চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, একভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অন্যভাবে নিয়োগ, অস্থায়ী কে অবৈধ ভাবে স্থায়ীকরণসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। যোগদানে পর থেকে চালিয়েছে একের পর এক অপকর্ম। চসিকের এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের তীর ছুঁড়ে মারছেন ভুক্তভোগীরা।
ঠিকাদাররা জানান, টেন্ডারের সময় সময়সীমা শেষ হলেও এনও ধরে রেখেছেন অনেকদিন ধরে। সম্প্রতি ৫টি টেন্ডার বাবদ ২ কোটি টাকাও হাতিয়ে নেন তিনি। এছাড়াও অবৈধভাবে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এক পদ থেকে অন্য পদে স্থায়ী করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি। অতিসম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগের প্রায় ৫০ পার্সেন্টই তিনি নিয়োগ দেন। আগেও অনেকবার বিভিন্ন অভিযোগ উঠে আসলেও স্বৈরাচারের দোসর হওয়ায় ক্ষমতা বলে ধামাচাপা দিয়েছিল এসব অভিযোগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি টেন্ডারে থাকতো তার জন্য একটা নির্দিষ্ট এমাউন্ট এর ঘুষ, হিসাববিভাগ এর মাধ্যমে প্রত্যেকটা বিলে ১০% ঘুষ আদায় করেন এই কর্মকর্তা। বিগত ছাত্র আন্দোলনের সময়ও সড়ক বাতি অফ করার সাথে জড়িত এই কর্মকর্তা। ৩ থেকে ৫ আগস্ট এই কর্মকর্তার নির্দেশনায় ঝুলন কুমার দাশের মাধ্যমে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে সড়ক বাতি নেভানো ছিল, যার ফলে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হন। পরবর্তীতে ঝুলন কুমার দাশকে চাপের মুখে বরখাস্ত করলেও এই কর্মকর্তা এখনও চেয়ারে বিরাজমান।
এখানেই শেষ নয়, যোগদানের পর থেকেই অফিসে চালিয়েছে গ্রুপিং পলিটিক্স। তার এই গ্রুপিং পলিটিক্স এর শিকার হয়েছিল সাবেক চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ। তার বেআইনি কাজে সাড়া না দেওয়ায় বিভিন্ন ভাবে তার নামে ক্ষমতা বলে অপপ্রচার চালায় এই স্বৈরাচারী কর্মকর্তা ।
সূত্র জানায়, বিগত মেয়রের সময়ে তথ্য পাচারের দায়ে ইকবাল হাসান নামক এক ব্যাক্তিকে ট্রান্সফার করা হলেও, তাকে বিভিন্ন পাঁয়তারায় ফিরিয়ে আনতে উঠে পরে লাগে এই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। অবশেষে ৫ তারিখের পর কিছু সময়ের জন্য প্রসাশন না থাকায় অবৈধ অফিস আদেশ করে তাকে “আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে” সচিবালয়ে সংযুক্ত করে, যেখানে চসিকের অর্গানোগ্রামে আইটি বিশেষজ্ঞ বলে কোন পদবী নেই। পরবর্তীতে আরেকটি অফিস আদেশ করে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে বানিয়ে দেওয়া হয় “প্রোগ্রামার“। বিগত সময়ে এই ইকবাল হাসানের নামেও উঠে এসেছিল দুদকের অনেক অভিযোগ। এ যেন এক দুর্নীতির সিন্ডিকেট।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।