
আগামী অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সন্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে গতি সঞ্চার হয়েছে। এর মধ্যে বাকি ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সন্মেলন শেষ করার নির্দেশনা আসছে। এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের রোডম্যাপ প্রণয়ন করছে নগর আওয়ামী লীগ। গত বুধবার রাতে সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের বাসায় বৈঠক করে সম্মেলনের রূপরেখা প্রাথমিকভাবে এগিয়ে যায়।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। দীর্ঘদিন ধরে এই ধারা চলে আসছে। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ঘিরে দুইধারায় বিভক্ত। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর এই ধারাটি মহিউদ্দিনপুত্র শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে ঘিরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় রয়েছে। গত বুধবার রাতে দুই পক্ষের নেতারা এক টেবিলে বসে সম্মেলনের রূপরেখা তৈরিতে একমত পোষণ করেছেন।
নগর আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরে ১৩২টি ইউনিটের মধ্যে ১০৫টি ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়েছে। এছাড়াও ৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টি শেষ হয়েছে। ১৫ থানার মধ্যে একটি থানা সম্মেলন হয়েছে। তাই ২৭টি ইউনিট, ৩১টি ওয়ার্ড ও ১৪টি থানার সন্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে এ অসম্পূর্ণ ইউনিট সম্মেলন শেষ করে ওয়ার্ড সম্মেলন করার বিষয়ে ওই বৈঠকের সবাই একমত পোষণ করেছেন। একই সঙ্গে ওয়ার্ড সম্মেলন করে থানা সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নির্দেশনার রাতে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের বাড়িতে বৈঠকে বসেন নগর আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সিনিয়র নেতারা। বৈঠকে ইউনিট-ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার জন্য প্রাথমিকভাবে ঐকমত্য হয় দুই পক্ষের নেতারা।
বৈঠকে উপস্থিতি দুই নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অসম্পূর্ণ ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করে পর্যায়ক্রমে থানা সম্মেলন করার বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন বৈঠকে উপস্থিত নেতারা। সিনিয়র নেতারা ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার পর দলের বর্ধিত সভা করে সংশ্লিষ্ট কমিটিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি খোরশেদুল আলম সুজন, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান, চন্দন ধর প্রমুখ।
এর আগে গত ১২ মে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই বৈঠকে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের রূপরেখা প্রণয়নের নির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরি প্রেক্ষিতে গত ১৯ মে নগরীর কাজির দেউড়ি সেনা কল্যাণ কনভেনশন হলে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।সভায় মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছিলেন, আগামী জুন ও জুলাই মাসের মধ্যে সকল থানা, ওয়ার্ড এবং ইউনিটের সম্মেলন শেষ করতে হবে। এরপর আগামী অক্টোবর মাসে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে।