
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর মেগা প্রকল্পে বেড়িবাঁধের ব্লক তৈরিতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বালি ও পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তবে সেরকম হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। যদি অনিয়ম দেখা যায়, তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তারা। জানা যায়, ২০২১ সালের মে মাসে একনেক সভায় অনুমোদিত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পটিয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের আওতায় ১১৫৮ কোটি টাকা ও শ্রীমাই
খালে মাল্টিপারপাস হাইড্রোলিক ইলেভেটর ড্র্যাম নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৩৩ কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ১৩শ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বারবার কাজের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য তাগিদ দিলেও ঠিকাদার ও পাউবো কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে লবণাক্ত বালি ও পাথর ব্যবহার করে ব্লক তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ব্লক তৈরির সময় পাউবোর কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলার ভাটিখাইন ইউনিয়নের বাইপাস
পয়েন্টে সরেজমিন পরিদর্শনকালে এমন চিত্রের দেখা মেলে । উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্লক তৈরির পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ১:২.৫:৫ মাত্রার ঢালাই টেন্ডারে থাকলেও বালি ও পাথরের পরিমাণ বেশি এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঢালাইয়ের পর কমপক্ষে ২১ দিন ব্লক ভিজিয়ে রাখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। রোদ বেশি হলে এই সময়কাল আরও বৃদ্ধি পায়, কিন্তু তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। সিডিউল অনুযায়ী, বালির এফএম কমপক্ষে ১.৫ হওয়া উচিত, কিন্তু তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে এফএম ১ থেকে .৮ সাইজের কাঁদাযুক্ত লবণাক্ত বালি।
ওই এলাকার বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন,স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে দিয়ে বালি ও পাথর সরবরাহ করানোর কারণে ঠিকাদাররা ইচ্ছেমত লুটপাট করছে। কাজের গুণগত মান একেবারেই নিশ্চিত করা হচ্ছে না। অপর এক বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে সিন্ডিকেটের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলী পরস্পর যোগসাজশে উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। পটিয়ায় পাউবোর প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন,পাউবোর প্রকল্প মানেই যেন দুর্নীতির মহোৎসব।
বিগত বছরগুলোতে যারা লুটপাট করেছে, তাদের সহযোগীরাই এখনও একই কাজ করছে। তবে পাউবো চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ জানান, তারা পাথর,বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি নির্মাণসামগ্রী পরীক্ষা করেছেন এবং প্রকল্প সাইট ও তৈরিকৃত ব্লক সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
তিনি জানান, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ব্লক তৈরি করা হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রকল্প পরিচালক খ.ম জুলফিকার তারেক বলেন, ‘আমার জানা মতে, এরকম হওয়ার কথা না। যদি অনিয়ম দেখা যায়,তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।