বাংলাদেশ থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) এর আওতায় ৫টি সেক্টরে প্রশিক্ষণ দিবে কোরিয়া। এসব কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সী (কোইকা)। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আধুনিকায়ন এবং চট্টগ্রামে উৎপাদনশীল খাতে কি পরিমাণ জনশক্তি প্রয়োজন তা যাচাইকরণপূর্বক দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে গবেষণা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই অংশহিসেবে চট্টগ্রামের শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালকমন্ডলীর সাথে মতবিনিময় করেছেন কোইকার প্রতিনিধিদল।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ চেম্বার কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে কোইকার ডাইরেক্টর জেনারেল জংমিন পার্ক (ঔড়হমগরহ চধৎশ) বলেন-বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে কোরিয়া। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে কোরিয়া বিভিন্ন সেক্টর বিশেষ করে পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং, মেকাট্রনিক্স, আইটি এবং ইন্ডাষ্ট্রিয়াল অটোমেশন সেক্টরে প্রশিক্ষণ দিবে ও কর্মী নিবে। এরই অংশহিসেবে চট্টগ্রামে কি পরিমাণ জনশক্তি আছে তা গবেষণার মাধ্যমে বের করে শিল্পের চাহিদানুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন-বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের আজকের এই অবস্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে কোরিয়া। আগামীতেও বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামে উৎপাদনশীল খাতগুলোতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করবে কোরিয়া।
এ সময় চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ, কোইকা’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়াং হিউনও (ণধহম ঐুঁহড়িড়), যুক্তরাষ্ট্রের ওকালোহমা ইউনিভার্সিটি প্রফেসর নামছুল লী (ঘধসপযঁষ খবব), মেকানিক্যাল ডিজাইন এক্সপার্ট জং ইয়েন পার্ক (ঔড়হম ণবড়হ চধৎশ), সাংকোংওয়াং ইউনিভার্সিটি প্রফেসর চাং ইয়াপ কিম (ঈযঁহম ণঁঢ় করস), চেম্বার পরিচালকবৃন্দ অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকদ্বয় মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, কোইকার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং চেম্বার কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন-বাংলাদেশের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও দু’দেশের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরিপোশাক খাত আজকের এই অবস্থানের পেছনে রয়েছে কোরিয়ার অবদান। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নেও কাজ করছে কোরিয়া। তিনি বাংলাদেশ থেকে কোরিয়ার দক্ষ মানবসম্পদ আমদানি এবং উৎপাদনশীল খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন-চট্টগ্রামকে সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বিনিয়োগের আন্তর্জাতিক হাবে পরিণত করেছেন। এই অঞ্চলে গড়ে উঠছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর-সহ ৫টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব অঞ্চলগুলোতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু আমাদের প্রচুর জনশক্তি থাকলেও রয়েছে টেকনিক্যাল দক্ষতার অভাব। কোরিয়ার এ ধরণের উদ্যোগের ফলে শিল্পের চাহিদানুযায়ী দক্ষ জনশক্তি যেমন গড়ে উঠবে তেমনি বিভিন্ন দেশেও এসব দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা যাবে। তিনি চট্টগ্রামে শিল্প কারখানাগুলোতে সেক্টরভিত্তিক জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় করতে যৌথভাবে কোইকার সাথে একটা ডাটাবেজ তৈরীতে গবেষণা করার ঘোষণা দেন।
জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন-সরকার দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য বর্তমান সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থার উপর জোর দিচ্ছেন। কোইকার এই ধরণের উদ্যোগ দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।