
নদী ভাঙনে যমুনার বিস্তীর্ণ দুই পাড়ে ঠাঁই নেওয়া হাজার হাজার ছিন্নমূল ভাসমান পরিবারের ভাগ্যাহত শিশুদের জন্য কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশনের (কিউএলএফ) আয়োজনে ঈদ আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈদের পরের দিন শুক্রবার সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের পলাশ নগরে যমুনার পাড়ে কিউএলএফ এর উদ্যোগে এই আয়োজন হয়। তৃণমূল দারিদ্র নির্মূল পরিষদের সহায়তায় নদীশিশুদের জন্য দৌড়, সাতার প্রতিযোগিতা ও প্রীতি ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। এই সময় আশপাশের শত শত শিশুরা খেলায় অংশ নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। অনুষ্ঠান চলাকালীন শিশুদের মাঝে দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা জুস, তরমুজ ও ক্যান্ডি বিতরণ করা হয়। শেষে বিজয়ীসহ অংশগ্রহণকারী সবার মাঝে নগদ টাকা ও ফুটবল খেলার সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নদীশিশুদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের জন্য হাহাকার ও আর্তনাদ যমুনা পাড়ের বাতাস ভারী হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বক্তারা আরও বলেন, ‘শিকড় থেকে ছিটকে পড়া হাজারো ভাসমান ছিন্নমূল নদীশিশুদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের জন্য হাহাকার ও আর্তনাদে যমুনা পাড়ের বাতাস ভারী হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব শিশুর কারো বাবা নেই, থাকলেও মায়ের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। কারো মা নেই। কারো মা প্রবাসে থাকেন, কারোর মা আবার থেকেও নেই। সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যমুনা পাড়েই এরা পড়ে থাকে। কেউ ছাগল চড়ায়, কেউ গরু চড়ায়, কেউ মাছ ধরে, কৃষি জমিতে কাজ করে। এভাবে কোনো না কোনোভাবেই যমুনা তীরেই কাটে এদের দিনমান।’
উপস্থিত ছিলেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল আরিফ চৌধুরী, ব্যবসায়ী রিয়াজুল হক, কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক ডা. দলিলুর রহমান, ডা. ইশরাত জাহান, ইঞ্জিনিয়ার শওকত আহমেদ, স্কুল শিক্ষক নুরে গুলশান, স্থানীয় সংগঠন তৃণমূল দারিদ্র নির্মূল পরিষদের কিরমানি লিটন, উদ্যোক্তা পলাশ প্রমুখ। ডা. দলিলুর বলেন, এখানকার রাস্তা, বাড়ি-ঘর, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনযাত্রা বাস্তবে কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি বেদনাদায়ক। তাদের পাশে দাঁড়াতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
