আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর গণসমাবেশে সিপিবি সভাপতি

ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন-গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন

ডেস্ক নিউজ:

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহআলম বলেছেন, ‘লুটেরা-টাকা পাচারকারী, বিএমডব্লিউওয়ালাদের সিন্ডিকেট দেশের পার্লামেন্ট দখল করে ফেলেছে। এ লুটেরাদের লালন-পালন করছে অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সরকার। লুটেরাদের রাজনীতি থেকে হটাতে হবে। লুটেরাদের সরকারকে ক্ষমতার গদি থেকে টেনে নামাতে হবে। এজন্য সর্বস্তরের মানুষকে রাস্তায় নেমে এসে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন ও গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

সিপিবির ৭৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ৯ মার্চ বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা সিপিবি এ গণসমাবেশের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহআলম বলেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি এদেশে একটি তথাকথিত নির্বাচন হয়েছে। ক্ষমতায় থাকা সরকারই আবার সরকার গঠন করেছে। আমরা ২ সালে একতরফা নির্বাচন দেখেছি। ২০১৮ সালের নৈশভোটের নির্বাচন দেখেছি, রাতের আঁধারে ভোটচুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ। ২০২৪ সালে দেশের জনগণের মতামত উপেক্ষা করে অবৈধ নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতা দখল করেছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ২২ টি আসনে কারচুপি হয়েছিল। জিয়াউর রহমান আমলে হ্যাঁ-না ভোট দেখেছি, মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এরশাদের আমলে গুণ্ডারা ভোট দিয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম- আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। মানুষ সেটা লুফে নিয়েছিল। স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নূর হোসেন রক্ত দিয়েছিল, তাজুল রক্ত দিয়েছিল। এদেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে স্বৈরাচার হটিয়েছিল। এখন আবার স্বৈরাচারদের নিয়ে আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্রের পতাকা খামচে ধরেছে। তাদের হটাতে হবে।’

দেশের মানুষ উত্তরাধিকারের রাজনীতির কাছে বন্দি হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একদিকে সজীব ওয়াজেদ জয়, আরেকদিকে তারেক রহমান। এ উত্তরাধিকারের রাজনীতি ভেঙ্গে দিতে হবে। বংশের রাজনীতি ভেঙ্গে দিতে হবে। রাজনীতিকে উত্তরাধিকারের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।’

দেশের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে শাহআলম বলেন, ‘দেশে আজ কী চলছে, আমাদের চেয়ে মানুষ ভালো জানে। মানুষকে আজ বোঝাতে হয় না, তারাই উল্টো আমাদের বোঝাচ্ছে। মানুষ আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। বাজারে গিয়ে জিনিসপত্রে হাত দেয়া যাচ্ছে না, হাত পুড়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন পর রমজান, মানুষ চিন্তায় আছে। দেশের ব্যাংকে টাকা নেই। ডলার সংকট চলছে। হাজার-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। পাচারকারীদের সরকার লালন-পালন করছে।’

টাকা পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর দেশ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। সরকারের কাছে সব তথ্য আছে। সরকারকে বলব- পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনেন। টাকা পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশ করুন, ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করুন।’

তিনি বলেন, এ সরকার পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, তাদের সে ক্ষমতা নেই। সরকার চালায় সিন্ডিকেটওয়ালারা। মতিঝিলে-খাতুনগঞ্জে বসে আছে টাকা পাচারকারীদের সিন্ডিকেট। একেকজনের গাড়ির কী বাহার ! বিএমডব্লিউ ছাড়া চলে না ! লুটেরা, টাকা পাচারকারী আর বিএমডব্লিউওয়ালারা আজ দেশের পার্লামেন্ট দখল করেছে। পার্লামেন্টে ১৯৯ জন ব্যবসায়ী। যে সিন্ডিকেট জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়, তারা পার্লামেন্টে গিয়ে বসে আছে। আর সরকার অভিযানের নামে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছে। সবার আগে এ মুনাফাখোরি বাজার ব্যবস্থাকে লাথি দিতে হবে। গ্রাম-শহরে রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সিন্ডিকেটওয়ালাদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। টাকা পাচারকারী-বিএমডব্লিউওয়ালাদের দখল থেকে পার্লামেন্টকে মুক্ত করতে হবে। তাদের পার্লামেন্ট থেকে বের করে দিতে হবে।’

সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘লুটেরা সিন্ডিকেট, টাকা পাচারকারী আর তাদের লালন-পালনকারী সরকারের বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি লড়াই করছে। এ লড়াই চলবে। এ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে জনগণের রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে। এ দেশ আমরা লুটেরাদের হতে দেব না। লুটেরাদের সরকারকে ক্ষমতার গদি থেকে নামাতে হবে। লুটেরাদের হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, গণআন্দোলন গড়ে তুলি, গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলি। সিপিবির নেতৃত্বে জনগণের পক্ষের লুটেরাদের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।’

সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য পরেশ কর বলেন, ‘১৯৪৯ সালে যে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সে আওয়ামী লীগ এখন আর নেই। এখন যে আওয়ামী লীগ সেটা জনগণের নয়, সেটা সালমান এফ রহমানের আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ এখন এক মহাবিপদে আছে। কমিউনিস্ট পার্টি সে মহাবিপদ অতিক্রমের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছে। একদিন সংগ্রাম করে আমরা স্বৈরশাসন হটিয়েছিলাম। এখন আবার ক্ষমতার গদিতে স্বৈরশাসন চেপে বসেছে। দলগতভাবে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়েও খারাপ অবস্থানে আছে। আওয়ামী লীগের কাছে জনগণের কোনো দাম নেই। এখন জনগণের শেষ ভরসা কমিউনিস্ট পার্টি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফেরাতে হলে, জনগণের অধিকার কায়েম করতে হলে কমিউনিস্ট পার্টিকে শক্তিশালী করা ছাড়া উপায় নেই।’

সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাকী আক্তার বলেন, ‘ভোট ও ভাতের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, লুটপাট, দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি লড়াই করে যাচ্ছে। এদেশে যত গণআন্দোলন, সব কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে। দেশে যে নীতিহীন রাজনীতি চলছে, সেটার বিরুদ্ধে নীতিনিষ্ঠ রাজনীতি করে যাচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি। চলমান দুঃশাসনে আমরা এক দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছি। নাগরিকদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।’

সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সহকারি সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর, সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য উত্তম চৌধুরী ও মো. মছিউদ্দৌলা এবং দক্ষিণ জেলার সভাপতি কানাই লাল দাশ ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী।
সিপিবি, চট্টগ্রাম জেলার সংস্কৃতি শাখার শিল্পীদের গণসঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে লাল-পতাকার মিছিল পুরাতন রেলস্টেশন থেকে নিউমার্কেট, কোতোয়ালী মোড়, লালদিঘীর পাড় হয়ে সিনেমা প্যালেস চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে হাল্ট প্রাইজ ২০২৫ রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

হাল্ট প্রাইজ ২০২৫/২৬ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে নিবন্ধন বুথ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং ক্লাস প্রমোশন চালু করা হয়েছে। এ বছর প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত ও দলীয়—উভয়ভাবেই অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত নিবন্ধন ১০ ডিসেম্বর (বুধবার) এবং দলীয় নিবন্ধন ১৫ ডিসেম্বর (সোমবার) তারিখে সমাপ্ত হবে।

এবারের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ থিম “আনলিমিটেড”-যা শিক্ষার্থীদের জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করার সুযোগ করে দিচ্ছে।এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা দক্ষতার মাধ্যমে দারিদ্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, অসমতা এবং শিক্ষার মতো বৈশ্বিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করতে পারবেন। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সীমাহীন চ্যালেঞ্জের ভিত্তিতে তাদের ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নে রূপ দেওয়া যাবে।

এ বছরের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অব স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা—তাদের নেতৃত্বে প্রতিযোগিতাটি সফলভাবে আয়োজনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ২–৪ সদস্যের দল অংশ নিতে পারবে এবং সকল অংশগ্রহণকারীর বয়স ন্যূনতম ১৮ বছর হতে হবে। প্রতিটি দলে অন্তত একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকা বাধ্যতামূলক। দলের অন্যান্য সদস্য যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণ করতে পারবে।এছাড়া এ বছর দল না থাকলেও শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করতে পারবেন; পরবর্তীতে তাদের নিয়ে দল গঠন করা হবে।

রেজিস্ট্রেশন বুথ অথবা অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দলীয় অথবা ব্যক্তিগতভাবে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনে কোনো ফি নেই।দলীয় সদস্যরা যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসুন না কেন, প্রতিযোগিতায় তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ