
প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে আসা একটি জাহাজ সংস্কারাধীন কালুরঘাট সেতুতে ধাক্কা দিয়েছে। এ সেতুর ওপর দিয়ে দোহাজারি ও কক্সবাজার রুটের ট্রেন চলাচল করে। তবে দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এমভি সমুদা ১ নামের একটি লাইটারেজ জাহাজ সেতুতে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুর সঙ্গে আটকে যায় জাহাজটি।এমভি সামুদা-১ জাহাজটি মেসার্স রোকনুর মেরিটাইম লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম প্রান্তের এ কে খান ডক ইয়ার্ড থেকে প্রবল স্রোতের প্রবাহে জাহাজ ভেসে এসে সেতুতে ধাক্কা দেয় এবং আটকে যায়। এ ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত ও সেতুর সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন।
নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ বলেন, কালুরঘাট সেতু থেকে প্রায় এক-দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে হামিদচর এলাকায় একে খান ডকইয়ার্ডে জাহাজটি তোলার কথা ছিল। জোয়ার শুরুর পর জাহাজটি ডকইয়ার্ডে তোলার জন্য ঘোরানোর সময় সেটি ডুবে যাবার পরিস্থিতি হয়। কিন্তু বাতাসের তোড়ে জাহাজটি গিয়ে সেতুকে ধাক্কা দেয়। এরপর সেটি সেখানে আটকে যায়। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, জাহাজটি খালি ছিল। জাহাজের মূল মাস্টার কয়েকদিন আগে মারা গেছেন। সেকেন্ড মাস্টার সেটিকে ডকইয়ার্ডে তোলার চেষ্টা করছিলেন। সম্ভবত অদক্ষতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উনারা নির্ধারণ করবেন। এরপর উনারা যদি মামলা করেন, আমরা অবশ্যই মামলা নেব। অন্যথায় আমরা বাদী হয়ে মামলা করব। আমাদের পক্ষ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়া রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, জাহাজের ধাক্কায় কালুরঘাট সেতুর একটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা লাইটারেজ জাহাজের মাস্টারকে খুঁজেছিলাম। কিন্তু সেখানে কাউকেই পাওয়া যায়নি। সম্ভবত জোয়ার এবং প্রবল বাতাসের কারণে জাহাজটি দিক হারিয়ে সেতুতে এসে ধাক্কা দিয়েছে। বিষয়টি আমরা রেলওয়ে পুলিশকে জানিয়েছি। তারা আইনগত পদক্ষেপ নেবে।
ট্রেনরুটের পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম শতবর্ষী কালুরঘাট সেতু। জরাজীর্ণ সেতুটিতে এখন সংস্কার কাজ চলছে। এ জন্য গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। জুনে মেরামত কাজ শেষে সেতু খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।