আজঃ বৃহস্পতিবার ২২ মে, ২০২৫

সমাধি স্নানের মধ্যে দিয়ে রামচন্দ্র দেবের ৭৫তম তিরোভাব উৎসব

রিপন মজুমদার নোয়াখালী:

নোয়াখালী:

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ চৌমুহনীতে বুধবার (৮ মে) থেকে শ্রী শ্রী রামঠাকুর চন্দ্র দেবের সমাধিক্ষেত্রে তিন দিন বেবি শ্রী শ্রী ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের ৭৫তম তিরোভাব উৎসব শুরু হয়েছে।

দেশ-বিদেশ থেকে আগত হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভক্তের সমাগমের মধ্যে দিয়ে পুরো চৌমুহনী এলাকায় এখন উৎসবের আমেজ। আর হিন্দু সম্প্রদায়ের এ উৎসব কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পালনের  লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

শ্রী শ্রী রাম ঠাকুরের পুরো নাম শ্রী কৈবল্য নাথ। জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই উৎসবে সারাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে।

বুধবার (৮মে) বিকেল থেকে আশ্রম প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে বেদবানি পাঠ, গঙ্গা আবাহন, দিন-রাত ঠাকুরের প্রসঙ্গে আলোচনা, নামযজ্ঞ সত্যনারায়ণ পূজা, আলোখ্য গীতি সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। আজ শুক্রবার (১০মে) ভোর ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হাজার হাজার ভক্তরা ডাবের জল দিয়ে সমাধি স্নান করান। মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।

বিগত বছরে মহামারির ও সংখ্যালঘুদের উপর এবং মন্দির ভাঙচুর কারণে কারণে এ উৎসব ভালোভাবে হয়নি, নাম রক্ষার্থে কোনো রকম হলেও কোনো ভক্তের সমাগম হয়নি। তাই এবার এ উৎসবে দেশের দূর দূরান্ত থেকে আসা ভক্তরা যোগ দিতে পেরে খুশী। সবার একটাই প্রত্যাশা ব্যক্তির পাশাপাশি দেশ, সমাজের, পরিবারের শান্তি, উন্নতি ও মঙ্গল কামনা এ উৎসব শুধু দেশের নয়। দেশের বাইরের থেকেও ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ভক্তরা এসেছেন এ উৎসবে। দু দেশের শান্তি ও মঙ্গল কামনা করেছেন ঠাকুরের কাছে সবাই।

উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতম সাহা বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবার ভক্তদের সমাগম বেশী হয়েছে। ঠাকুরের উৎসবের মধ্যে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে আবার তারা ঘুরে দাঁড়াবে।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, উৎসবে যে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি ২০০ শত জন মহিলা ও পুরুষ পুলিশ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

এছাড়া উৎসবে যে কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সিসিটিভির ক্যামেরাসহ বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু বক্কর আর নেই।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব সারোয়াতলী গ্রামের গর্বিত সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবু বক্কর আর নেই। তিনি রবিবার বিকেলে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

পূর্ব সারোয়াতলী গ্রামের স্থানীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। বোয়ালখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমার নেতৃত্বে এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়।

মরহুম মোহাম্মদ আবু বক্কর ছিলেন পূর্ব সারোয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত আবদুল মালেকের পুত্র। জীবদ্দশায় তিনি একজন সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এলাকায় সম্মানিত ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হজ্জ: হৃদয়ের দিগন্তে আলেয়ার মতো জ্বলে ওঠা আত্মশুদ্ধির আলোকপাঁজর।

যখন কোটি কোটি হৃদয় এক সুরে উচ্চারণ করে—”লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক”, তখন আকাশ-বাতাসও থমকে দাঁড়ায়। হজ্জ তখন আর শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকে না; হয়ে ওঠে আত্মার এক অভূতপূর্ব অভিষেক, পবিত্রতার এক অনন্য মহাসম্মিলন। মানুষের জীবনচক্রে এমন কোনো অধ্যায় নেই, যেখানে হজ্জের মত একান্ত ও গভীর আত্মসংশোধনের উপলক্ষ পাওয়া যায়।

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের শেষতম অথচ সর্বোচ্চ স্তম্ভটি যেন এক অলৌকিক আহ্বান। এই আহ্বান আসে আকাশ পেরিয়ে হৃদয়ের গহীনে, যেখানে মানুষ সমস্ত পরিচয়ের অহংকার ছুঁড়ে ফেলে আত্মবিসর্জনের শুদ্ধতম অবস্থানে পৌঁছে যায়। ধনী-গরিব, রাজা-ভিখারী—সবাই একসঙ্গে দাঁড়ায় কা’বার চৌহদ্দিতে। এক রঙের পোশাক, এক কণ্ঠের ধ্বনি, এক দিকের সেজদাহ—হজ্জ আমাদের শেখায় বিশ্বমানবতার মহাঐক্য।

Oplus_0

এই হজ্জের সূচনা সেই ইতিহাসের গভীর থেকে, যেখানে পিতা ইবরাহিম (আ.) তাঁর একমাত্র পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর আদেশে কুরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। যে কা’বা ঘর তাঁর হাতে নির্মিত, সেই ঘরের চারপাশেই আজ কোটি মানুষের কান্না, তাওয়াফ, প্রার্থনা, নিঃশ্বাস। কত শত বছর পেরিয়ে গেছে, তবুও ইবরাহিম (আ.)-এর সেই আহ্বান—“আসো, তোমার প্রভুর ঘরে”—আজও প্রতিধ্বনিত হয় মিনার বাতাসে, আরাফার স্তব্ধতায়।

হজ্জ মানুষকে শিখিয়ে দেয় কীভাবে নতজানু হতে হয় এক মহান সত্তার সামনে। সেখানে নেই কোনো অহংকার, নেই কোনো রাজকীয়তা, নেই কোনো পার্থিব শ্রেষ্ঠত্ব—আছে কেবল আত্মবিসর্জন, কেবল ফিরে আসা, এক অনবদ্য অনুতাপে নিজের ভুলগুলো মুছে ফেলার ইচ্ছা। হজ্জ যেন একটি জীবন্ত দিগন্ত, যেখানে মুমিন তার অতীতকে পেছনে ফেলে নতুন এক আলোয় উদিত হয়।

যারা হজ্জ করেন, তারা ফিরে আসেন অন্য রকম হয়ে। চোখে থাকে এক গভীর শান্তি, কণ্ঠে থাকে বিনয়ের ঝরনা, হৃদয়ে থাকে নতুন করে জীবন শুরু করার স্পর্ধা। হজ্জ যেন এক স্বর্গীয় পুনর্জন্ম—যেখানে মানুষ নিজেকে ফিরে পায় আরও পবিত্র, আরও সত্যনিষ্ঠ এক মানুষ হিসেবে।

হজ্জের প্রতিটি ধাপে, প্রতিটি সূর্যোদয়ে ও প্রতিটি অশ্রুজলে ফুটে ওঠে ইসলামের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য—যেখানে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিই জীবনের চূড়ান্ত সাফল্য। এমন ইবাদত এই পৃথিবীতে আর নেই, যা এতো সরল, অথচ এতো গভীর; এতো নিরব, অথচ এতো প্রভাবশালী।

এই ইবাদতের মাহাত্ম্য কেবল আখিরাতের প্রাপ্তিতে নয়, বরং দুনিয়ার জীবনেও এটি এক নতুন আবর্তন। হজ্জের পর এক মুসলিম যদি সত্যিকার অর্থে পরিবর্তিত না হন, তবে সেই সফর কেবল ভ্রমণই থেকে যায়। কিন্তু যিনি অন্তর দিয়ে হজ্জ করেন, তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় হয়ে ওঠে যেন এক চলমান তাওয়াফ—আল্লাহর দিকে ফিরে ফিরে আসার অবিরাম সাধনা।

হজ্জ তাই কেবল একটি ইবাদত নয়, এটি এক জীবনদর্শন, একটি নিরব বিপ্লব, যা মানুষের ভেতরের অন্ধকার দূর করে এনে দেয় আলোর নিরবধি ছায়া।

“হজ্জ হলো এক আধ্যাত্মিক উল্লম্ফন—যেখানে মুমিন তার সমস্ত ভার ঝেড়ে ফেলে হালকা হয়ে যায় আল্লাহর রহমতের আকাশে।”

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ