আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

এক জমি দুই ব্যাংকে বন্ধক আত্মসাৎ ১০৫ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট একই জমির দলিল দুই ব্যাংকে বন্ধক রেখে ১০৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যার ফলে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করা হয়েছে।সম্রাট মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্স ও সাঈদ ফুডস লিমিটেডের মালিক। নগরের জুবিলী রোডে টাওয়ার ইন হোটেলের পাশে ২৮ শতক সম্পত্তি আছে তার, যেখানে পাঁচতলা ভবন নির্মাণাধীন। এই জমি দেখিয়েই তিনি দুই ব্যাংকের টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক দুটি তার কাছে এখন পাচ্ছে ৩৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ছাতা ব্যবসার পাশাপাশি ২০০৭ সালের দিকে খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্য ব্যবসা শুরু করে ছিদ্দিক ট্রেডার্সের কর্ণধার আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট। মূলত বাবার প্রতিষ্ঠিত ছিদ্দিক ট্রেডার্সের সুনামকে পুঁজি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেন তিনি।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত (নম্বর-৬৫৩৮) বন্ধকি দলিলমূলে ২৮ শতক সম্পত্তি দেখিয়ে ওয়ান ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের নামে ৪৯ কোটি টাকা ঋণ নেন সম্রাট। এরপর ১৬ জুন সাঈদ ফুডস লিমিটেডের নামে ঋণ বাড়িয়ে নেন ৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ওয়ান ব্যাংকের ঋণ সুদ-আসলে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি টাকা। অপরদিকে সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে একই জমির আরেকটি

(নম্বর-৭০৬৪) বন্ধকি দলিল তৈরি করে সোনালী ব্যাংক লালদীঘি করপোরেট শাখায় বন্ধক রেখে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মেসার্স সিদ্দিক ট্রেডার্সের নামে ৫১ কোটি টাকা ঋণ নেন সম্রাট। সুদ-আসলে সোনালী ব্যাংকের ঋণ বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ঋণখেলাপি সম্রাট টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোনালী ব্যাংক তার বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুলে। জালিয়াতির মাধ্যমে একই সম্পত্তি দুই ব্যাংকে বন্ধক রাখার কারণে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে সম্রাটের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর বিষয়টি নজরে আসে ওয়ান ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। তারা সম্রাটের কাছে পাওনা দাবি করলে গত ৯ মে তিনি বন্ধক রাখা সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করতে আবেদন করেন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এতে রাজি হয়নি।

আবু সাঈদ চৌধুরী সম্রাট তার সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করার জন্য ওয়ান ব্যাংকে আবেদন করেছেন দাবি করে বলেন, এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সোনালী ব্যাংক লালদীঘি করপোরেট শাখার ডিজিএম আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ঋণখেলাপি সম্রাটের কাছে ব্যাংক পাচ্ছে ১৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। বারবার অবগত করার পরও তিনি ঋণ পরিশোধ করেননি।

পরে তার বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তুললে দেখা যায়, তিনি একই জমি দুই ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছেন। ওয়ান ব্যাংকের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জুয়েল দাশ জানান, সম্রাট ২৮ শতক জমি বন্ধক রেখে ৫৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ না করায় অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়। এরইমধ্যে সোনালী ব্যাংকের মামলার নথি দেখে দুই ব্যাংক থেকে সম্রাটের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ