
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘সত্যের দীপ্ত সাহসে, চবিসাস তিন দশকে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় চাকসু ভবন থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক পর্ব শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ করে মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যবৃন্দ, চাকসুর প্রতিনিধি, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও ক্লাবের নেতৃবৃন্দ এবং চবিসাসের সদস্যরা। এরপর বেলা ১০টায় মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে চবিসাসের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ শুভ্রের সঞ্চালনায় ও চবিসাস সভাপতি জানে আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।এতে ‘গণমুখী সাংবাদিকতার প্রত্যাশা: রাষ্ট্র, সমাজ ও সাংবাদিকের দায়-দায়িত্ব’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম।
উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সুন্দরভাবে বিরাজ করছে। সাংবাদিকরা যেন বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে কাজ করেন। চবিসাসের সাংবাদিকরা জাতীয় পর্যায়েও ভালোভাবে কাজ করছে। চবিসাস একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের মতো; এখান থেকে বেরিয়ে অনেক সাংবাদিক ভালোভাবে কাজ করছে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রকে সঠিক পথে রাখার জন্য সাংবাদিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিগত সময়ে দেশকে ধ্বংস করার জন্য কিছু ফ্যাসিবাদী সাংবাদিকও জড়িত ছিল। প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে; সত্য অনুসন্ধান করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।
অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চবিসাসের ভূমিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্ন্যান্সে অনন্য। চবিসাসের সদস্যরা বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে পরিবর্তনের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করছে। প্রশাসন ও সাংবাদিকের বক্তব্য যখন মিলে যায়, তখন সেটিকে সাংবাদিকতা বলা যায় না। সাংবাদিকদের শুধু নেতিবাচক নয়, ইতিবাচক খবরও করতে হবে।
চাকসুর ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সাংবাদিকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠন ও ক্লাবকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পেশাদারিত্ব রক্ষা করতে হবে। বিগত সময়ে চবিসাস যেভাবে শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়েছে, আগামীতেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে।
চবিসাস সভাপতি জানে আলম বলেন, বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে চবিসাস আজ তিন দশকে পদার্পণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর গৌরবময় শুভেচ্ছা।
বিভিন্ন সমস্যা ও অসংগতির তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করবেন। চবিসাস সদস্যদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, চবিসাসের সাবেক সভাপতি ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহাব উদ্দিন নিপু, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, ছাত্র উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন এবং অতীশ দীপঙ্কর হলের প্রভোস্ট এজিএম নিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চাকসু ও হল সংসদের নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।