নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। চীনা নাগরিকসহ একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হউয়া দুই আসামিকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।
বাদী রুবেল (৪৫), সাং কমলপুর, কেন্দুয়া পৌরসভা থানায় অভিযোগ করেন—তার মেয়ে ও দুই বান্ধবীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের চেষ্টা চালাচ্ছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এ ঘটনায় ১৫ সেপ্টেম্বর মামলা রুজু হয়। মামলায় স্থানীয় ফরিদুল ইসলাম (৩৫) ও চীনা নাগরিক Li Weihao (৩২) সহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
ওইদিনই কেন্দুয়া থানা পুলিশ ফরিদুল ইসলাম ও Li Weihao-কে আটক করে। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ২১ সেপ্টেম্বর তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ রিমান্ডে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, পুরো চক্রের মাস্টারমাইন্ড দুজন। একজন চীনা নাগরিক নারী ইলা (Ella), যিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার উত্তরা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করছেন। অপরজন তার দোভাষী সাগর, যিনি গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকার বাসিন্দা।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আরও জানায়, গত তিন-চার মাস আগে একই কৌশলে গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকার গার্মেন্টস কর্মী লিমা ও সুমাইয়াকে চীনে পাঠানো হয়েছে। তাদেরও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করা হয়।
মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার এসআই রেজাউল করিম বলেন, এজাহারে উল্লিখিত ছয় আসামির মধ্যে দুজন বর্তমানে চীনে অবস্থান করছে। আমরা ইলা ও সাগরের সন্ধান করছি। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে মামলার তদন্তে আরও অগ্রগতি হবে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ এর আওতায় মামলাটি তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।