আজঃ রবিবার ২২ জুন, ২০২৫

যানজটমুক্ত হচ্ছে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা, ঈদযাত্রায় হতে পারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় আরও দুটি নতুন বুথ স্থাপন করা হয়েছে, ফলে মোট বুথ সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ১০টিতে। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) তত্ত্বাবধানে থাকা এই টোল প্লাজায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে নতুন এই দুটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মূলত ঈদুল আজহার পূর্বে ঘরমুখো মানুষের চাপ সামাল দিতে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারগামী যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত টোল প্লাজায় এসব বুথ স্থাপন করা হয়।

সওজ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ চৌধুরী জানিয়েছেন, নতুন বুথগুলো চালু হওয়ায় এখন আর আগের মতো যানজট হবে না বলেই আশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, শাহ আমানত সেতু, যা তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নামেও পরিচিত, কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম এক্সট্রাডোজড টাইপ সেতু। সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে এবং শেষ হয় ২০১০ সালের জুলাই মাসে। এটি
আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার এবং প্রস্থ ২৪.৪৭ মিটার। এটি চার লেনবিশিষ্ট এবং দুই পাশে রয়েছে ১.৫ মিটার প্রশস্ত ফুটপাত। সেতুর নকশা করে যুক্তরাজ্যের রেনডেল পামার অ্যান্ড ট্রিটন (জবহফবষ চধষসবৎ ্ ঞৎরঃঃড়হ) এবং নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং এতে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কঋঅঊউ) অর্থায়ন করে।

সেতুর নির্মাণে মোট ব্যয় হয় প্রায় ৫৯০ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৩৭২ কোটি টাকা ছিল কুয়েত ফান্ডের ঋণ সহায়তা। মূল সেতুর নির্মাণ ব্যয় ছিল ৩৩৬ কোটি টাকা, এবং বাকি ব্যয় সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ ও অন্যান্য সহায়ক অবকাঠামোর পেছনে ব্যয় হয়। সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই এটি চট্টগ্রাম মহানগরী ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বিশেষ করে আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া,

চন্দনাইশ ও কক্সবাজারসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়ক সংযোগ নিশ্চিত করে চলেছে। এটি চট্টগ্রাম নগরীর উপর থেকে ভারী যানবাহনের চাপ কমিয়ে দিয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
টোল আদায়ের দিক দিয়ে সেতুটি একটি গুরুত্বপূর্ণ
আয়ের উৎস। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেতু দিয়ে চলাচল করেছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৬টি যানবাহন এবং ওই মাসে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৬ টাকা। ২০২৩ সালে বার্ষিক টোল আদায় হয়েছে ৭৯ কোটি ১৯ লাখ ৮ হাজার ৩৮৭ টাকা এবং যানবাহনের সংখ্যা ছিল ৯১ লাখ ২ হাজার ৪২৫টি। বর্তমানে টোল আদায়ের পুরো প্রক্রিয়াটি কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়, যা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।

নতুন দুটি বুথ চালু হওয়ায় সেতুর টোল প্লাজায় যান চলাচল আরও দ্রুত ও সহজ হবে এমনটি বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। অতীতে যেসব সময় দীর্ঘ যানজটে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হতো, এখন তা অনেকটাই কমে আসবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা করছে। ঈদসহ যেকোনো জাতীয় ছুটি বা উৎসবের সময়ে এই অতিরিক্ত বুথগুলোর কার্যকারিতা আরও বেশি দৃশ্যমান হবে। সেতুটি কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক প্রবাহকে আরও গতিশীল করে তুলছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় যোগব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ : মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় যোগব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে শনিবার বিকেলে চিটাগং ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মেয়র একথা বলেন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘যোগব্যায়াম একটি প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য, যা শরীর ও মনের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। এটি শুধু একটি ব্যায়াম নয়, বরং মানব ও প্রকৃতির মধ্যে ঐক্য, আত্মসচেতনতা এবং সার্বজনীন মানবিক চেতনার অনুশীলন। আধুনিক জীবনের দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ও বিচ্ছিন্নতার মধ্যে যোগব্যায়াম আমাদের ভারসাম্য ও অন্তঃশান্তির পথ দেখায়।’

করোনা পরবর্তী বিশ্ব বাস্তবতায় সুস্থ শরীর গড়ার গুরুত্ব তুলে ধরে মেয়র বলেন,‘করোনা ভাইরাস আমাদের শিখিয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানসিক প্রশান্তি কতটা জরুরি। এ জায়গায় যোগব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নিয়মিত যোগচর্চা মানুষকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে এবং সংকট মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাস জোগায়।’যোগব্যায়ামে অংশ নেন নারীরাও।

চট্টগ্রাম শহরে যোগচর্চার প্রসার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের নগরবাসীর মধ্যে যোগব্যায়ামের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। আমি বিশ্বাস করি, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার এবং কর্মক্ষেত্রগুলোতে নিয়মিত যোগচর্চা অন্তর্ভুক্ত করা হলে নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও মনোবল অনেক উন্নত হবে।’অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বক্তব্য দেন।ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনের উদ্যোগে এ আয়োজনে সহযোগিতা দিয়েছে চিটাগাং ক্লাব, ফোরএইচ গ্রুপ এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। এতে বিভিন্ন বয়সী যোগচর্চাকারী, শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

চট্টগ্রামে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার

চট্টগ্রামে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ায় চুনতি রেঞ্জ বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম খাতুরিয়া গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম, কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা গ্রামের মৃত জেবল হোসেনের ছেলে ছাদেকুর রহমান, চকরিয়া বাজারপাড়া গ্রামের মো. মাসুকের ছেলে মো. কামাল এবং পূর্ব বড় ভেওলা সিকদারপাড়ার মৃত আলমগীরের ছেলে কেফায়েত হোসেন। গ্রেফতার আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অস্ত্র, ডাকাতি, হত্যাচেষ্টা ও নারী-শিশু নির্যাতনসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে। অপর ৩ আসামির বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, চেকপোস্টে তল্লাশির সময় সন্দেহভাজন একটি গাড়ি থামানো হলে ডাকাতদলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া দিয়ে ৪ জনকে আটক করা হয়। তল্লাশিতে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ২টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ৪ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ১টি রামদা, ১টি স্প্রিং চাকু ও ২টি ধারালো চাকু, ১টি লোহার কাঁচি, ২টি শাবল, ৪টি মোবাইল ও ১টি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক, নগদ ১৬ হাজার টাকা ও ৮২৪ টাকার খুচরা কয়েন এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ জব্দ করা হয়।

পুলিশ আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ফকিরপাড়া এলাকায় সংঘটিত একটি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা সেখানে ডাকাতি করে লুণ্ঠিত অর্থ ও মালামাল কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিল।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ