আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

নৌকার পক্ষে না থাকায় ঈগল প্রতীকের কর্মীকে কু*পিয়ে হ*ত্যা: স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম।

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে হ*ত্যার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। শনিবার সন্ধ্যায় কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে হ*ত্যার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। শনিবার সন্ধ্যায় কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো
নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে না থাকায় এবং ঈগল প্রতীকের পক্ষে মিছিলে অংশ নেওয়ায় এসকেন্দার খাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার-সদর একাংশ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। শনিবার সন্ধ্যায় কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তাহমিনা বেগম কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। লিখিত বক্তব্যে তাহমিনা বেগম বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং আমার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হু*মকি, হা*মলা ও স*ন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের এজেন্ট লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার কর্মী এসকেন্দার খাঁকে কু*পিয়ে হ*ত্যা করেছেন।’

তাহমিনা বেগম বলেন, ‘আমার নির্বাচন করায় আমার কর্মীকে খুন করা হলো। আমি শোকাহত ওই পরিবারকে কী জবাব দেব? নির্বাচনে কেন এই সহিংসতা হবে? এই দায় নৌকার প্রার্থী এড়াতে পারেন না। তাঁর কারণেই এসকেন্দার খুন হলো। এর কঠিন বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি বলেন ‘এসকেন্দার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। আমার নির্বাচন করে। আমার মিটিং-মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। আর পুলিশ বলছে, “জমিজমা বিরোধে তাকে তার বংশের লোকজন হ*ত্যা করেছে।” নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সাফাই গাইতে পুলিশ এমন কথা বলে দায় এড়াচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমালোচনা করে তাহমিনা বেগম আরও বলেন, নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা প্রথম থেকেই সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ভোটারদের মধ্যে ভীতসন্ত্রস্ত পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করে যাচ্ছেন। নৌকার মিছিল থেকে ঘোষণা করা হয়, যদি কেউ নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন, তাহলে তাঁদের ওপর হামলা করা হবে এবং এলাকায় থাকতে পারবেন না। দুই হাজার লগি-বইঠা তৈরি করা হয়েছে, নৌকার বিরোধীদের এলাকা ছাড়া করার জন্য। তাঁদের এ ধরনের বক্তব্যে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

পুলিশকে নৌকার কর্মী উল্লেখ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, ‘গত তিন দিনে আমাদের মিছিলে বোমা হামলা, নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। পুলিশ নিরপরাধ দুজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তাদের দায় এড়িয়ে গেছে। মূল আসামিরা চিহ্নিত হলেও পুলিশ তাদের ধরছে না। আমরা কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। ওসি নৌকার হয়ে কাজ করছেন।’

তাহমিনা বেগম বলেন, ‘গোলাপ সাধারণ ভোটারদের কাছে ঘোষণা দিচ্ছেন, এক ভোট পেলেও আমরা ঘোষণা দিয়ে এমপি হব এবং বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোট পিটিয়ে নেওয়া হবে, যা মাদারীপুর-৩ আসনের ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমি মাদারীপুর-৩ আসনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের এসব অভিযোগের বিষয়ে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘এসকেন্দার খাঁ হত্যার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে শুনেছি, চাচা-ভাতিজাদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে এক ব্যক্তিকে কোপানো হয়েছে। সেই দায় আমার ওপরে চাপানো হচ্ছে। আমার প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থী যে অভিযোগ দিচ্ছেন, তা সত্য নয়। ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে তিনি (তাহমিনা) নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটতে বের হন এসকেন্দারসহ বেশ কয়েকজন। এ সময় নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের কর্মী ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ব্যাপারীর সমর্থকেরা তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তাঁরা এসকেন্দারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করেন। পায়ের রগও কাটা হয়। বাধা দিলে আরেকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান হামলাকারীরা। আহত দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের পাঠানো হয় বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে এসকেন্দার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা*রা যান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

নির্বাচনী প্রচারণাকালে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান নির্বাচনী প্রচারণাকালে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। দুপুরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী জানিয়েছেন,নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়। এর আগে, গত নভেম্বর মাসে দেশি-বিদেশি ৩০টি নম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন হাদি। ১৪ নভেম্বর ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, তাকে হত্যা, তার বাড়িতে আগুনসহ তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ওসমান হাদি ইতিমধ্যে তার ভেড়িফাইড ফেইস বুকে লিখেছিলেন, গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টা বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে। যার সামারি হলো- আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে। আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।

আজ শুক্রবার ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী জানিয়েছেন-নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ