন। সাড়ে পাঁচ মাস পর ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল ‘জো বাইডেন’ নামের বাঘের ছানাটিকে খাঁচায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই সময় ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে এসেছিল। শুভ তখন বাঘের ছানাটির নাম রেখেছিলেন ‘বাইডেন’, যদিও বলা হয়- প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মানার্থে বাঘটির নাম রাখা হয় ‘জো বাইডেন’। মানুষের ঘরে বড় হওয়া সেই জো বাইডেনের ঔরসে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জন্ম নেয় তিন শাবক। মানুষের ঘরে বেড়ে ওঠা বাঘের ঔরসে শাবকের জন্ম বিরল ঘটনা বলেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম সড়ক অবরোধ করে দুঘন্টা বিক্ষোভ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের।

চট্টগ্রাম নগরীতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সড়ক অবরোধ করে প্রায় দুঘন্টা বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে যানবাহন আটকে দেওয়ায় সড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পরে সরে গেলেন শিক্ষার্থীরা, দুঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে যানবাহন চালকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর শিক্ষার্থীরা দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে গিয়ে অবস্থান নেন।ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিয়োগবিধি সংশোধন,ব্যবহারিক ক্লাসের প্রশিক্ষক পদের নাম ‘ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর’ না করাসহ ছয় দফা দাবিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি শুরু করেন। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, শ্যামলী, এমআইটিসহ বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রায় দু শতাধিক শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘নন টেক, মুক্ত করো, কারিগরি পথ খুলো, ২৪ আমার অহঙ্কার, কারিগরি আন্দোলন আমার অহঙ্কার, মামা এখন মাস্টার, মামার বাড়ির আবদার, এক,দুই, তিন, চার, কারিগরিতে দুর্নীতি ছাড়’- সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।চলতি বছরের ২০ মার্চও একই দাবিতে বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা আড়াই ঘণ্টা সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করেছিলেন।

ছাত্রদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো— জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা ডিগ্রি থাকতে হবে, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ছাত্রদের জন্য সব বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় অতি শিগগিরই স্থাপন করতে হবে, কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর চাকরির আবেদন বাস্তবায়ন করতে হবে, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে এবং জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা অনতিবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছিল। পুলিশ তাদের সড়ক ছাড়ার জন্য অনুরোধ করলেও তারা সেটা মানছিল না। দুই ঘণ্টা পর তারা সড়ক ছেড়েছেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।
এদিকে দুই ঘণ্টা পর নগরের গুরুত্বপূর্ণ দুই নম্বর গেট এলাকা থেকে সরে গেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে স্বাভাবিক হয়েছে ওই এলাকার যান চলাচল। তীব্র যানজটের কারণে সাধারণ মানুষের রোষানলে পড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়।

কালিয়াকৈরে জাতীয় নাগরিক পার্টির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত।

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে কালিয়াকৈর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আয়োজনে এ শোভাযাত্রাটি খাড়াজোড়া এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বের করা হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি এক প্রাণবন্ত পরিবেশে রূপ নেয়। দলীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন ও নানা রঙের সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রাটি মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অতিক্রম করে। এতে স্থানীয় জনগণেরও ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কালিয়াকৈর উপজেলা সংগঠক সুমন বাড়ই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নাগরিক পার্টির প্রতিনিধি দেওয়ান মাহবুব পনির, দেওয়ান মোহাম্মদ রাশেদ আল আজাদসহ উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।

আয়োজকরা জানান, এই শোভাযাত্রার উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় নাগরিক পার্টির গঠনমূলক কর্মসূচি  আদর্শ জনগণের সামনে তুলে ধরা ও সংগঠনকে আরও গতিশীল করা। তারা আরও বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ে দল সবসময় সচেষ্ট  ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

শোভাযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। দলীয় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ