আজঃ রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

বগুড়ায় বিশাল সুধী সমাবেশে আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান

বগুড়া সংবাদদাতা

ললফ্যাসিবাদমুক্ত বৈষম্যহীন তারুণ্যনির্ভর মানবিক বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে আমীরে জামায়াত জননেতা ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, দল-ধর্ম যার যার, এই বাংলাদেশ সবার। আমরা এমনটা বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে কোন বৈষম্য থাকবেনা। যেই তারুণ্যের বুকের রক্তের বিনিময়ে জাতি ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে আমরা সেই তারুণ্য নির্ভর, মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। একজন শিশু জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সে একজন নাগরিকের পূর্ন অধিকার ভোগ করবে। বিতাড়িত ফ্যাসিবাদ সাড়ে ১৫ বছরে দেশের মানুষকে শুধু খুন, গুম উপহার দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাদেরকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। যারা অপরাধ করেছে, দূর্নীতি করেছে, লুটপাট করেছে, বৈষম্য সৃষ্টি করেছে, মানুষকে হত্যা করেছে, লাশের মিছিল তৈরি করেছে, আয়নাঘর বানিয়েছে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবেনা। তিনি শনিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর ও জেলা শাখা আয়োজিত বিশাল সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীরে জামায়াত বলেন, আওয়ামীলীগ বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের প্রথম সারির এগারো জন নেতাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। আমাদের কেন্দ্রিয় অফিসসহ সারাদেশের সকল অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। সাড়ে ১৩ বছর আমরা আমাদের অফিসে বসে কোন কাজ করতে পারিনি। গারে জোরে আমাদের নিবন্ধন এবং প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বুলডোজার দিয়ে আমাদের বাড়ী-ঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল। চব্বিশের ছাত্রজনতার আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতা ছাড়েনি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভয়ে দেশ ছেড়েই পালাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, যারা দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছিল সেই জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার নৈতিক অধিকার তাদের নেই। তাদের নাম বাংলাদেশের জনগন শুনতে চায় না। তাদের কথা বলে জাতিকে ভয় দেখাবেন না। জাতিকে বোকা ভাববেন না। দেশের মানুষ যাদের গুলিকে ভয় করে নাই সেইসব দূর্ধর্ষ খুনিদেরকে এদেশের মানুষ কখনোই আসতে দিবেনা। আগে তাদের বিচার হবে উল্লেখ করে আমীরে জামায়াত বলেন, যেই আদালতে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদেরকে অন্যায় ভাবে ফাঁসী দেওয়া হয়েছে এখন সেই আদালতেই তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আমরা চাই তাদের প্রতি যেন ন্যায় বিচার করা হয়। তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রিয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী। আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলা শাখার আমীর ডা: ফজলুর রহমান সাঈদ, সিরাজগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা শাহীনুর আলম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরের ভারতের তাবেদার, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জুলুম নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে গণতন্ত্র হত্যা এবং বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করছে। তিনি বলেন,ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ ফ্যাসিবাদের দোসর পলাতক বাহিনী যেখানেই থাকুক না কেনো তাদের ধরে এনে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে বাংলার মাটিতে আর কোন দিন কোন ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয়।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন,জামায়াত দেশের ক্ষমতায় গেলে হিন্দু-মুসলিম সবাই সমান অধিকার ফিরে পাবে, শান্তিতে থাকতে পারবে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন কায়েমের মাধ্যমে কাংখিত সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেখানে আর কোন ফ্যাসিবাদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই।
বগুড়া শহর সেক্রেটারি আ,স,ম আব্দুল মালেক, পূর্ব জেলা সেক্রেটারি মওলানা মানসুরুর রহমান ও পশ্চিম জেলা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম রাজুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বগুড়া পশ্চিম জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, পূর্ব জেলা আমীর অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, শহর নায়েবে আমীর মাওলানা আলমগীর হোসাইন, পূর্ব জেলার নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল বাসেদ, পশ্চিম জেলার নায়েবে মাওলানা আব্দুল হাকিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল মতিন, ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম, বগুড়া পশ্চিম জেলা সভাপতি সাইয়্যেদ কুতুব সাব্বির, বগুড়া পূর্ব জেলা সভাপতি জোবায়ের আহম্মেদ প্রমূখ। সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রিয় সহসভাপতি ইঞ্জি: শামসুল হক। এর আগে সকালে প্রবল বর্ষন উপেক্ষা করে একই ভেন্যুতে বগুড়া শহর ও জেলা শাখার রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রুকন সম্মেলনে আমীরে জামায়াত বলেন, ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির আন্দোলনের কোন একক মাষ্টার মাইন্ড নেই। দেশের মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। আন্দোলনের নেতৃত্বের কৃতিত্ব যুবসমাজের। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছি সেইসব বীর শহীদদের কে জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে বিবেচনা করেনা। তাঁরা জাতীয় বীর। তিনি বলেন, জনগণ বিভক্ত জাতি দেখতে চায় না। তারা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায়। আমরাও দল-মতের ঊর্দ্ধে উঠে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। দল-মতের ভিন্নতা থাকলেও দেশের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ৫ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর বহু আগাছা-পরগাছা মাথা চাঁড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আমীরে জামায়াত বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের শেষের দিনগুলো মোটেও সহজ ছিলোনা। আন্দোলনকারীদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তারা একসাথে বসে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলোনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা লড়াই করে জাতিকে মুক্তি এনে দিয়েছে। হাজারো প্রানের বিনিময়ে, হাজার হাজার আহতদের আর্তনাদের বিনিময়ে বিজয় এসেছে। সকল শহীদ এবং আহতদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সাধ্যমত সকল শহীদ এবং আহতদের পাশে থাকবে। তিনি বগুড়ায় আন্দোলনে আহতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা প্রদান করেন। আমীরে জামায়াত বলেন, আমাদের দেশ বিপুল সম্ভাবনার দেশ। জাতি একটি ইনসাফপূর্ন সমাজ চায়। গোটা জাতি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। জাতিকে হতাশ করা যাবেনা। তাদেরকে আশাবাদী করতে হবে। সবার ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। তিনি রুকনদেরকে ব্যক্তি ও পরিবার গঠনে দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান জানান। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহীম ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জয়পুরহাট জেলা আমির ডা: ফজলুর রহমান সাঈদ, সম্মেলনে নবনির্বাচিত বগুড়া শহর আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল ও বগুড়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান আমীরে জামায়াত। বগুড়া শহর ও জেলা শাখার ৪ হাজার ৪৭ জন রুকন সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন। বগুড়া শহর সেক্রেটারি আ,স,ম আব্দুল মালেক সম্মেলনের প্রস্তবনা পাঠ করেন শোনান। উপস্থিত রুকনবৃন্দ সর্বসম্মতভাকে প্রস্তাবনা অনুমোদন করেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে লাগেজে মিলল ৯০ লাখ টাকার সিগারেট

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানাহীন ছয়টি লাগেজ থেকে ৮০০ কার্টন মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এরাইভাল হলের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড কর্নারের পাশ থেকে এসব লাগেজ উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া সিগারেট প্রতি কার্টন ১১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য ধরে মোট ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, লাগেজগুলোর সঙ্গে কোনো যাত্রীর নাম, ট্যাগ বা মালিকানার কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও কেউ লাগেজের দাবি না করায় সেগুলোকে কাস্টমস আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে লাগেজ খুলে ৮০০ কার্টন সিগারেট পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, লাগেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মালিকবিহীন অবস্থায় ছিল। কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

সিএমপির ১৬ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি

চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ১৬ থানার সব ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একযোগে বদলি করা হয়েছে। শনিবার সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক চিঠির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

চিঠি সূত্রে জানা গেছে, কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুর রহিমকে পাঁচলাইশে, সদরঘাট থানার মো. আব্দুর রহিমকে বন্দর থানায়, বাকলিয়া থানার মো. আফতাব উদ্দীনকে কোতোয়ালীতে, পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. সোলায়মানকে বাকলিয়া থানায়, বায়েজিদ থানার ওসি জসিম উদ্দীনকে চান্দগাঁও থানায়, চান্দগাঁও থানার জাহেদুল কবিরকে বায়েজিদ থানায়,

খুলশী থানার শাহীনুল আমিনকে কর্ণফুলী থানায়, ডবলমুরিং থানার বাবুল আজাদকে চকবাজার থানায়, হালিশহর থানার নুরুল আবছারকে পাহাড়তলী থানায়, আকবরশাহ থানার মো. আরিফুর রহমানকে সদরঘাট থানায়, পাহাড়তলী থানার মো. জমির হোসেন মোহাম্মদ জিয়াকে ডবলমুরিং থানায়, কর্ণফুলী থানার জাহেদুল ইসলামকে খুলশী থানায়, বন্দর থানার ওসি মোস্তফা আহম্মেদক পতেঙ্গা থানায়, পতেঙ্গা থানার ওসি কাজী মোহাম্মদ সুলতার আহসান উদ্দীনকে হালিশহর থানায়, ইপিজেড থানার কামরুজ্জামানকে আকবরশাহ থানায়, চকবাজার থানায় শফিকুল ইসলামকে সিটিএসবিতে বদলী করা হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ