
বাংলা বর্ষপঞ্জির ১৪৩০ সনের বিদায় নিয়েছে ১৩ এপ্রিল। ১৪ এপ্রিল থেকে ১৪৩১ সনের নববর্ষের যাত্রা। বাঙ্গালীর জীবন ধারায় বাংলা বর্ষের বিদায় ও বরণ আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিদায় ও বরণকে ঘিরে বাংলার প্রতিটি গ্রামে শুরু হয়েছে বৈশাখের উৎসব।
বর্ষ বরণ ও বিদায়ে বিভিন্ন গ্রামে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। বসেছে জারি সারি গানের আসরসহ বৈশাখী মেলা। বর্ষ বিষয় ও বরণ নিয়ে প্রতিবছরের মত এবারও শত শত পাহাড়ি নারী পুরুষের পদভারে মুখরিত হয়েছে রাউজানের দুই শতাধিক বছরের প্রচীণ মহামুনি মন্দিরে।
মন্দিরের বিশাল চত্তর জুড়ে বসেছে বৈশাখী মেলা। ঐতিহ্যগত ভাবে মন্দিরটির সাথে রয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নিবিড় সম্পর্ক। বৌদ্ধ সম্প্রদায় বিশ্বাস করেন প্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার পাঁচটি প্রতিমূর্তি তৈরী করা হয়েছিল। এসব মূর্তির মধ্যে দুটি ভারতে, দুটি স্বর্গে পঞ্চমটি মায়ানমারের আরাকানের ধানয়াওয়াদি শহরে। ১৮০৫ রাউজান চাংগ্যা ঠাকুর নামের এক বৌদ্ধ ভিক্ষু বার্মার মায়ানমার থেকে মহামুনি বৌদ্ধদের অবিকল একটি মূর্তি রাউজানের পাহাড়তলীতে(তৎকালিন নাম কদলপুর গ্রামে) স্থাপন করেছিলেন। সেই থেকে পাহাড়তলীর এই বৌদ্ধ গ্রামটি পরিচিতি পায় মহামুনি গ্রাম হিসাবে।
মূর্তিটি প্রতিষ্ঠার পর বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই গ্রামটিকে পূর্ণভুমির মর্যদা দিয়ে আসছে। জানা যায় মূর্তিটি স্থাপনের পর মন্দিটিকে নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালিণ পাহাড়ী মং সার্কেল রাজা। এরপর থেকে এই মন্দিরের প্রতি ভক্তি বাড়তে থাকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। প্রতিবছর এই মন্দিরে বর্ষ বিদায় ও বরণ ঘিরে রচিত হয় পাহাড়ি বাঙালির মিলন মেলা। ইতিহাসবিদদের মতে ১৮৪৩ সালে রাউজানের মহামুনি মন্দির চত্বরে বৈশাখী মেলার সুত্রপাত। এখানে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনটিতে বর্ষ বিদায়ে মন্দিরে পুজা দিতে আসেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। তারা নতুন বছরের সুখ সমৃদ্ধি কামনায় প্রার্থনা করেন। পার্ব্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান থেকে এই বিশেষ দিনে ছুঁটে আসা আধিবাসী জনগোষ্ঠির দখলে থাকে চৈত্রের শেষ দিনটি। তারা রাত জেগে মন্দিরে প্রার্থনা করেন। পাহাড়ী জনগোষ্ঠিকে বরণ করেন মহামুনি মন্দির কমিটি ও গ্রামের মানুষ। পরদিন অর্থাৎ নববর্ষের সুর্যোদয়ের সাথে সাথে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী মন্দির ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। নববর্ষের প্রথম দিন থেকে এখানে শুরু হয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর বৈশাখী উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে এখানে বসে সপ্তাহকাল ব্যপী বৈশাখী মেলা। পাহাড়তলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন জানিয়েছেন যুগের ধারাবাহিকতায় ঠিকে আছে মহামুনির বৈশাখী উৎসব। এখানে পাহাড়ী জনগোষ্ঠির উপস্থিতিতে বাংলার দুই ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মাঝে মিলন মেলা হয়। রাউজানের মহামুনিতে বড় পরিসরে বৈশাখী উৎসব পালন করার পাশাপাশি নববর্ষের নানা অনুষ্ঠান থাকে রাউজানের প্রায় প্রতিটি