আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে টানা ছুটিতে কনটেইনার খালাস নেমে এসেছে অর্ধেকে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে দৈনিক প্রায় পাঁচ হাজার কনটেইনার জাহাজ থেকে খালাস হয়। কিন্তুঈদুল আজহার টানা সরকারি ছুটির প্রভাবে সেটা অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। এতে বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে ও জেটিতে জাহাজের গড় অবস্থানকাল বেড়েছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) থেকে জাহাজ ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। বন্ধের মধ্যে যেভাবে জাহাজ ও কনটেইনার জটের আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেভাবে হয়নি।

এদিকে ছুটির প্রভাবে বন্দর থেকে কনটেইনার ডেলিভারি ও রফতানি কনটেইনার প্রবেশও কমে গেছে। বর্হিনোঙ্গরে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ জাহাজের জট তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বন্দরের অভ্যন্তরেও কনটেইনার জট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ৫৩ হাজার টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে) কনটেইনার রাখার জায়গা আছে। তবে ৪০ হাজার টিইইউসের বেশি কনটেইনার ডেলিভারির জন্য বন্দরের ভেতরে অপেক্ষমাণ থাকলে স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে এবং দ্রুত জট পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়।

ঈদের ছুটি শুরুর সপ্তাহখানেক আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির প্রভাব পড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরে। ২৭ মে পর্যন্ত প্রায় ৪৩ হাজার কনটেইনার বন্দরে ডেলিভারির জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। এ ছাড়া জেটিতে ভেড়ার জন্য জাহাজের অবস্থানকাল পাঁচ থেকে সাতদিনে গিয়ে ঠেকেছিল। তবে এনবিআরে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাস ও ডেলিভারি ত্বরান্বিত করে। এতে ঈদুল আজহার আগে বন্দরের ভেতরে কনটেইনারের পরিমাণ ৩৬ হাজার টিইইউসে নেমে আসে। টানা বন্ধের কারণে গত এক সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে কনটেইনারের পরিমাণ আবারও ৪০ হাজার পেরিয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, গত বুধবার পর্যন্ত কনটেইনার ডেলিভারিতে একটু সমস্যা ছিল। তবে আমরা স্মুথলি জাহাজ থেকে খালাস করে গেছি। বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি অনেকটাই ডেভেলপ করেছে। বন্দরের অভ্যন্তরে ৪১ হাজার বা তার কিছু বেশি কনটেইনার আছে। আমাদের স্পেস এখনও পর্যাপ্ত আছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বর্হিনোঙ্গরে মাত্র ১১টি জাহাজ ওয়েটিংয়ে আছে। ছুটি শেষ হওয়ার পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ছুটিতে শ্রমিক সংকটে বন্দর কর্তৃপক্ষের নেওয়া সিদ্ধান্তের সুফল আসেনি। কনটেইনার ডেলিভারি কমে যাওয়ায় জাহাজকে জেটিতে অতিরিক্ত একদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

সূত্রমতে, ছুটি শুরুর দিন গত ৫ জুন বন্দরে কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছিল ৪ হাজার ১২২ টিইইউস। এদিন জাহাজে রফতানি কনটেইনার তোলা হয়েছিল ৯ হাজার ৭২০ টিইইউস আর আমদানি কনটেইনার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছিল ৫ হাজার ৪১১ টিইইউস। কিন্তু ঈদুল আজহার আগের দিন ৬ জুন থেকে পরিস্থিতি পালটাতে থাকে। এদিন মাত্র ৫২১ টিইইউস কনটেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের দিন ৭ জুন বিকেল ৪টা থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হলেও বন্দর থেকে কোনো কনটেইনার ডেলিভারি হয়নি। তবে কনটেইনার জাহাজ থেকে ডেলিভারি হয় ৩০৮ টিইইউস।ঈদের পরদিন ৮ জুনও কোনো কনটেইনার ডেলিভারি হয়নি। ৯ জুন ৪৩১ টিইইউস ডেলিভারি হয়েছে। এরপর গত মঙ্গলবার (১০ জুন) চলতি মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫৭৫ টিইইউস কনটেইনার জাহাজ থেকে খালাস হয়, এর বিপরীতে ডেলিভারি হয় ১ হাজার ৩৮১ টিইইউস। Behind (১১ জুন) ডেলিভারি হয়েছে ১ হাজার ৭৮১ টিইইউস।

ঈদের ছুটিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাসের পরিমাণও কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন আমদানি কনটেইনার নামানো হয় ৫ হাজারের মতো। কিন্তু ৫ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫৪৪ টিইইউস এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩১১ টিইইউস আমদানি কনটেইনার জাহাজ থেকে খালাস হয়েছে।মঙ্গলবার (১০ জুন) পর্যন্ত বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনার ছিল ৩৮ হাজার ৫২ টিইইউস। বুধবার কনটেইনার ছিল ৪০ হাজার ৬৬১ টিইইউস।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক বলেন, কনটেইনার ডেলিভারি কম হচ্ছে। এতে অবশ্য আমরা খালাসে বেশি মনযোগ দিতে পারছি। এটা একটা পজেটিভ ইমপ্যাক্ট। ডেলিভারিও যে একেবারে সর্বনিম্নে নেমেছে এমন নয়। আমরা প্রথম দুই-তিনদিন বাদ দিলে গড়ে ১৩০০ করে কনটেইনার ডেলিভারি করছি। আমাদের ধারণক্ষমতা এখনও ভালো আছে।

তবে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডা’র তথ্য অনুযায়ী, ঈদের টানা ছুটিতে শ্রমিক সংকটের কারণে ৩০ শতাংশ রফতানি কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পৌঁছানো যায়নি। ঈদের দিন এবং পরদিন ডিপো থেকে কোনো কনটেইনার ডেলিভারি হয়নি। এরপর গত চারদিনে সর্বোচ্চ ১৪৭টি ও সর্বনিম্ন ২০টি কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। অথচ স্বাভাবিক সময়ে ডিপো থেকে দুই হাজারের ওপর রফতানি কনটেইনার বন্দরে নিয়ে জাহাজে তোলা হয়।

এ অবস্থায় জাহাজে পণ্য বোঝাই ও খালাসের সময় অতিরিক্ত লাগছে। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার বদলে জেটিতে জাহাজের গড় অবস্থানকাল অতিরিক্ত আরও ২৪ ঘণ্টায় গিয়ে ঠেকেছে। স্বাভাবিক সময়ে বর্হিনোঙ্গরে ২৫-২৬টি জাহাজ জেটিতে ভেড়ার জন্য অপেক্ষমাণ থাকে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সেটা ৫৩টি-তে পৌঁছে।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্দর ও ডিপো থেকে কনটেইনার ডেলিভারি অসম্ভব বেড়ে যাবে। যে চাপ তৈরি হবে, সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় হবে বন্দরের জন্য আসল চ্যালেঞ্জ। তখন ডিপো থেকে বন্দরে কনটেইনার পৌঁছানো নিয়ে আমরা বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হবো বলে আশঙ্কা করছি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ আরো বলেন, বেসরকারি ডিপো থেকে আমরা ভালো রেসপন্স পেতে শুরু করেছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত ।

পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর আয়োজন, কর্মসূচী ব্যতিক্রম ও বৈচিত্র্যময়। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার পরিবাগস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগঠন ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংস্কৃতিক পর্ব—দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে : শিল্পবৃত্ত, পদক্ষেপ বাংলাদেশ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে : কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, শিল্পবৃত্ত, ঢাকা স্বরকল্পন, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। একক আবৃত্তি করেন : মীর বরকত, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন : গোবিন্দলাল সরকার, মো: তাজুল ইসলাম, খাইরুল আলম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা জেবা, উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সবিতা সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর সভাপতি বাদল চৌধুরী। স্বাগব বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মতিয়ারা মুক্তা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বহু ত্যাগ, সংগ্রাম আর প্রত্যাশার ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ শুধু পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত বদল নয়, খোল-নলচে সব পাল্টে নতুন এক আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের নবযাত্রা। এই স্বপ্নের প্রধান এবং একমাত্র উপজীব্য মানুষ। মানুষের কল্যাণ, মানুষের মুক্তি, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের স্বাধীন ভূমিই শেষ কথা। কত মাতা, কত ভগ্নি, কত জানা-অজানা নারী তাঁর সম্ভ্রম হারিয়েছে শুধু এই মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। মানুষ কল্পনাবিলাসী কিন্তু নিজেতো সে কাল্পনিক নয়Ñএ ভূমিতেই তার সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, ভালো-মন্দের স্বাদ নেয়া, অতঃপর ভূমিতেই মিলিয়ে যাওয়া। এ ভূমির প্রতি তার প্রচ- ভালোবাসা।

মাতৃক্রোড়ে যেমনিভাবে শিশু বেড়ে ওঠে; একইভাবে কাদা-মাটি গায়ে মেখে আলো-বাতাসে অবগাহন করে এই ভূমিকেই মাতৃক্রোড় ভেবে একদিন চিরবিদায় নেয় প্রতিটি মানবশিশু। জন্ম আর মৃত্যুতে যে ভূমিকে কখনো আলাদা করা যায় নাÑতারই অমার্যাদা করবে ভিনদেশী তস্কর! তা কি করে মেনে নেয় ধুলো-বালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা এ জনপদের মানুষেরা। এ ভূমিরই সাহসী-ত্যাগী- পোড়খাওয়া এক নামÑশেখ মুজিব। মাটি আর মানুষের সাথে ছিলো যাঁর আজন্ম সখ্য, ভিনদেশী হায়েনার হিংস্র থাবায় বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর হৃদপি-; তবুও ভূমি আর মানুষের স্বাধীনতায় অবিচল থেকেছেন তিনি।

তাঁরই অঙ্গুলী হেলনে সাড়ে সাত কোটি মানুষ পরিণত হয়েছে এক একজন নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, তিতুমীর, বাঘাযতিন, লক্ষ্মীবাই, ভগৎসিং, রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, সালাউদ্দিন, বরকত, আসাদ, মনুমিয়া’য়। এ গাঙ্গেয় বদ্বীপের তেরোশত নদীর জোয়ার আর পাখিদের কলতানে উচ্চারিত হয়েছে ভিনদেশী হায়েনার বিনাশ- ধ্বনি। লাঙলের ফলা থেকে তৈরি উর্বর মাটির প্রতিটি চাকা পরিণত হয়েছে শত্রুবিনাশী আনবিক বোমায়। বাঁশঝাড় উজাড় করে তৈরি হয়েছে চকচকে বেয়নেট।

নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অগ্নিপুরুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিটি রক্ত কণিকায়Ñবিজয় অর্জিত হয়েছে মানুষের সংগ্রাম আর আত্মদানের। বিজয় মাসের সূচনালগ্নে আমরা নতুন করে উদ্দীপ্ত হতে চাইÑমাটি আর মানুষের কল্যাণ কামনায়। আমরা বিনাশ চাই সেই নরপশুদের যারা মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভিনদেশী হায়েনাদের সঙ্গী হয়েছিলো মনুষত্বের বিনাশ সাধনে। সেই সাথে চাই আজকের এই দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’-এর সরকারি স্বীকৃতি। মাটি আর মানুষের জয় হোক, জয় হোক শুভ চিন্তা আর আদর্শের।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা পরিবারের দানে গড়ে উঠছে এতিম শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন কেন্দ্র 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিবারের দান করা জমিতে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ও নারীর স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য গড়ে উঠছে মির্জা রুহুল আমিন এন্ড ফাতেমা মেমোরিয়াল কমপ্লেক্স। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আদর্শ কলোনিতে কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। 

 আর কমপ্লেক্সটি বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শত শত এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার পাওয়ার ঠিকানা হিসেবে পরিণত হবে। যেখানে এতিম শিশুরা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলো বিনামূল্যে নিশ্চিৎ হবে। নারীদের স্কিল ডেভলপমেন্টে কাজ করবে। 

গত এক বছর যাবৎ এ কমপ্লেক্সটির কাজ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চার ভাগের তিন ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক এতিম শিশুকে নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন  কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা  বাসমাহ অরফানস হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ আহম্মেদ আমিন।

তিনি আরও জানান, এই কমপ্লেক্সে বাসমাহ অরফানস হোম, বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার এবং বাসমাহ ওমেন্স এন্ড স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। এক কক্ষে চলছিলো একটি দোয়ার আয়োজন। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দেশের মঙ্গল কামনায় মির্জা পরিবারের উদ্যোগে এতিম শিশুদের নিয়ে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার  ও নারীদের ডেভলপমেন্টের জন্য এমন একটি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের পেছনের ব্যপারে জানতে চাইলে অরফান হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ বলেন, আমাদের বাসমাহ ঠাকুরগাঁও সহ সারা দেশে পাঁচটি শাখা আছে। নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁর একটি শাখাতে মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগণ পরিদর্শন করেন।  আমাদের কার্যক্রেম তাদের ভালো লাগে এবং এতিম শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তবায়নের জন্য তারা উৎসাহ প্রকাশ করেন এবং ৭৫ শতক জমি এতিমদের জন্য দান করেন৷ এই কর্মকর্তা বলেন বাসমাহ’র  সমস্ত পক্রিয়া মেনেই এটি গড়ে উঠছে।

বাসমাহর সিইও মীর সাখাওয়াত হোসাইন এর বরাতে প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ইনচার্জ আরও বলেন  বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্ববধানে সারা দেশ জুড়ে সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার,বাসমাহ ওরফান্স হোম,বাসমাহ উইমমেন্স স্কিল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।এ ছাড়াও শীতকালীন শীত বস্ত্র বিতরণ,কুরবানি প্রোগ্রাম,ইফতার প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ