
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যার ক্ষতি পুসিয়ে নিতে বিস্তীর্ণ চরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। তবে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলে লোকসানের মুখে পড়বেন এমন শঙ্কাও রয়েছে কৃষকদের।
দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পদ্মার বিস্তীর্ণ চরে কয়েক সপ্তাহ আগেও বন্যার পানিতে টলমল ছিল। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই কৃষকরা ক্ষতি পুসিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে।
চলতি মৌসুমে দৌলতপুরে ৩ হাজার ২৪১ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এখন পেঁয়াজ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিঘাপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ মন ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত এলাকার কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, গত বছর ৯ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ ও রসুনের চাষ করেছিলাম, তাতে ৪ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। পেঁয়াজ উত্তলোনের সময় দাম ভালো ছিলো হঠাৎ সরকার বাহির থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় লোকশান হয়। এবছর ১৯ বিঘা পদ্মার চরের জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি, তাতে বিঘা প্রতি ৫০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে। বর্তমানে পেয়াজের বাজারদর ভালো তাই লাভ হবে বলে মনে করছেন তিনি।
একই এলাকার অপর কৃষক মো. নান্টু আলী বলেন, এ বছর ৮ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার বীজের দাম কিছুটা কম হলেও সার ও কীটনাশকের দাম দ্বিগুন। ফলনও প্রতিবিঘা জমিতে ৮০ থেকে ৯০ মন পেঁয়াজ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বেড়েছে। পেঁয়াজের বর্তমান বাজার মূল্য থাকলে এবং বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা না হলে লাভ হবে উৎপদন খরচের কয়েকগুন এমনটি আশা করছেন চরপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল আহমেদ।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভীন জানান, চলতি রবি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের প্রণোদনা প্রদান ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে ৩ হাজার ২৪১ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। আর ক’দিন পরেই কৃষকরা মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল ঘরে তুলবে। এ বছর পেঁয়াজের ফলন হবে এবং লাভবান হবেন কৃষকরা।
ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি করা না হলে লাভবান হবেন কৃষকরা। কৃষকরা লাভবান হলে আগামীতে আরো বাড়বে মুড়িকাটা পেয়াজের চাষ। ফলে সমৃদ্ধ হবে কৃষি।