আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

নগর উন্নয়নে দায়িত্ব পালনের তিন বছর ও আগামীর ভাবনা

ডেস্ক নিউজ:

মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগর চট্টগ্রাম। গোড়াপত্তন থেকে ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম দেশের প্রধান অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী হয়ে ওঠার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মূলত বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলি নদীর সঙ্গমে প্রাকৃতিক পোতাশ্রয় ও বন্দরকে ঘিরে চট্টগ্রাম শহরের ক্রমবিকাশ। কাঁচা রাস্তাঘাট, খানাখন্দকে ভরা জঙ্গলাকীর্ণ চট্টগ্রামকে আধুনিক রূপদানের কাজ মূলত শুরু হয় ১৮৬৩ সালের ২২জুন পৌরসভা ঘোষনার মধ্য দিয়ে। আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ১৮৬৪ সালে জুলাইয়ে মিউনিসিপ্যাল আইনের বিধানের আওতায় এনে চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত শহরে রূপদানের কাজটি শুরু করেন ব্রিটিশরা। সেই থেকে তারা নতুন রাস্তা, লেন, গলি, আলো, পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা তৈরী করার কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি ¯^াস্থ্য বিধানের জন্য নেয়া হয় নানা ব্যবস্থা। প্রথমত চারটি ওয়ার্ড নিয়ে পৌর কার্যক্রম শুরু হলেও বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বৃদ্ধি করা হয় আরো একটি ওয়ার্ড। ১০.০৯ বর্গকিলোমিটার নিয়ে যে চট্টগ্রাম পৌর প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয় তা পর্যায়ক্রমে মিউনিসিপ্যাল ও সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হয়ে ৪১টি ওয়ার্ডের ১৬০.৯৯ বর্গকিলোমিটারের মেগা সিটি হয়েছে। এখানে আনুমানিক ৭০ল¶ মানুষের বসবাস এখন। এছাড়াও আরো ২০ল¶ ভাসমান মানুষ রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরে। ১৯৯০ সালের ৩১জুলাই তারিখে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন নামের পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন করা হলেও প্রথম ১৯৯৪ সালে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে সিটি কর্পোরেশন এর মেয়রের দায়িত্ব পান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মিউনিসিপ্যাল থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করার সময়ে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীকে মেয়র হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং ১৯৯১ সাল হতে ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন নিয়োগ প্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বপালন করেন। ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী পুনরায় নির্বাচিত হয়ে টানা ১৭ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৪র্থ পরিষদে মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং ৫ম পরিষদে আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ৬ষ্ঠ পরিষদের মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হই এবং একই সনের ১৫ ফেব্রæয়ারী ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সিটিউটে সুধী সমাজের সাথে মত বিনিময় করে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র এর দায়িত্বভার গ্রহন করি। চসিকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ভাতা, অন্যান্য সেবা সংস্থা সমূহের বকেয়া বিলসহ নানামূখী সমস্যা ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে এবং বিশ্ব মহামারী কোভিড-১৯ করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিকে সাথে করে আমার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের তৃতীয় বর্ষ পূর্ণ হয়েছে স¤প্রতি। দায়িত্ব পালনে সফলতা কিংবা ব্যর্থতার বিবেচনা নগরের বাসিন্দা ও ভোটাররাই করবেন। আমার দিক থেকে কোন প্রকার গাফিলতি আমি করিনি এবং চ্যালেঞ্জিং ইস্যুগুলোতে কোন শক্তির কাছে নমনীয় হইনি এতটুকু আমি জোর দিয়ে বলতে পারি।
নগরে যে কোন ধরনের সমস্যার জন্য সর্বপ্রথম সিটি কর্পোরেশনের দিকেই আঙ্গুল তুলে জনগণ। এটাকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। কারণ মহানগরে যতগুলো সরকারী, আধা সরকারী, ¯^ায়ত্বশাসিত ও বেসরকারী সেবা সংস্থা রয়েছে তার মধ্যে একমাত্র সিটি কর্পোরেশনই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ও দায়িত্বে পরিচালিত হয়। তাই সিটি কর্পোরেশনের জনসম্পৃক্ততা অন্য সকল সেবা সংস্থার চাইতে বহুগুনে বেশী এবং জনগন সিটি কর্পোরেশন এর উপর প্রত্যাশী হয়ে থাকে বেশী।
তবুও জনগনের জানার জন্য উল্লেখ করতে চাই যে, আমাদের সিটি কর্পোরেশনের কাজের মধ্যেও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সব ধরনের কাজে হাত দেয়ার এখতিয়ার সিটি কর্পোরেশনের নেই। সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হয় স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯ এর আলোকে। মোট ৮টি তফসিলে এই আইনের ১২৬টি ধারা আছে। আর এই ধারাগুলোতে একজন মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংর¶িত মহিলা কাউন্সিলরদের সহায়তা নিয়ে মূলত ২৮ ধরনের কাজের ¶মতা রাখেন। তাছাড়া ‘সিটি কর্পোরেশন পরিচালন ব্যবস্থা (গভর্ন্যান্স) উন্নয়ন কৌশলপত্র ২০২০-২০৩০’ শিরোনামে দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর জন্য ১০ বছর মেয়াদী একটি কৌশলপত্র আছে সরকারের। সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের উন্নত সেবা প্রদান করা এ কৌশলপত্র প্রণয়নের অন্যতম উদ্দেশ্য। ওই কৌশলপত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রূপকল্প (ভিশন) ধরা হয়, ‘পরিচ্ছন্ন ও সবুজ চট্টগ্রাম নগরী’। একইসঙ্গে মিশন (অভিল¶্য) এর প্রধান উপাদান হিসেবে উলে¬খ করা হয়, ‘পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন ও আর্থ–সামাজিক কার্যক্রম এর মাধ্যমে নাগরিকদের সেবা নিশ্চিতকরণ এবং নগরকে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরীতে পরিণত করে নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন’। স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রার সাথে সংগতি রেখে চট্টগ্রামকে বিশ্ব বাণিজ্যের হাব ও নান্দনিক নগরী হিসেবে দেখতে চান বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এসব বিষয়কে মাথায় রেখেই কাজ করছি আমরা। ভাঙ্গাচোড়া, এবড়ো থেবড়ো, ধূলাবালিময় ছিল নগরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট ও অলি গলি। আজকে প্রতিটি ওয়ার্ডের গলি থেকে রাজপথের প্রায় সবগুলোতেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মসৃণ করে তোলা হচ্ছে সবকিছুই। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমেও লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া, পেয়েছে গতি। আধুনিক ডিজাইনের সড়কবাতিতে মোহনীয় রূপ পেয়েছে নগরের বিশেষ বিশেষ এলাকা। তাছাড়া নগরের প্রায় সব এলাকাকেই আলো ঝলমলে সন্ধ্যা উপহার দিতে স¶ম হয়েছি আমরা।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রান্তিক এলাকা সব জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও নিরাপদ করতে ব্রিজ, ফুটওভার ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণ করছি।
নগরের খাল, নালা, নর্দমা ও ফুটপাথ থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারনে কর্পোরেশনকে নানামূখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সকল প্রকার চাপ ও প্রতিবন্ধকতাকে গ্রাহ্য না করেই আমরা এ কাজ সম্পাদনে আমরা ঠিকই সফলকাম হতে পারছি। এ কাজের ধারা অব্যাহত রয়েছে অচিরেই প্রায় সবগুলো খাল, নালা ও ফুটপাথকে অবৈধ দখলদারমুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে ছাত্র, যুব ও সাধারন মানুষের সমর্থন পাচ্ছি। এ সমর্থনকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে সাধুবাদ জানাই। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও যান চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে ৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে জিইসি মোড়ে চর্তুমুখী, ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জালালাবাদ এলাকায় ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ সড়ক সংযোগস্থলে এবং ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কাপ্তাই রাস্তার মোড়েও ওভারব্রিজ নির্মাণ করব আমরা। মোহরা এলাকায় ৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ওসমানিয়া পিসি গার্ডার সেতু তৈরি করতে যাচ্ছি আমরা।
শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপদান করতে নগরে পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়ন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ম্যাকানিক্যাল পার্কিং স্থাপন, চসিকের ওয়ার্ড অফিসসমূহ সংস্কার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প, নগরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, নগরে ¯^াধীনতা স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহের সংর¶ণ প্রকল্প এবং আগ্রাবাদ ডেবা ও পাহাড়তলী জোড় দীঘির সংস্কার প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
এছাড়া বিওটি (বিল্ড অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার) এর আওতায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, যানজট নিরসনে মেট্রোরেল নির্মাণ, ঠান্ডাছড়ি পার্ক নির্মাণ, আউটার রিং রোডের পাশে সী সাইটে ওশান পার্ক ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়া আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ, স্মার্ট সিটি প্রকল্প, চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, মাস্টার প্ল্যানের সুপারিশমতে প্রস্তাবিত নতুন সড়ক নির্মাণ, মুরাদপুর, ঝাউতলা, অ·িজেন ও আকবর শাহ রেলক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস নির্মাণ, ঢাকামুখী, ক·বাজারমুখী ও হাটহাজারীমুখী বাস টার্মিনাল নির্মাণ, ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফুট ওভার ব্রিজ ও ওভারপাস/আন্ডারপাস নির্মাণ, চসিকের নিজ¯^ জায়গায় স্পোর্টস কমপ্লে· নির্মাণ, কাঁচা বাজারের আধুনিকায়ন, বাকলিয়া স্টেডিয়ামে স্পোর্টস কমপ্লে· নির্মাণ, ওয়ার্ড ভিত্তিক খেলার মাঠ, শিশুপার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, মিলনায়তন, ব্যায়ামাগার ও কারিগরি প্রশি¶ণ কেন্দ্র নির্মাণ, নগরের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক কনভেনশন হল নির্মাণ, জোনভিত্তিক মুক্তমঞ্চ ও থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণ, বিবিরহাট গরুর বাজার শহর হতে দূরে ফতেয়াবাদ স্থানান্তর করা, নগরের প্রধান সড়কসমূহের ফুটপাত, মিডিয়ান, রাউন্ড আধুনিকীকরণ এবং লেন পার্কিং ও জেব্রা ক্রসিংসহ উন্নয়ন, নগরের কাঁচা সড়কসমূহ পাকাকরণ এবং হকার পুনর্বাসনের চিন্তাও আমাদের রয়েছে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ বর্জ্যাগার নির্মাণ, ২১টি খালের উন্নয়নে প্রকল্প নিতে যাচ্ছি আমরা। কালুরঘাটে হাইটেক পার্ক কর্তৃপ¶কে দেয়া চসিকের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনিকিউবেশন সেন্টার।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ২,১৩৫ মেট্রিক টন বর্জ্য হয়। সত্যি কথা বলতে কি, বর্জ্য অপসারনে আমাদের কর্মীদের প্রায়শঃই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে শৃক্সখলা আনতে নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা বিশেষ প্রয়োজন। নগরবাসীর কাছে আমাদের পরামর্শ হল, যত্রতত্র ময়লা ও পলিথিন ফেলবেন না। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু পদ¶েপ আমাদের রয়েছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যু উৎপাদনের জন্য ১৩টি প্রস্তাব বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কারিগরি কমিটি চারটি কোম্পানির প্রস্তাবনা নির্বাচন করেছে। প্রকল্পটি বাম্দবায়নের জন্য কাজ চলছে।” মেডিকেল বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি ইনসিনারেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে।”
বন্দর নগরীর তারের জঞ্জাল অপসারণে তিনটি ওয়ার্ডে ১৬ ফেব্রæয়ারি থেকে পাইলট প্রকল্প শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। প্রাথমিকভাবে লালখান বাজার, বাগমনিরাম এবং জামালখান ওয়ার্ডে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প সফল হলে পরবর্তীতে অন্যান্য ওয়ার্ডসমূহে এই কার্যক্রম প্রসারিত করব আমরা। উদ্ধার হওয়া খালগুলোকেরক্ষার্থ প্রকল্প শেষ হলে সেখানে নৌকা চালুর পরিকল্পনা আছে আমাদের। কারণ প্রকল্প শেষ হলে খালগুলোর রক্ষা করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য প্রকল্প শেষ হলে খালগুলোতে বিনোদনের ¶েত্র তৈরির জন্য বারইপাড়া খালসহ উদ্ধার হওয়া সবগুলো খালে নৌকা ও স্পিডবোট চালু করব। খালে যখন মানুষ ময়লা দেখবে না বরং ¯^চ্ছ জলপ্রবাহে বিনোদনের উৎস খুঁজে পাবে, তখন মানুষ আর খালে ময়লা ফেলবে না।’
চট্টগ্রাম নগরীতে তিন সংস্থার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে মোট ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে। আমরা প্রকল্প এলাকাগুলোতে ময়লার ভাগাড়ও নির্মাণ করবো। যাতে খালপাড়ের মানুষ বর্জ্য ফেলে খাল ময়লা দিয়ে ভরিয়ে না ফেলে। প্রকল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া খালসংলগ্ন ভূমি রক্ষা করা।

য় সীমানা নির্ধারণী খুঁটি বসাব। কারণ এ খালগুলোকে রুক্ষার সাথে কর্ণফুলী এবং চট্টগ্রামের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত।’
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জাপানের একটি ও দক্ষিণ কোরিয়ার একটি, মোট দুটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
তবে কোন কোম্পানিকে প্রকল্পটি দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে। লেখার কলেবর বৃদ্ধি না করে প্রিয় নগরবাসীর কাছে আবেদন রেখে উল্লেখ করতে চাই যে, বিশ্ব বাণিজ্যের হাব হিসেবে উপযুক্ত করে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগুতে চাচ্ছি তা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা চাই। নগরবাসীর সচেতনতা, সহযোগিতা ও সমর্থন থাকলে চট্টগ্রাম হবে সবুজ, পরিচ্ছন্ন, স্মার্ট ও বিশ্বজনীন একটি নান্দনিক নগরী।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে সবজির বাজার চড়া, কমেনি পেঁয়াজের ঝাঁঝ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ফের সবজরি দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দর আবারও উর্ধমূখী। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও কাজির দেউড়ি বাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়েনি। তবে মাছ-মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির দাম আড়ত পর্যায়ে বেশি হওয়ায় খুচরায় এর প্রভাব পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শেষে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতিকেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। কিন্তু গত দুইদিনে কেজিতে অন্তঃত ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। এরপরও খুচরায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারির হিসেবে পেঁয়াজের দর খুচরায় প্রতিকেজি ১০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ মজুত রয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।বাজারে দেশি রসুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে শীতকালীন অধিকাংশ সবজি গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৬০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দেখা গেছে। বাজারে টমেটো মানভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, নতুন শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল, দেশি পটল, দেশি গাজর, দেশি শসা, ছোট করলা প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, কচুরমুখী, লাউ, চালকুমড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ছিল।তবে ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের মতোই আছে। শালগমের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা হয়েছে। বগুড়ার নতুন আলুর দাম কেজিতে অন্তঃত ৪০ টাকা কমে প্রতিকেজি ৪০ টাকায় এবং

মুন্সীগঞ্জের পুরোনো আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, বগুড়ার পুরনো আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচামরিচের দাম কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন লাল শাক-পালং শাকসহ অন্যান্য সব ধরনের শাক আঁটিপ্রতি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্যান্য মুদিপণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি। সরকারিভাবে নির্ধারিত প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯০ টাকা, বুটের ডাল ৬০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা ও খোলা চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজির প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১২০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০ থেকে ১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে এলাচ প্রতিকেজি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।


চালের মধ্যে মোটা চাল ব্রি-২৮ ও স্বর্ণা প্রতিকেজি ৬৪-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা, মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি লালতীর, এসিআই, স্কয়ার কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, লেয়ার ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের মধ্যে দেড় কেজি ওজনের প্রতি পিস দেশি হাঁস ৫০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের চীনা হাঁস প্রতি পিস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৮০ থেকে ৯০০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০ টাকা এবং ছাগল ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা থেকে কমে ১১০ টাকা, সাদা ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও দেশি হাঁসের ডিম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।মাছের মধ্যে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) প্রকারভেদে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া বড় সাইজের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা,

নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।বাজারে এখন ইলিশ আর তেমন নেই। তবে ৭-৮টি মিলে ওজনে এক কেজি হয় এমন কিছু ইলিশ এখনও সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামে পাঁচ শতাধিক শিশু-কিশোরের ক্ষুদে ম্যারাথন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবি সিরিষতলায় ‘ক্ষুদেদের ম্যারাথনে’ পাঁচ শতাধিক শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। শুক্রবার কুয়াশা মাখা ভোরে সূর্যের আবির্ভাবের সাথে সাথে সিআরবি সংলগ্ন পাহাড় ও সড়কে অনুষ্ঠিত হয় ফুলকি স্কুলের কচি কাঁচা শিক্ষার্থীদের এই ‘ক্ষুদেদের ম্যারাথন’। বয়স অনুযায়ী ৫ কিলোমিটার, ২ কিলোমিটার ও ১ কিলোমিটার দূরত্বে ৫৩১ জন শিশু-কিশোর দৌড়ে অংশগ্রহণ করেছে।

জানা গেছে, ১৯৭৬ সাল থেকে ফুলকির পথচলা। শিশুকিশোরদের মানসবিকাশে প্রতিনিয়ত সৃষ্টিশীল কাজকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছে ফুলকি পরিবারের সকল কর্মী। ২০২৫ সালে ফুলকির ৫০ পদার্পণের বছর সুবর্ণজয়ন্তীবর্ষ। ২০২৬ হবে এর ৫০ পূর্তি বছর।এ উপলক্ষে সারা বছর নানা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে ফুলকির।
শিরীষতলা মাঠে জাতীয় সঙ্গীত ও পরে বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে ক্ষুদেদের ম্যারাথন উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী বাবর আলী, ফুলকি ট্রাস্টের সভাপতি আবুল মোমেন ও সর্বাধ্যক্ষা শীলা মোমেন।

সকাল ৭টায় সিআরবি সাত রাস্তা থেকে প্রথমে ৫ কিলোমিটার অংশগ্রহণকারীদের দৌড় শুরু হয়। এরপরই ২ কিলোমিটার ও ১ কিলোমিটার দৌড় শুরু হয়। ৫ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বর্ণময় সেনগুপ্ত, মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় নুসরাত জাহান ইমা। ২ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় মো. আরহাম হোসেন, মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় মানহা জাফরিন। ১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় রাজদ্বীপ চক্রবর্তী, মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় নাজিয়া কাওসার।সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রত্যেক ক্যাটাগরি থেকে সেরা ৫ জন ছেলে ও সেরা ৫ জন মেয়েকে ক্রেস্ট, মেডেল ও সনদ প্রদান করা হয়। এছাড়াও সকল দৌড় সম্পন্নকারীদের মেডেল ও সনদ প্রদান করা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বাবর আলী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা দৌড়ে অংশগ্রহণ করছ, নিজেদের মেলে ধরেছ, এটা যেন থেমে না যায়, এই চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। ফুলকির সর্বাধ্যক্ষা শীলা মোমেন বলেন, জীবনের গতিও যেন সর্বদা চলমান ও অর্থবহ হয়।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র শিশু-কিশোরদের জন্য এ ধরনের আয়োজন সম্ভবত এই প্রথম। ফুলকি সহজপাঠ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নগরের আরও ৩৩টি বিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন বয়সি শিশু-কিশোরেরা এতে যুক্ত হয়েছে। এই আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ ও এসএমসি। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল ফুলকির সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ