প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৫, ২০২৫, ৪:৪৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১৭, ২০২৪, ২:২২ অপরাহ্ণ
নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আরব আমিরাতের পথে এমভি আবদুল্লাহ

- সোমালিয়ার জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত চট্টগ্রামের কবির স্টীটের মালিকানাধীন বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ আরব আমিরাতের পথে রয়েছে। নিñিদ্র নিরাপত্তায় জাহাজটি আরব আমিরাতের পথে রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জাহাজটি আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে ২০ এপ্রিল রাত ১০টায়। কিন্তু জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২২ এপ্রিল জাহাজটি আরব আমিরাতে ভিড়বে। কারণ জাহাজটির গতি অনেক কম।
কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ২১ নাবিক ওই জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন। এছাড়া ২ নাবিক এডেন উপসাগর হয়ে ওমান উপকূলের সামনে দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছে বিমানযোগে দেশে ফিরবেন। নাবিকদের নিজ নিজ ইচ্ছায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ।
গতকাল বুধবার এ বিষয়ে কেএসআরমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, নাবিকেরা তাদের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। ২১ নাবিক জাহাজে ও বাকি ২ জন বিমানে বাংলাদেশে আসবেন। এখনো তারা চাইলে বাই এয়ারে আসতে পারেন। যদি তারা আমাদের সিদ্ধান্ত দেন। তবে ২১ নাবিক জানিয়েছেন তারা ওই জাহাজে করে বাংলাদেশে ফিরবেন।
এদিকে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। যাতে ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা পার হওয়ার আগেই অন্য কোনো জলদস্যুর দল জাহাজটিতে উঠতে না পারে। একই সঙ্গে জাহাজের ডেকে হাই প্রেসার ফায়ার হোস বসানো হয়েছে, যাতে উচ্চচাপে পানি ছিটানো যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুইটি যুদ্ধ জাহাজ এখনো এমভি আবদুল্লাহর দুই পাশে রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে সোমালিয়ার জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে ২২ এপ্রিল জাহাজটি কাঙ্খিত বন্দরে পৌঁছাবে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
কেএসআরএম গ্রুপের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির চারপাশ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দস্যুরা হানা দিলে যাতে উচ্চ চাপে পানি ছিটানো যায়, সে জন্য জাহাজের ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য ‘সিটাডেল’ (জাহাজের গোপন কুঠুরি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল কেএসআরএম গ্রুপের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাত সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমাদের জাহাজ হাইরিস্ক এরিয়ার বাইরে ছিল। ২০০ নটিক্যাল মাইল রিস্কি। আমরা ৬০০ নাটিক্যাল মাইলে ছিলাম। তাই তখন আর্ম গার্ড নিইনি আমরা।
জানা গেছে, দীর্ঘ ৩৩ দিন জিম্মি থাকার পর গত শনিবার জাহাজটি মুক্তি পায়। এরপর সোমালিয়ার ডেরা থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।
গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৫৭৬ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। এর ৩২ দিন পর, অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে জাহাজটি মুক্ত হয়।
Copyright © 2025 বাংলা খবর পত্রিকা. All rights reserved.