দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর মন্ত্রী-এমপি'র পাশাপাশি লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সিংহভাগ নেতাই এখন লাপাত্তা। ফলে জেলা আ'লীগের শীর্ষ ১১ নেতার ছবি সম্বলিত "এরা সমাজের গণ দুশমন" পোস্টারটি শহর থেকে গ্রাম এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা শহরের মিশন মোড়, আলোরুপা মোড় ও বিডিআর গেট সহ বিভিন্ন এলাকাজুড়ে সাঁটানো এবং ফেসবুকে ঢুঁকতেই চোখপড়ে ঐ সব পোষ্টার । গণ দুশমন প্রতিরোধ ও রাস্ট্র সংস্কার আন্দোলন-লালমনিরহাট কর্তৃক প্রকাশিত ওই পোস্টারে বলা হয় "এরা সমাজের গণ দুশমন" খুনি, ভোটচোর, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, নিয়োগ বাণিজ্য সিন্ডিকেট, ঘুষখোর, হুন্ডি ব্যবসায়ী, দখলবাজ, নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিন ।
উক্ত ছবি সম্বলিত পোস্টারটিতে লালমনিরহাট জেলা আ'লীগের শীর্ষ ১১ নেতারা হলেন, এ্যাড. মতিয়ার রহমান। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লালমনিরহাট সদর-৩ আসনের সদ্য সাবেক এমপি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। নুরুজ্জামান আহমেদ, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এবং কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ্যাড. সফুরা বেগম, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেত্রী এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, সদ্য সাবেক হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। রুহুল আমিন বাবুল, সদ্য সাবেক পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। মাহমুদুল হাসান সোহাগ, হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রাকিবুল হোসেন রাকিব, সদ্য সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সুমন খাঁন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মিজানুর রহমান মিজান, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের একান্ত সচিব এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও আমিনুল ইসলাম খাঁন, লালমনিরহাট সদর উপজেলা হারাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।
এসব সাবেক মন্ত্রী ও এমপি সহ জেলার নেতাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার "এরা সমাজের গণ দুশমন" সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে ঢুঁ মারতেই চোখে পড়ে ছবিগুলো। চোখজুড়ে শূন্যে ভেসে থাকা এসব ছবি এখন ফেসবুকে ভাইরাল। গণহারে শেয়ার হচ্ছে। যেখানে নেটিজেনরা জুড়ে দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে (৫ আগস্ট) ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদেরই খোঁজ মিলছে না। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়েছেন জেলার সব পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতারা। বেশির ভাগ নেতা দেশে পরিচিতজন কিংবা স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।