আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফায়ার সার্ভিস উপপরিচালকের সাথে মতবিনিময়ে সুজন

অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল বুধবার সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা’র সাথে মতবিনিময়ে উক্ত আহবান জানান তিনি।
এসময় সুজন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সকল শহরে বেড়ে চলেছে বহুতল ভবনের সংখ্যা। আমরা উন্নয়ন নিশ্চিত করেছি, এখন আমাদের এই উন্নয়নকে টেকসই উন্নয়নে পরিণত করতে হবে। আমাদের ভবনগুলোকে সর্বাগ্রে নিরাপদ করতে হবে। সেজন্য অগ্নি নিরাপত্তা কঠোরভাবে প্রতিফলনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে ভবন অনুমোদনের সময় ফায়ার সার্ভিস সনদ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। যে সকল ভবন ইতিমধ্যে নির্মিত হয়েছে অথচ ফায়ার সার্ভিস সনদ গ্রহণ করেনাই সে সকল ভবনে ফায়ার সার্ভিস সনদ গ্রহণে বাধ্য করতে হবে। রাস্তায় ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো আছে, অথচ আগুন লাগলে পানির সাপোর্ট পাওয়া যায় না। ওয়াসার সাথে আলোচনা করে ফায়ার হাইড্রেন্টে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহ রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। তিনি বলেন, নগরীতে এক সময় অনেকগুলো জলাশয় ছিলো যেগুলো আগুন নিভানোর কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। কিন্তু দখলে, দুষণে অনেকগুলো জলাশয় বিলীন হয়ে গিয়েছে। যে সকল জলাশয় অবশিষ্ট রয়েছে সেগুলো যাতে কোন অবস্থাতেই কেউ ভরাট করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টি রাখারও অনুরোধ জানান তিনি। প্রয়োজনে সিডিএ’র মাধ্যমে অবশিষ্ট জলাশয়গুলো অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, নগরীর জহুর হকার্স মার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, তামা কুন্ডি লেইনসহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ বাজারগুলোতে নিয়মিত অগ্নি নির্বাপক মহড়া চালানো উচিত। সরু গলির কারণে এসব মার্কেটে আগুন লাগলে তা নিভানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এতে করে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। পাশাপাশি এসব মার্কেটে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা গ্রহণ করারও অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া বর্তমান সময়ে এলপিজি সিলিন্ডার দুর্ঘটনার হার আশংকাজনক হারে বেড়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তিকে। এলপিজি সিলিন্ডার জ্বালানি হিসেবে সহজলভ্য হওয়ায় দিন দিন বিপদের কারণ হয়ে উঠছে এটি। ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশের ব্যবহার, পরিবহন ও মজুদ করার নিয়ম না মানার কারণেই এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়ছে। তাই ফায়ার সার্ভিসকে এক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার আহবান জানান তিনি। পাশাপাশি এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার, পরিবহন, মজুদ এসব বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া নিম্নমানের এলপিজি সিলিন্ডার যাতে কোনভাবেই বাজারে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহবান জানান তিনি। নগরীর অগ্নিঝুঁকি কমাতে সকল সংস্থা এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা খোরশেদ আলম সুজনের। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা সুজনকে তাঁর দপ্তরে স্বাগত জানান। তিনি সুজনের উত্থাপিত প্রস্তাবনার সাথে সহমত পোষন করেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলেই দেশে কল-কারখানা এবং বহুতল ভবনের সংখ্যা বাড়ছে। তবে যেভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সে তুলনায় পর্যাপ্ত লোকবল এবং আধুনিক অগ্নি নির্বাপন সামগ্রীর অভাব রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের। নগরায়নের ফলে এখন শহরে জলাশয়ের খুবই অভাব। পর্যাপ্ত জলাশয় না থাকার ফলে অগ্নি নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিসের পানির উপর অধিকাংশ সময় নির্ভর করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে রাস্তায় ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকলেও পানি থাকে না। দেখা যায় যে, সিডিএ ভবনের অনুমোদন দিয়েছে কিন্তু রাস্তা সরু, আবার পর্যাপ্ত জায়গা না রেখেই অনেক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এসব জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে না পারায় আগুনের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। নিজস্ব ম্যাজিষ্ট্রেট না থাকার কারণে কোথাও অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া অতি উৎসাহী জনগনও অগ্নি নির্বাপনে একটি বড়ো বাঁধা বলে উল্লেখ করেন তিনি। ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশের ব্যবহারের ফলে এলপিজি সিলিন্ডার দুর্ঘটনার হার বাড়ছে বলে জানান তিনি। নগরীর অগ্নিঝুঁকি কমাতে সকল সংস্থাকে এক ছাদের নীচে এসে কাজ করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক এমডি আবদুল মালেক, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. শাহজাহান, মো. সেলিম প্রমূখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ