আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

অবশেষে আটক হলো কালীগঞ্জের ৯ মামলার আসামী সেলিম মেম্বারসহ ৬ মামলার আসামী অর্ণব

সুরুজ্জামান রাসেল গাজীপুর প্রতিনিধি :

 

আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে অবশেষে আটক হলো ৬ মামলার আসামী চিহ্নিত চাঁদাবাজ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল কাদেরের ছেলে সাইদুর রহমান অর্ণব (২৬)সহ ওই ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ৯ মামলার আসামী মৃত ফজলুল হকের ছেলে আরেক চাঁদাবাজ সেলিম (৩৫)।
জানা যায়- সেনা কল্যাণ সংস্থার সহযোগি প্রতিষ্ঠান মাস্টার বিল্ডার লিঃ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৫ নং সেক্টর এর রোড০ ১১২ এবং ২০২ এর প্লট নং- ১৫-২০২-০০১ সংযোগস্থলে অভ্যন্তরীন রাস্তা ও সারফেস ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করলে ১৮ জানুয়ারি ২৪ ইং বিকেল অনুমান ৩ টার দিকে আটককৃত অর্ণব, সেলিম মেম্বার ও হাফিজুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে যায় এবং দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বলেন অন্যথায় কোন কাজ করা যাবে না। পরবর্তীতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২৪ তারিখ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আবারো তারা প্রকল্পের সাইটে উপস্থিত হয়ে কর্মরত লোকজনকে এই মর্মে হুমকী দেয় যে, আমাদেরকে চাঁদা না দিয়ে কেউ কাজ করতে পারবে না। তারা আরো হুমকী দেয় যে, ২ কোটি টাকা চাঁদা দেয়ার পর আমাদের পছন্দমতো সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে নির্মাণ সামগ্রী মালামাল ক্রয় করতে হবে। অন্যথায় কোন গাড়ি মালামাল নিয়ে সাইটে প্রবেশ করতে পারবে না।
পরবর্তী ২৭ ফেব্রুয়ারি ২৪ ইং তারিখ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রকল্পের সাইটে মালামাল আনলোড করার সময় অর্ণব ও সেলিম মেম্বার লোকজন নিয়ে পুনরায় সাইট এলাকায় যায় এবং বে-আইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ অনধিকার প্রবেশ করে ট্রাক ড্রাইভার শামীমসহ উপস্থিত সকলকে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে। শুধু তাই নয় ওই দিন তারা ইট নিক্ষেপ করলে একটি ট্রাকের লোকিং গ্লাস ও সামনের গ্লাস ভেঙ্গে যায়। ওই দিন দবির উদ্দিন নামের আরেক চাঁদাবাজ প্রকল্পের সার্ভেয়ার বিপ্লবকে মুঠো ফোনে গালাগাল ও নানা ধরণের হুমকী প্রদান করে। এখানেই শেষ নয়- চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী সেলিম মেম্বার ও অর্ণব ওই দিন দিবাগত রাতে আরো ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে প্রকল্পের সাইটে প্রবেশ করে চাঁদার টাকা না পেয়ে ভাংচুর করে সাইটে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে এবং সাইটে কর্মরতদের একটি কক্ষে আটকে রেখে সাইটে থাকা আনুমানিক ১৮ হাজার পিস ইটা, ১.৫ আরএম দুই কয়েল তার, ৪.০ আরএম ৩৪গজ তার, ১০টি এলইডি বাল্ব, ৩টি সিলিংফ্যানসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ট্রাকে ভর্তি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩ লাখ টাকা। মালামাল নেয়া কালেও তারা বলে যায়, দুই কোটি টাকা চাঁদা না দেয়া পর্যন্ত এখানে কোন কাজ করা যাবেনা।
পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (লজিস্টিক) অফিসার মোঃ জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১৩/৪৭, তাং- ১৩/০৩/২৪ ইং।
মামলা দায়েরের পর ওই চাঁদাবাজরা হাইকোর্ট থেকে সাময়িক জামিন এনে মঙ্গলবার গাজীপুরের নিম্ন আদালতে হাজির হন। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
জানা যায়- এ পর্যন্ত সেলিম মেম্বারের বিরুদ্ধে ৯টি এবং চেয়ারম্যানপুত্র অর্ণবের বিরুদ্ধে ৬টি বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কাপাসগোলায় টিসিভি টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শনে যুগ্ম সচিব

‘টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধ করব টাইফয়েড মুক্ত বাংলাদেশ গড়বো’Ñশ্লোগানে ১লা নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত কমিউনিটি পর্যায়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে স্বাস্থ্য বিভাগে ৪১টি ওয়ার্ডের সকল স্থায়ী ও অস্থায়ী ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরে কম বয়সে সকল শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড টিকা দেয়া হচ্ছে।

১৬নং চকবাজার ওয়ার্ডে নাজমাঈ ডেমিরেল সিটি কর্পোরেশন দাতব্য চিকিৎসালয় গতকাল ঢাকা হইতে আগত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (জনসাস্থ্য) ডা. শিব্বির আহমেদ ওসমানী কাপাসগোলা ইপিআই জোনের অধীন দেবপাহাড সমাজসেবা কার্যালয়ে ঞঈঠ টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও দেবপাহাড সংলগ্ন বস্তিতে জঈগ করেন, সাথে ছিলেন ডা. ইমং প্রু, ডিভিশনাল কো-ডিনেটর (ডঐঙ), ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চসিক ও ডা. খাদিজা আহমেদ, ঝওগঙ(ডঐঙ)। এ সময় কাপাসগোলা জোনের ইপিআই টেকনিশিয়ান ও বেসরকারি সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

নেত্রকোনায় হুইল চেয়ার বিতরণ।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানীতে অংশ নিয়ে গত বুধবার তিনজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের নিকট হুইল চেয়ারের আবেদন করেন।

এরই প্রেক্ষিত মঙ্গলবার সকালে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরিবারের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম সরদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুন মুন জাহান লিজা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শামীমা ইয়াসমিন, সর্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা বিনতে রফিক, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা সঞ্জীব চক্রবর্তী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, প্রতি বুধবার জেলার বিভিন্ন এলাক হতে আগত সাধারন নাগরিকদের জন্য গণশুনানীর কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত থাকবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ