
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রাম সহ ১৪টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজারগুলো প্লাবিত রয়েছে। সোমবার (২৭ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে পানিতে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। জোয়ারের প্রভাবে হাতিয়ায় নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৭-৮ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ।
প্লাবিত হওয়া গ্রাম গুলো হলো,নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রাম, মুন্সি গ্রাম,আদর্শ গ্রাম, বান্দাখালী গ্রাম,ডুবাইয়ের খাল গ্রাম,ইসলামপুর গ্রাম,আনন্দগুচ্ছ গ্রাম,বাতায়ন গ্রাম,বসুন্ধরা গ্রাম ও ধানসিঁড়ি গ্রাম,পূর্বাচল গ্রাম,১নং হরণী ইউনিয়নের চর ঘাসিয়া,বয়ারচর,নলচিরা ইউনিয়নের তুফানিয়া গ্রাম,তমরদ্দি ইউনিয়নের পশ্চিম ক্ষিরোদিয়া, কোরালিয়া,চরকিং ইউনিয়নের চর বগুলা।

নলচিরা ঘাটের একজন স্থায়ী বাসিন্দা মোঃ ফারুক বলেন, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে।পুকুর,মাছের প্রজেক্ট, রাস্তা ঘাট সব ডুবে গেছে এমনকি কৃষি ফসলের জমি ডুবে এখন সবাই দিশেহারা হয়ে পড়ছে।ঘর থেকে বের হতে পাচ্ছে না। আয় রোজকার করতে পাচ্ছে না।মনে হয় না খেয়ে মরবে সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জাহের বলেন, নিঝুম দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। ইউনিয়নটির সাগরের একবারে কাছে হলেও নেই কোনো বেড়িবাঁধ। যার ফলে জোয়ারের সময় চারদিক দিয়ে একসঙ্গে এই ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।

১১ নং নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আফছার দিনাজ উদ্দিন বলেন,গত রোববার দুপুর থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্রায় প্লাবিত হয়।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা বলেন, জোয়ার পানিতে হাতিয়ার প্রায় ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার বিভিন্ন নৌ রুটে সি-ট্রাক,ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের জানমাল ও নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হাতিয়ার সাথে সব চলাচল বন্ধ থাকবে। হাতিয়াতে ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।মানুষ মোটামুটি বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে সব দিকে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।