আজঃ বুধবার ১৪ মে, ২০২৫

কিংবদন্তী কন্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর প্রয়াণ দিবস

উজ্জল কুমার সরকার

সংস্কৃতি ও বিনোদন:

 

আজ ৭ মে কিংবদন্তী শিল্পী সুবীর নন্দীর প্রয়াণ দিবসে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি মুগ্ধ করে রেখেছিলেন বাংলা গানের শ্রোতাদের। তার কণ্ঠ ছুঁয়ে নেমেছে অসংখ্য কালজয়ী শ্রোতাপ্রিয় গান। তিনি দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী।
বাংলা গানের কিংবদন্তি সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দীপাড়া নামক গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মেই দেখেছেন পরিবারে নিয়মিতই সংগীত চর্চা চলে। তার পিতা সুধাংশু নন্দী ছিলেন তেলিয়াপাড়া চা এস্টেটের চিকিৎসক ও সংগীতপ্রেমী মানুষ। তার মা পুতুল রানী চমৎকার গান করতেন। তিনিই তার সন্তানদের গানে হাতেখড়ি দিয়েছেন। আর সব ভাইবোনের মতো সুবীর নন্দীও মায়ের কাছে প্রথম সংগীতে শিক্ষা নেন।
আর একাডেমিক শিক্ষাতেও বেশ মেধাবী ছিলেন তিনি। পড়াশোনার অধিকাংশ সময়ই সুবীর নন্দীর কেটেছে হবিগঞ্জ শহরে। হবিগঞ্জ শহরে তাদের একটি বাড়ি ছিল, সেখানেই ছিলেন তিনি। পড়েছেন হবিগঞ্জ সরকারী হাইস্কুলে। তারপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সুবীর নন্দী সেকেন্ড ইয়ারে পড়তেন।
১৯৬৩ সালে অন্য নয় ভাইবোনের সঙ্গে ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নিতেন। বাবার আগ্রহ, মা ও গুরুর কাছ থেকে পাওয়া দীক্ষা ও নিজের অজান্তে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী পঙ্কজ মল্লিক, সায়গল, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, জাগজিৎ সিং প্রমুখের ভক্তে পরিণত হয়ে সুবীর নন্দী কৈশোরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শিল্পী হবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হলো ১৯৭০ সালে। ওই বছর সুবীর নন্দীর রেকর্ডকৃত প্রথম গান মোহাম্মদ মুজাক্কেরের কথায় এবং ওস্তাদ মীর কাসেম সুরারোপিত ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’ প্রকাশ পায়। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি গান করেছেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। গেয়েছেন বেতারেও অসংখ্য জনপ্রিয় গান। আর ২৪টির মতো একক অ্যালবামও প্রকাশ পেয়েছে তার। গান গাওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু গানের সুরও করেছেন। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি,’ ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘পাখিরে তুই দূরে থাকলে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘নেশার লাটিম ঝিম ধরেছে’, ‘এক যে ছিল সোনার কন্যা’, ‘আশা ছিলো মনে মনে’, ‘তুমি সুতোয় বেঁধেছ শাপলার ফুল’ অন্যতম।
সুবীর নন্দী ১৯৮৪ সালে ‘মহানায়ক’ ছবিতে, ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ ছবিতে, ১৯৯৯ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে এবং সর্বশেষ ‘মেঘের পরে মেঘ’ ছবিতে গান করে ২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এছাড়াও দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকসহ দেশে-বিদেশে নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সুবীর নন্দী। ব্যক্তি জীবনে নন্দিত এই শিল্পী দুই সন্তানের জনক। বড় মেয়ের নাম ফাল্গুনী নন্দী এবং ছোট ছেলের নাম হৃদ্যিমান।
সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন। ৭ মে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি।
নওগাঁ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে আরও দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা হচ্ছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

চট্টগ্রামে সরকারি উদ্যোগে আরও দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, এর মধ্যে একটি হবে হাটহাজারী ও আরেকটি কর্ণফুলী উপজেলায়। এছাড়া কালুরঘাটে একটি ডেন্টাল কলেজ-হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনাও আছে। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের উন্নয়ন’ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় একথা জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক চাপের প্রসঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি হাসপাতালটি (চমেক) পরিদর্শন করেছি। আমি দেখেছি ধারণক্ষমতা ২২০০, কিন্তু প্রায় ৫ হাজার রোগী। ব্রেইন সার্জারির রোগীকে ফ্লোরে শুইয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়, টয়লেটের পাশেও রোগী ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নেয়।স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হাটহাজারী ও কর্ণফুলী এলাকায় দুটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। এতে করে রাঙামাটি-কাপ্তাই ওদিকের অঞ্চলের রোগীরা হাটহাজারী হাসপাতালে সেবা নিতে পারবেন এবং পটিয়া-সাতকানিয়া-চন্দনাইশ অঞ্চলের রোগীরা কর্ণফুলী হাসপাতালে সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া চট্টগ্রামে কোনো ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল হাসপাতাল নেই। একটি ডেন্টাল কলেজ-হাসপাতাল নির্মাণের জন্যও পরিকল্পনা চলছে।

সভায় শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর আবরার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীকও ছিলেন।

সরকার প্রধান হিসেবে প্রথমবার চট্টগ্রাম আসছেন ড. ইউনূস।

অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার চট্টগ্রামে আসছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার তিনি নিজ জন্মভূমিতে যাবেন। প্রধান উপদেষ্টা সেখানে দিনব্যাপী বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।

জানা গেছে, মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে সেখানে নির্ধারিত বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগদান করবেন তিনি।পাশাপাশি তার পৈতৃক বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামও পরিদর্শন করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামে পৌঁছার পর বন্দর পরিদর্শন করবেন এবং বন্দরের অভ্যন্তরে এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে একটি সভায় অংশ নেবেন। এরপর তিনি বন্দর ও জাহাজ চলাচল খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বাণিজ্য সংস্থার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

সেখান থেকে যাবেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে। সেখানে কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করবেন প্রধান উপদেষ্টা। যা চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একটি অংশসহ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরের বিশাল জনগোষ্ঠীর বহুল প্রতীক্ষিত সেতু।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ