চ্যানেল ২৪-এর ভিডিও সাংবাদিক ও সিইউজের সদস্য সেলিম উল্লাহকে পিটিয়ে আহত করেছে দুবৃর্ত্তরা। গত রোববার রাতে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার মনসুরাবাদ এলাকার মসজিদের সামনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। বর্তমানে সাংবাদিক সেলিম উল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি জানান, রোববার রাতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করার সময় প্রথমে সাদ্দাম নামের একজন এসে তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। এরপর তিনি বলেন, তোরা সাংবাদিকেরা বেশি বিরক্ত করছ। পরে ১৫-১৬ জন এসে সেলিমকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এ সময় তাকে ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টাও করে ওরা।
সেলিম উল্লাহ বলেন, হামলায় জড়িতরা সবাই সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনের অনুসারী।তবে প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটন দাবি করেছেন, সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় জড়িতরা তার অনুসারী নয়।
এদিকে এই ঘটনায় ওই রাতেই তিনি বাদী হয়ে সাতজনের নামসহ আরও অচেনা আটজনকে আসামি করে ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী বলেন, এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. ফখরুল ইসলাম (২৩), ইরফান (২০), মাহিন (২৫), জুবায়েদ আলী (১৯), মো. মোসাদ্দেক হোসেন (১৯), মো. রফিক (৩৫) ও বিল্লাল বেপারি (২৮)।
এদিকে গতকাল সোমবার বিকেল তিনটার দিকে নগরের বন্দর থানাধীন পশ্চিম নিমতলা এলাকায় ওয়াসার পানির অবৈধ ব্যবসার ভিডিও করতে গেলে জনৈক ইকবালের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা সিইউজের আরেক সদস্য ও চট্টগ্রাম প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার রিমন সাখাওয়াতের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা।
অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রামে দুই সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, গত রোববার রাত সোয়া দশটার দিকে নগরের মনসুরাবাদ এলাকায় দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাদ্দাম হোসেন নামে এক সন্ত্রাসী ও তার সহযোগীদের হামলার শিকার হন সিইউজে সদস্য ও চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের স্টাফ ক্যামেরাপারসন সেলিম উল্লাহ। এ সময় তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসীরা।সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দু’টি ঘটনাতেই সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ফুটে ওঠেছে। যা সাংবাদিকতা পেশা ও কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য বড় ধরণের হুমকি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।