
ফটিকছড়িতে সেফটিট্যাংকে পরে ৫ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে গতকাল বুধবার বিকাল ৩ ঘটিকার সময় দক্ষিণ ফটিকছড়ি ধর্মপুর গ্রামে অলি মোহাম্মদ বাড়ির নাজিমের নতুন ঘরে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিকাল তিন টার সময় ৫ বছরের শিশু মোহাম্মদ রোহান, শাহাজান রোকসানা দম্পতির এই ছেলে সন্তান টি এই দূর্ঘটনার স্বীকার হয়। বিকাল তিনটার সময় রোহান প্রাইভেট পড়তে যায়। প্রতিদিনের মত তার মা রোকসানা রোহানকে খুঁজ করে কিন্তু এই দিক ওদিক খোঁজতে খোঁজতে না পেলে চারদিকে শোরগোল হয়ে যায়। রোকসানার ভাড়া বাসা হতে ৪০০/৫০০ ফুট দূরে রাস্তার পশ্চিম দিকে নাজিমের নতুন ঘর। সেই প্রায় সময়ে নাজিমদের ঘরে থাকত সেখানেই খেলাধুলা খাওয়া ধাওয়া করত। তাই তার সেখানে ছুটে যান। নাজিম তখন বাসায় ছিলনা, সেই তার আরেক ভাইয়ের রাস্তার পূর্ব দিকে কাজ চলমান ভবনে ছিল। চিৎকার শুনে সেই ও আবদুল্লাহ নামক আরেক ব্যাক্তি সহ ছুটে আসেন। চারদিকে খোঁজে যখন পাচ্ছে না তখন তারা বাথরুমের সেফটিট্যাংকে দেখেন। আবদুল্লাহ লম্বা বাঁশ দিয়ে যখন চেক করতে থাকে হঠাৎ তার বাঁশে শক্ত কিছু লাগে এমন আঁজ করে। সাথে সাথে বাঁকা জাতীয় গাছ এনে যখন ওপরের দিকে তুলতে থাকে তখন রোহানের নিথর দেহের চুল ও মাথা দেখে আবদুল্লাহ চিৎকার দিয়ে সরে যায়। পরে নাইম নামের এক যুবক ট্যাংকে নেমে রোহানকে ওপরে তুলে দ্রুত নাজিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। এর আগে আজাদী বাজার নামক স্থানে থাকে প্রাথমিক ডাক্তার দেখান। ডাক্তার তাকে দ্রুত মেডিকেল নিয়ে যেতে বলে। উল্লেখ্য, বাথরুমের সেফটিট্যাংকের ঢাকনা তুলে ছিলেন ময়লা পানি পরিস্কার করার জন্য। সন্ধ্যায় এটি পরিষ্কার করার কথা ছিল কিন্তু তার আগে রোহান এই ট্যাংকে পরে পরপারে চলে যান। তার মৃত্যুর সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পরলে শত শত মানুষ তাকে দেখতে ছুটে আসেন। তাকে দেখে অনেকে চোখের পানি পেলেন। তার মৃত্যুর সংবাদ দ্রুত তার নিজ বাড়ি একই ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডস্থ আমতলী গোলপুকুর পাড় সংলগ্ন জহর আলী মুন্সির বাড়িতে পৌঁছে যায়। পৌঁছে যায় তার প্রবাসী পিতা শাহাজানের কাছে। তার বাবা শাহাজান তার ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনার সাথে সাথে টিকিট করে বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টায় দেশে চলে আসেন। প্রবাসী শাহাজান গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছলে এক করুণ হৃদয় বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয়। তার কান্না দেখে গাছের পাতা পাখ পাকালি পর্যন্ত কাঁদতে থাকে। পরবর্তী সকাল ১০ টায় তাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে সকাল ১১ টায় জানাজার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয়। উল্লেখ্য, রোহানের পরিবার এখানে (মৃত স্থানে) মৃত হানিফের ঘরে ভাড়াটিয়া হিসেবে দীর্ঘ ৭/৮ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। রোহানের নানার বাড়ি নাজিরহাট সুয়াবিল। রোহান এখানে স্থানীয় রাওজাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসায় নার্সারিতে পড়তেন। তার বয়স ছিল ৫ বছর। ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, রোহানের মা রোহান কে নিয়ে বিলাপ করতে থাকে আর বুক চাপড়াতে থাকে। গত ২/৩ দিন আগে রোহানের মা রোহানের জন্য ঈদের নতুন পায়জামা পাঞ্জাবি কিনে আনেন। সেই কাপড় জোড়া তার মা মৃত দেহের ওপর রেখে কান্নায় গড়াগড়ি করতে থাকেন।