আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

সালাউদ্দীন আলীকে গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটির ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

হসপিটালিটি ও হেলথ কেয়ার শিল্পে উদ্ভাবনী ধারণা, আধুনিক ব্যবস্থাপনা, সেবায় মানবিকতা সংযোজন এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতকরণে অনন্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশি প্রখ্যাত উদ্যোক্তা সালাউদ্দীন আলীকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত নয় – বরং বাংলাদেশের জন্যও এক গৌরবের প্রতীক হিসেবে মূল্যায়িত হচ্ছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর ২০২৫) শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বিএমআইসিএইচ (BMICH) হলে আয়োজিত এক বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সালাউদ্দীন আলীর হাতে ডক্টরেট ডিগ্রির সম্মাননা তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আমন্ত্রিত অতিথি, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন—
শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মৈত্রীপালা সিরিসেনা, শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার চামিন্দা ভাস, ভারতীয় হলিউড অভিনেতা আলী, ড. এমার জিত সিং, মি. জাকির হোসেন, আজোরা শর্মাএবং পাকিস্তান হাইকমিশন বাংলাদেশ কালচারাল উইং-এর সদস্য মাসুম বিল্লাল ফারদিন প্রমুখ।

ব্যবসায়িক দক্ষতা, গ্রাহককেন্দ্রিক পরিষেবা, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রশংসনীয় সংমিশ্রণের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে এই দু’টি খাতে কাজ করে চলেছেন সালাউদ্দীন আলী।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের মূল্যায়নে বলেন—“হেলথ কেয়ার ও হসপিটালিটির মতো মানবসেবাধর্মী শিল্পে আন্তর্জাতিক মান প্রতিষ্ঠা করে এবং মানুষের কল্যাণকে লক্ষ্য রেখে ব্যবসা পরিচালনার উদাহরণ তৈরি করেছেন সালাউদ্দীন আলী। তিনি ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি রোল মডেল।

সম্মাননা গ্রহণের পর আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় সালাউদ্দীন আলী বলেন— “আমি গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটির কাছে কৃতজ্ঞ। এই স্বীকৃতি আমার দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দিল। আমি বিশ্বাস করি ব্যবসা শুধু মুনাফার বিষয় নয়—মানুষের সেবা, শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠাই ব্যবসার প্রকৃত লক্ষ্য। দেশের বাইরে এমন মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম বড় অর্জন, যা আমাকে ভবিষ্যতে আরও বড় দায়িত্বে অনুপ্রাণিত করবে।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা মত দেন, সালাউদ্দীন আলীর নেতৃত্ব দেখিয়েছে যে ব্যবসা ও মানবিকতা পাশাপাশি এগোলে দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও সামাজিক স্বাস্থ্যব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন সম্ভব।

গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটির এই আন্তর্জাতিক সম্মাননার মাধ্যমে বাংলাদেশের হসপিটালিটি ও স্বাস্থ্যসেবা শিল্প বৈশ্বিক মঞ্চে নতুনভাবে চিহ্নিত হলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অর্জন ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ, গবেষণা ও সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলে দিতে সহায়তা করবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় সার কালোবাজারে বিক্রি: ডিলারকে জরিমানা, ১৫ বস্তা সার জব্দ।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারি সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে বিসিআইসি ডিলার সেলিম হোসেন কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার দিয়ার পাড়া গ্রামে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি বরাদ্দের সার গোপনে চাটমোহরে পাচারের চেষ্টা করছিলেন ওই ডিলার। ভ্যানযোগে সার পরিবহনের সময় স্থানীয় জনতা বিষয়টি টের পেয়ে গাড়ি আট কে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার সহ গাড়িটি আটক করে।

অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন,“সার (ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০০৬-এর ১২(৩) ধারা অনুযায়ী ডিলার কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ কৃত ৬ বস্তা ডিএপি, ৭ বস্তা ইউরিয়া ও ২ বস্তা পটাশ সার কৃষি অফিসের হেফাজতে রাখা হয়েছে।”

অভিযানের সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার সেলিম হোসেন নিয়মিতই সরকারি সার চাহিদার তুলনায় কম দেন এবং বিক্রয় করেন।

উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, যখন কৃষকরা সার সংকটে ভুগছেন, তখনই কিছু অসাধু ডিলার মুনাফার আশায় সার পাচার করছে। এর আগেও অভিযোগ করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান বলেন, “মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এখানে আমার কোনো গাফিলতি নেই। সরকারি সার সরবরাহ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটর করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিলারদের কার্যক্রম তদারকির জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া আছে। কোথাও অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনাটিও তদন্ত করা হবে। যদি যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সার কালোবাজারে বিক্রি করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বোয়ালখালীতে মাদক সেবনের দায়ে ৩ যুবকের কারাদণ্ড।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় মাদক সেবনের অপরাধে ৩ যুবককে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।একই সাথে প্রত্যেককে ৫শ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বোয়ালখালী পৌর সভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকার এ অভিযান পরিচালনা করে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন বোয়ালখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-বোয়ালখালী পৌর সদরের আবুল কালামের পুত্র মোহাম্মদ ওসামা বিন হোসাইন জিয়া (২২), বোয়ালখালী পৌর সদরের আবু সাঈদের পুত্র নাজমুল হাসান (১৯) এবং বোয়ালখালী পৌর সভার পশ্চিম গোমদণ্ডী এলাকার মৃত নুরুন্নবীর পুত্র মোহাম্মদ নায়েম উদ্দিন (২৫)।

বোয়ালখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কানিজ ফাতেমা বলেন, মাদকদ্রব্য সেবন করে নেশাগ্রস্হ অবস্থায় জনসাধারণের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপরাধে তাদের আটক করা হয়। এরপর অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করেন ও ভবিষ্যতে মাদক সেবন করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করেন। দোষীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৯(১)এর গ ধারায় ২ জনকে ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ জনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫শ’ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয় ‘ঘ’ সার্কেলের উপপরিদৰ্শক একে এম আজাদ উদ্দিন বলেন, বোয়ালখালী পৌর সভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকার থেকে ইয়াবা সেবন অবস্থায় তাদের আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাজ থেকে মাদকদ্রব্য সেবনের কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। তিন জনকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ