আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহে সংকট, পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই সরবরাহ বন্ধ থাকায় মানুষ ক্ষুব্ধ।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বন্দর নগরী চট্টগ্রাম জুড়ে গ্যাস সরবরাহে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় গত দুই দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ আছে। শিল্প-কারখানাগুলোও গ্যাস পাচ্ছে না।বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় চট্টগ্রামের নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গ্যাস না থাকায় রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। এতে অনেকেই সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের জন্য বাধ্য হয়ে চায়ের দোকান ও হোটেলে ভিড় করছেন।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৌসুমী বায়ুর সক্রিয় থাকায় এখন বঙ্গোপসাগর উত্তাল অবস্থায় আছে। সাগরের ঢেউয়ের কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল থেকে সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। গৃহস্থালির পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, শিল্প কারখানা, সিএনজি স্টেশন, হোটেল-রেস্টুরেন্টেও গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
জানা গেছে, গত বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। দুপুর থেকে নগরীর শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

তখন আবাসিক এলাকায় গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে নগরীর কিছু এলাকায় বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় আর কিছু এলাকায় চাপ কমে যায়। রাত ১২টার পর সীমিত আকারে সরবরাহ শুরু হলেও ভোর হওয়ার আগেই আবার বন্ধ হয়ে গেছে।আকস্মিক গ্যাস সংকটের কারণে গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক- উভয় খাতের গ্রাহকেরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন।

নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ের বাসিন্দা সিতারা আহমেদ বলেন, গতকাল (বুধবার) সকাল থেকে গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। প্রেসার একেবারে কম। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছিল না। সকালেও দেখি গ্যাস নেই।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, গতকাল দুপুর থেকে গ্যাসের চাপ নেই। আজকেও (বৃহস্পতিবার) একই অবস্থা। প্রোডাকশনে খুব প্রভাব পড়ছে।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিউল আজম খান বলেন, সাগর উত্তাল থাকায় মহেশখালীতে এলএনজিবাহী জাহাজ থেকে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে আমরা প্রতিদিন ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট পেতাম, সেটা এখন ১৬০-১৭০ এ নেমে এসেছে। এজন্য সমস্যা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরের কাট্টলী, খুলশী, আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুরসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ওই এলাকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বাসিন্দারা জানান, সকাল ৭টার পর থেকে গ্যাসের চাপ এতটাই কমে যায় যে চুলা জ্বালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে প্রায় সম্পূর্ণ গ্যাস বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো হোটেল থেকে খাবার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা।

চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী ফাতেমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি গ্যাস নেই। বাচ্চাদের স্কুলে টিফিন দিতে পারছি না, দুপুরেও রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছি। কোনো কথাবার্তা ছাড়া মনমর্জিতে গ্যাস বন্ধ করাতো কোনো দেশের নিয়ম না।

উত্তর কাট্টলী এলাকার বাসিন্দা মো. রহমান বলেন, গ্যাসের না থাকায় সকালে নাস্তা বানাতে পারেনি। নিরুপায় হয়ে বাইরে থেকে রুটি-ভাজি কিনতে হয়েছে। কেন বন্ধ, কখন আসবে কিছুই জানি না। দুপুরে যদি ভাত কিনতে হয়, বাড়তি ৭শ’ থেকে এক হাজার টাকার ধাক্কা।

কেজিডিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন চট্টগ্রামে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে ১৯০-২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ফলে প্রায় একশ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আবহাওয়ার উন্নতি স্বাপেক্ষে দুপুর ১টার মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ছাড়া বিকল্প কোনো উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের সুযোগ নেই।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ