চট্টগ্রাম মহানগরে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নগরের খুলশীর এক নম্বর সড়কে উল্টো রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেয়ায় ওই পুলিশ সদস্যের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। নাকের হাড় ভেঙে মুখমন্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় ওই পুলিশ সদস্যেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযুক্ত প্রাডো পাজেরো জিপের চালককে গাড়িসহ আটক করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। ঘটনার পরপরই ওই চালককে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। চালকের নাম রফিকুল আলম। তিনি সাউথ ইস্টার্ণ ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড নামক একটি কোম্পানির যানবাহন শাখায় কর্মরত। আটক গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্টো-ঘ ১৭-৪৮২৪।
এর আগে, গত ৯ আগস্ট নগর পুলিশের (সিএমপি) বন্দর থানায় কর্মরত এক পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক পেটায় দুর্বৃত্তরা। ওইদিন তিনি পুলিশ সদস্য কিনা জিজ্ঞেস করেই দুর্বৃত্তরা লাঠিসোঁঠা ও হাত দিয়ে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে একটি প্রাডো পাজেরো জিপ খুলশী ১ নম্বর সড়কে উল্টো দিক থেকে এসে রাস্তা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এসময় কর্তব্যরত কনস্টেবল সোহরাব হোসেন তাকে সিগন্যাল দেয়। তখন কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়ির চালক ওই কনস্টেবলের শার্টের কলার ধরে মুখে ঘুষি মারেন। যার ফলে ওই পুলিশ সদস্যের নাকের হাড় ভেঙে অনবরত রক্ত বের হয় ও তার পরিহিত ইউনিফর্ম ছিড়ে যায়। সেই সাথে মুখমন্ডলও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় চালকসহ গাড়িকে আটক করে খুলশী থানার কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব দে-কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, হামলাকারী ওই পাজেরো চালককে ঘটনার পরপরই চাকরিচ্যুত করেছে ইস্টার্ন ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির মানব সম্পদ ও প্রশাসন শাখার ব্যবস্থাপক মো. মোরশেদ মঈনুদ্দীন এক নোটিশে এ তথ্য জানান। কোম্পানির নিয়মানুযায়ী ছাড়পত্র প্রাপ্তির ভিত্তিতে হিসাব শাখা থেকে যেকোনো কর্মদিবসে ও কর্মসময়ের মধ্যে ওই চালকের সমুদয় পাওনাদি বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দেশও প্রদান করা হয়।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম বলেন, দুপুরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের সময় একটি পাজেরো জিপের চালক একজন কনস্টেবলকে মারধর করে রক্তাক্ত করে। এরপর ওই চালককে গাড়িসহ আটক করে থানায় সোপর্দ করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এরইমধ্যে অভিযুক্ত চালককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, হামলার শিকার পুলিশ সদস্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি চিকিৎসা নিয়ে এসে একটি মামলা করবেন জেনেছি। তিনি আসলে মামলা নেওয়া হবে।
হামলার ঘটনায় আক্ষেপ করে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, পুলিশের উপরে বারবার হামলা কেন? এভাবে হামলা হলে পুলিশ কীভাবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে? এর আগেও বন্দর থানার এক কনস্টেবলকে পুলিশ কিনা জিজ্ঞেস করে বেধড়ক পেটানো হয়। আমরা ট্রমা কাটিয়ে স্বাভাবিকভাবে জনগণকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে এ হামলার ঘটনা আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক এবং ভীতিকরও বটে।