আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ওয়ার সিমেনট্রি ইতিহাসের অপর নাম

সোমা মুৎসুদ্দী

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

একটা সময় ছিলো ব্রিটিশ শাসন আমাদের পূর্বপুরুষেরাও ছিলো ব্রিটিশের অধীনে,সেই সাথে আমাদের প্রিয় চট্টগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাস আমাদেরকে সমৃদ্ধ করেছে, আমাদের আছে নিজস্ব, ইতিহাস ও সংস্কৃতি। ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রথম পর্বের অনুভূতিতে আজ বলবো চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেনট্রির কথা।ওয়ার সিমেনট্রি, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত একটি কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধি।

১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সালে বার্মায় সংগঠিত যুদ্ধে যে ৪৫,০০০কমনওয়েলথ সৈনিক নিহত হন তাদের স্মৃতি রক্ষা করার জন্য, মায়ানমার তৎকালীন (বার্মা),আসাম এবং বাংলাদেশের নয়টি রণ সমাধিক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে।বাংলাদেশে দুটি কমনওয়েলথ রণ সমাধিক্ষেত্র আছে।একটি চট্টগ্রামে এবং অপরটি কুমিল্লায়। প্রতিবছর এবং প্রতিদিন, প্রচুর দর্শনার্থী যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের প্রতি সম্মান জানাতে এসকল রণ সমাধি ক্ষেত্রে আসেন।চট্টগ্রাম রণ সমাধি মূলত,২য় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫)নিহত ভারতীয় (তৎকালীন) ও ব্রিটিশ সৈন্যদের কবরস্থান।এটি

১৯৪৩থেকে ১৯৪৪ সালে তৈরি হয়েছে।এটি চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদীবাগ এলাকার ১৯ নং বাদশাহ মিয়া সড়কে অবস্থিত।এয়ারপোর্ট থেকে দূরত্ব ২২কিলোমিটার। এবং পোর্ট থেকে দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। ওয়ার সিমেনট্রি চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের এবং ফিনলে গেস্ট হাউজের খুব কাছেই অবস্থিত।এই সমাধিক্ষেত্রটি (C.W.G.C)কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ও তারাই এই সমাধিক্ষেত্রটি পরিচালনা করেন।প্রতিবছর নভেম্বর মাসে সকল ধর্মের ধর্মগুরুর মাধ্যমে এখানে একটি বার্ষিক প্রার্থনাসভা হয়ে থাকে।চট্টগ্রামে তৎকালীন সময়ে ছিলো অনেক বড় হাসপাতাল। এছাড়া চট্টগ্রামে ছিলো যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্র গভীর সমুদ্র বন্দর। যেখান থেকে মিত্র বাহিনী আরাকান এলাকায় তাদের সামরিক অভিযান পরিচালনা করতো। ব্রিটিশ

সেনাবাহিনী দিয়ে নির্মিত এই সমাধি ক্ষেত্রে প্রথমদিকে মোট ৪০০টি কবর ছিলো। বর্তমানে ওয়ার সিমেনট্রিতে ৭৫৫টি কবর আছে।এর মধ্যে অধিকাংশ হলো সেই সময়কার হাসপাতালের মৃত সৈনিকেরা। তাছাড়াও যুদ্ধের পর বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু লাশ এনে এখানে সমাহিত করা হয়।বিভিন্ন বাহিনী অনুয়ায়ী এখানে মারা যাওয়া শহীদদের মধ্যে ১৪ জন নাবিক,৫৪৩জন সৈনিক ১৯৪জন বৈমানিক ও ৪ জন বেসামরিক মানুষ ছিলেন।সব মিলিয়ে ৭৩৮জন নিহতের পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছিলো।ওয়ার সিমেনট্রির প্রবেশমুখে একটি মেমোরিয়াল আছে,যেখানে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সমুদ্রে নিহত রয়াল ইন্ডিয়ান নেভী ও মার্চেন্ট নেভী এর ৬,৪৬৯নাবিকের নাম ও পরিচয় সংরক্ষণ আছে।সমাধিক্ষেত্রটির প্রবেশমুখে একটি তোরণ ঘর যার ভেতরে দেয়ালে এই সমাধিক্ষেত্রটির ইতিহাস ও বিবরণ ইংরেজী ও বাংলায় লিপিবদ্ধ করে একটি দেয়াল ফলক

লাগানো রয়েছে।ভিতরে সরাসরি সামনে প্রশস্থ পথ,যার দুইপাশে সারি, সারি কবর ফলক।সৈন্যদের যার যার ধর্ম অনুযায়ী, তাদের কবর ফলকে,নাম মৃত্যু তারিখ পদবীর পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিক লক্ষ্য করা যায়। খৃষ্টানদের কবরফলকে ক্রুশ,মুসলমানদের কবর ফলকে আরবি লেখা উল্লেখযোগ্য।প্রশস্থ পথ ধরে সোজা সামনে রয়েছে সিঁড়ি দেওয়া বেদি তার উপর শোভা পাচ্ছে খৃষ্টান ধর্মের প্রবিত্র প্রতিক ক্রুশ প্রতি পর পর দুটি কবর ফলকের মাঝখানে সারি, সারি ফুলগাছ শোভা পাচ্ছে।এছাড়াও পুরো সমাধিক্ষেত্রে রয়েছে প্রচুর গাছ, যা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেনট্রি সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২ টা ও দুপুর দুইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।আগে মূল সমাধিক্ষেত্রে ঢুকতে পারলেও কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তার জন্যই সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কেউ ঢুকতে চাইলে আগেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা পাস নিতে হবে।ইতিহাস ঐতিহ্যের নগরী চট্টগ্রাম, আমাদের আছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি, শহরের মাঝেই একটুকরো সমাধিক্ষেত্র দেখার জন্য প্রতিদিন শত, শত লোক ভিড় করেন ও সৈনদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, পরিবার পরিজন নিয়ে অবসরে আপনিও আসতে পারেন চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেনট্রি, সেই সাথে সবুজের নান্দনিকতা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সাঘাটা হানাদারমুক্ত দিবস পালন: বীরত্বের ইতিহাসে উচ্ছ্বাসমুখর মানবসমাগম

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর দখলমুক্ত হয় সাঘাটা। দিবসটিকে স্মরণীয় রাখতে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।দিনটি উপলক্ষে সকালে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি উপজেলা চত্বর থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল কবীর। সভায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠার তাৎপর্য এবং স্বাধীনতার সত্য ইতিহাস নতুন প্রজন্মের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুদ্ধকালীন রুস্তম কোম্পানির ১১ নং সেক্টরের সরকারি কোম্পানি কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক, সাঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মঈন প্রধান লাবু, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা ইব্রাহিম হোসেন, সাংগঠনিক সেক্রেটারি এনামুল হক সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতলুবর রহমান রেজা, আশরাফুল আলম, যুবদলের আহ্বায়ক আহমেদ কবীর শাহীন এবং বোনারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসিউল করিম পলাশ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ৮ ডিসেম্বর সাঘাটা হানাদারমুক্ত হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ গণহত্যা ও নির্যাতন থেকে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা নতুন প্রজন্মের মাঝে পৌঁছে দিতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।অনুষ্ঠানের শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ