আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ঢাকায় পার্বত্য মেলার শেষ মুর্হুতে পাহাড়ি পণ্য কিনতে ক্রেতাদের ভিড়।

ঢাকা অফিস:

অর্থনীতি ও পুঁজি বাজার:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রাজধানী ঢাকায় চলছে চারদিনের পার্বত্য মেলা। পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবন-কৃষ্টি, সংস্কৃতি, পোশাক-পরিচ্ছদ, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ক তথ্যাদি সমতলের মানুষের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী প্রচার ও বিপণনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়।

বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রেএ বছর পার্বত্য মেলায় অংশ নিয়েছে ৯৭টি পাহাড়ি স্টল। পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য, খাবার, হস্তশিল্প ও ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য পাওয়া যাচ্ছে একই ছাদের নিচে।আর পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিতে শেষ মুর্হুতে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর চার দিনের এই পার্বত্য মেলা শেষ হচ্ছে আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী। মেলা চলছে সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্বত্য মেলায় সারিসারি স্টলে সাজানো পাহাড়ি নানা ধরনের পোশাক, খাবার ও পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা ফলমূল। এছাড়াও রয়েছে পাহাড়ের নানান পণ্যসামগ্রী। যা দেখে মুহূর্তেই মনে এ যেন রাজধানীর বুকে জন্ম নেওয়া এক টুকরো পাহাড়। তবে পার্বত্য মেলা হলেও পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনগণের পাশাপাশি দেখা যায় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি।
বাঁশের ভেতর কলাপাতায় মুড়িয়ে তৈরি হয় চিকেন ব্যাম্বু। পাহাড়ি নানা ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে এবারই প্রথম মেলায় এসেছেন খাগড়াছড়ির কং মারমা। পার্বত্য এলাকার খাবারের স্বাদ নগরবাসীদের কাছে তুলে ধরতে মেলায় অংশ নিয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আমরা নিজস্ব সংস্কৃতি ও খাবারগুলো সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারবো। বিভিন্ন ধরনের পিঠা আছে। সবগুলোই পাহাড়ি বিন্নি চালের গুড়া দিয়ে তৈরি করা।
সবচেয়ে বেশি ভিড় চোখে পড়ে পাহাড়ি ফলের স্টলগুলোতে। পাহাড়ি পেঁপে, কলা, আনারস, তেঁতুল থেকে শুরু করে ৫৬ ধরণের কৃষিপণ্য নিয়ে এবার মেলায় অংশ নিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। অর্গানিক আর ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে চাহিদা বেশি এসব পাহাড়ি ফল ও মসলার।
পার্বত্য মেলায় ঘুরতে আসা কয়েকজন বাঙালি জনগোষ্ঠীরা জানান, মূলত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের জীবন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পার্বত্য মেলায় আসা। এছাড়া পাহাড় থেকে সংগ্রহ করা বিশুদ্ধ ফলমূল যা ঢাকায় পাওয়া যায় না সেসব কেনার জন্যই এখানে এসেছি।
ক্রেতারা বলেন, এখানের ফলগুলো খুব মিষ্টি এবং ফরমালিনমুক্ত থাকে। এই ফলগুলোতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি। যে কারণে আসা হয়। ত্রেতারা আরো জানান, পাহাড়ের বিখ্যাত খাবার বাঁশ কোড়ল যা পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালি জনগোষ্ঠীর খুবই পছন্দ। তাই পাহাড়ের জনপ্রিয় কিছু খাবারের দোকান ঘুরে খাবার কিনবেন বলেও জানান তারা।
শুধু পাহাড়ি ফল নয় হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্যের স্টলগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের আনাগোনা। রাজধানীতে বসে পাহাড়ি অঞ্চলের পণ্যের এমন প্রদর্শনীতে খুশি নগরবাসী।
আগামীকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় পার্বত্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গর্ণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, এমপি। উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের আয়োজনে পাহাড়িদের জীবন, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পাহাড়ে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর প্রচার ও বিপণনের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পার্বত্য মেলার আয়োজন করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

ওসমান হাদিকে দেখতে এসে তোপের মুখে মির্জা আব্বাস।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সেনাবাহিনীর সদস্যরা মির্জা আব্বাসকে নিরাপত্তা দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ