চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো মহানগরের বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যাশায়ী আছেন শিক্ষার্থীরা। সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, সংঘর্ষে আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১১ শিক্ষার্থী। এছাড়া বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন ইমতিয়াজ সায়েম (২৪) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৩)। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের হাড় ভেঙেছে, কারো মাথায় গুরুতর আঘাত আছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত আছে আর আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছি।অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বহনে সহায়তা করা হবে এবং যারা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন তাদের জন্য বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ১১৪ জন, আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ৩০ জন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। এরমধ্যে একজন নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিভিডি) স্থানান্তর করা হয়েছে।এছাড়া হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৭ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র এবং একজন গ্রামবাসী।
এর আগে গত ৩০ আগস্ট রাত সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় এক ছাত্রীকে বাড়ির দারোয়ান 'মারধর' করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে স্থানীয়রা মাইকে ডেকে লোক জড়ো করে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। রাতভর সংঘর্ষের জেরে শিক্ষার্থীরা রবিবার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে প্রধান ফটক বন্ধ করে জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল ১০টার দিকে প্রশাসন স্থানীয়দের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষ মুখোমুখি হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা লাঠি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে রবিবার (৩১ আগস্ট) অফিস আদেশের মাধ্যমে দুপুর ২টা থেকে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এরপর বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নিলে সংঘর্ষ থামে। তবে দফায় দফায় সংঘর্ষে উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।