আজঃ সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৬ লাখ ৩২ হাজার শিশু

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে আগামী ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কর্মদিবস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র সমূহে এবং ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কর্মদিবস স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র সমূহে অনুষ্ঠিত হবে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন (টিসিভি)-২০২৫’। এ সময়ে জেলার ১৫ উপজেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী/প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিনামূল্যে এক ডোজ টিসিভি টিকা প্রদান করা হবে। এই টিকা পেতে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য (১৭ ডিজিট) দিয়ে ওয়েব সাইটে নিবন্ধন করতে হবে। তবে এ বয়সী কেউ কোন কারণে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে তাকেও টিসিভি টিকা দেয়া হবে। আগামী ১২ অক্টোবর রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় পটিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন (টিসিভি)’-এর শুভ উদ্বোধন করা হবে। চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে এবার স্কুল ও মাদ্রাসাসহ মোট ৬ হাজার ৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটি পর্যায়ে সর্বমোট ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৪১ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৭১ জন ও কমিউনিটিতে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭০ জন। এছাড়া ক্যাম্পেইনে ভ্রাম্যমান হিসেবে মপ-আপ টিম নিয়োজিত থাকবে। টাইফয়েড টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সর্বত্র প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যে কোন ধরণের গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। এ টিকা নিতে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮১ জন শিশু অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে, যাহার হার ৬১ শতাংশ এবং রাউজানে ৭৬ শতাংশ। শুক্রবার ও সরকারী ছািট ব্যতীত নির্ধারিত তারিখে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সময়ে ১ ডোজ করে টাইফয়েড ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে প্রেস কনফারেন্স সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুল আনোয়ার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহিদুল ইসলাম ও কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস কনফারেন্সে সিভিল সার্জন জানান, জেলার ১৫ উপজেলার ২’শ ইউনিয়নের ৬’শ ওয়ার্ডে ১ হাজার ২১৫ জন প্রশিক্ষিত ১ হাজার ৮’শ ভলান্টিয়ার, ৬’শ প্রথম সারির পরিদর্শক ও ৬০ জন দ্বিতীয় সারির পরিদর্শক টিকাদান ক্যাম্পেইনে নিয়োজিত থাকবে চট্টগ্রাম জেলায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৯ম শ্রেণির সকল ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্হিভূত কমিউনিটির ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে এ টিকা প্রদান নিশ্চিত করতে সর্বত্র প্রচার-প্রচারণাসহ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই ক্যাম্পেইনের গুরুত্ব সম্পর্কে পরিবার ও প্রতিবেশীদের জানাতে হবে। মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের নেতা, মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে টিকার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। টাইফয়েড টিকা অত্যন্ত নিরাপদ। এ টিকা গ্রহণের পর অন্যান্য টিকার ন্যায় সামান্য প্রতিক্রিয়া অর্থ্যাৎ টিকাদানের স্থানে লালচে হওয়া, সামান্য ব্যথা, মৃদু জ্বর, ক্লান্তিভাব ইত্যাদি হতে পারে, যা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তাই কোন ধরণের গুজবে কান না দিয়ে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুকে নির্দিষ্ট দিনে টাইফয়েড টিকা নিতে টিকাদান কেন্দ্র সমূহে আসতে উদ্বুদ্ধ করার আহবান জানান তিনি।

কনফারেন্সে জানানো হয়, টাইফয়েড জ্বর একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে। আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাসকারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বের উন্নত দেশ সমূহে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কম হলেও বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে সরকারের ইপিআই কর্মসূচীর আওতায় দেশব্যাপী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন (টিসিভি)-২০২৫’।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে আমনের বাম্পার ফলন

চট্টগ্রামে বোয়ালখালী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে সবুজে বিস্তৃত হয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। যা দেখলে যেমন মন জুড়ে যায় তেমনটায় আশা করছেন বাম্পার ফলনের জন্য প্রান্তিক চাষীরা। বাংলাদেশে কৃষি প্রধান দেশ, ধান আমাদের প্রধান খাদ্য । এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তিস্বরূপ। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪০.৬০ শতাংশ কৃষি খাতে নিয়োজিত। তাছাড়া রপ্তানি আয়েও কৃষি খাতের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তাই এদেশের অর্থনীতি অনেকাংশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বোয়ালখালীতে আমন মৌসুমের ধান উৎপাদনে বন্যা, মধ্যম খরা প্রবণ, আকস্মিক বন্যা প্রবণ, তীব্র ঠান্ডা এসব দিক লক্ষ্য করে তিনটি পর্যায়ে ধান চাষ হয়, যেমন মাঝারি উঁচু, মাঝারি নিচু ও নিচু মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালি ধান আমন। ক্ষেতজুড়ে এখন দুলছে সোনালি ধানের শীষ। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।
ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’ কথাটির স্বার্থকতা দেখা গেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে। উপজেলার সারোয়াতলী, আমুচিয়া, করলডেঙ্গা ও জৈষ্টপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জুড়ে আমন ধানের মনকাড়া সোনালী রঙের অপরূপ সৌন্দর্য্য নজর কাড়ছে যে কারোই। বাতাসে ছড়াচ্ছে আমনের মৌ মৌ গন্ধ। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা খুশি।

এবার বোয়ালখালীতে আগাম জাতের ব্রি ধান ৪৭-৪৯, ৯৩, ৯৬, সাদা পাই জাম ও কাটারী ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। আগাম জাতের ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে , প্রতি ৪০ শতকে এবার আমন ধান চাষে খরচ পড়েছে প্রায় ১৪- ১৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হওয়ায় খরচ পুষিয়ে লাভের আশা করছেন তারা।

কৃষকরা ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন। অনেক কৃষক আবার বেশি ধান পাওয়ার আশায় জমিতে সার প্রয়োগ করছেন। কেউ আবার ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে কখন নতুন ধান ঘরে তুলবেন এ স্বপ্নে বিভোর কৃষকরা। ফসল ঘরে তোলার আশায় প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে মুখে সোনালি স্বপ্নের ছাপ। ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকরা বেশ খুশি। কদিন পরেই মনের আনন্দে সোনালি ধান ঘরে তুলবেন কৃষক-কৃষাণীরা ।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, বোয়ালখালীতে এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ সারসহ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ফলন দেখে কৃষকদের মনে বিরাজ করছে যেন উৎসব।

উপজেলার সারোয়াতলী ইমামুল্লার চর গ্রামের রাখাল দাশ এবার ৪ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। তিনি বলেন, বোরো ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আর সে কারণেই আমন ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আমনের বাম্পার ফলন আশা করছেন তিনি।

আহল্লা প্রকাশ ধলঘাটে কৃষক জামাল ২০ একর আমন চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ব্রি-ধান ৯৩, ৯৬, ৪৯ ও আগাম জাতের ১০৩ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাটা শুরু হবে। পোপাদিয়ার কৃষক মোহাম্মদ রফিক বলেন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বছরে ধান তুলতে পাবর।

বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, চলতি মৌসুমে ধান চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ধানের রোগবালাইও কম। এখন পর্যন্ত ফসলের মাঠ ভালো রয়েছে। উপজেলার কোন কোন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে। আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে কৃষকরা পুরোদমে ধান কাটতে পারবেন। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে এবার উপজেলার কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছি। এছাড়া আগাম জাতের আমন ধান কাটার পর ওইসব জমিতে অনেকে শীতকালীন শাকসবজি ও ডাল জাতীয় ফসল আবাদে জমিও প্রস্তুত করছেন বলে জানান তিনি।

বাচা চেয়ারম্যান নিখোঁজের ১৫ বছর সন্ধান মিলেনি আজও।

বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাচা নিখোঁজ হয় ৮ ই নভেম্বর ২০১০ সালে আইন শৃঙ্খলা বাহীনীর পরিচয়ে গুম করা হয় গাজীপুর চৌরাস্তার মোড় থেকে এই বলে অভিযোগ পরিবার এর, আজ ১৫ বছরেও মিলেনি বাচার খোজ। সেই বাচার গুম হওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিবারের ন্যায় আজ ৮ ই নভেম্বর শনিবার বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি, পৌরসভা বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৮ নভেম্বর উপজেলার একটা কমিউনিটি সেন্টারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও দোয়া মাহফিলে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ।প্রধান অতিথি আবু সুফিয়ান,সাবেক আহ্বায়ক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা। প্রধান বক্তা হাজী ইসহাক চৌধুরী, সাবেক আহ্বায়ক বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি, বিশেষ অতিথি হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, গিয়াস উদ্দিন সাবেক সাধারণ সম্পাদক চান্দগাঁও থানা বিএনপি, আনোয়ার হোসেন লিপু সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দক্ষিণ জেলা বিএনপি, বাহাউদ্দীন ফারুক মুন্না বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জাসাস,শাহ আলম যুগ্ম আহ্বায়ক উপজেলা বিএনপি,

হাজী সেলিম চৌধুরী সাবেক আহ্বায়ক পোপাদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির, সোলাইমান মেম্বার সাবেক সভাপতি আহল্লা করলডেঙ্গার ইউনিয়ন বিএনপির, আবু ছিদ্দিক সাবেক সভাপতি আমুচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির, আবুল বশর চৌধুরী সাবেক সাধারণ সম্পাদক করলডেঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির, ইউচুপ সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমুচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির, সাজ্জাদ হোসেন সাদ্দাম সদস্য সচিব বোয়ালখালী উপজেলা কৃষক দল। বক্তারা বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানান অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে গুম হওয়া বাঁচা চেয়ারম্যানের সন্ধান দিতে।প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্বে করেন বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক ইঞ্জিনয়ার ইকবাল হোসেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ