আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

ভৌতিক বিলের খপ্পর

চট্টগ্রামে মিটার-সংযোগবিহীন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৭ লাখ টাকা

বিশ্বজিৎ পাল,

 কর্ণফুলী পিডিবি অফিস থেকে এক গ্রাহকের নামে পাঠানো ৪টি বিলের যোগফল ৬ লাখ ৬৯ হাজার ১৭৩ টাকা। যে গ্রাহনের নামে বিল পাঠানো হয়েছে ওই গ্রাহকের কোন মিটার নেই, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এমন ভৌতিক বিলের খপ্পরে পড়া ভুতুড়ে কাণ্ডটি ঘটেছে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ইঞ্জিনিয়ার খাইর আহমেদ সড়কের প্রকৌশলী আলহাজ্ব মো. সোলায়মানের সঙ্গে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গ্রাহক মো. সোলায়মানের পুত্র ভুক্তভোগী মো. জোবায়ের বাহাদুর বলেন, পিডিবি যে মিটারের বিল দিচ্ছে তার বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, মিটার নেই, নেই ব্যবহার তবুও বিদ্যুৎ বিল আসছে লাখ লাখ টাকা। অথচ আমরা কিছু জানি না। কারণ বাড়ি বিক্রি আমরা চলে এসেছি। এ ঘটনায় প্রতিবেদক বিদ্যুৎ বিল পর্যালোচনা করে দেখেন কর্ণফুলীর এই গ্রাহক কে গত তিন বছরে (২০২২-২০২৪) বিল পাঠানো হয়েছে চারটি। পৃথক পৃথক পাঠানো চারটি বিলের যোগফল প্রায় ৭ লাখ মতো।
অনুসন্ধানে আরো তথ্য মিলে, গত ২৮ মার্চ সর্বশেষ ইস্যু হওয়া বিলে গ্রাহক প্রকৌশলী মো. সোলায়মানের বিল আসে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩২৩ টাকা। যার বিল নম্বর-২৭২১৮০০৫। বুক নম্বর-৯২১। একাউন্ট নম্বর-এ-৮৯০০। মিটার নম্বর-১৪৩১২৯।
বিলের বিস্তারিত পেমেন্ট বকেয়াতে আরো লিখা রয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারীর বকেয়া ১ লাখ ৭১ হাজার ৮০৪ টাকা। এতে বর্তমান রিডিং দেখানো হয়েছে ৩৬ হাজার ৭৬৯ ইউনিট। পুর্বের ইউনিট দেখানো হয়েছে একই রিডিং। কনজুম ইউনিট দেখানো হয় ৫০০। এ বিলে ভ্যাট ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৬১৭ টাকা। ইলেকট্রিসিটি চার্জ, ডিমান্ট চার্জ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটসহ আরও ইউনিট আরো ৪ হাজার ৩৭২ টাকা।
অনুসন্ধানে তথ্য মিলে, এরপুর্বে ২৭ ফেব্রুয়ারী ইস্যু হওয়া বিলে একই গ্রাহকের বিল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৪২ টাকা। যার বিল নম্বরটি ছিল-২৭১৫১১৫৯। এতে বর্তমান রিডিং ও পুর্বের রিডিং দেখানো হয়েছে অপরিবর্তিত। কনজুম ইউনিট দেখানো হয় ৫০০ ই। এ বিলে ভ্যাট ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪০৯ টাকা।
এমনকি বিলের বিস্তারিত পেমেন্ট বকেয়াতে লিখা রয়েছে, ২০২৩ সালের জুন হতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪ হাজার ১৮৮ টাকা করে বিল এসেছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৬৪ টাকা। অথচ ইউনিটের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবুও ইলেকট্রিসিটি চার্জ, ডিমান্ট চার্জ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটসহ আরও ইউনিট বিল ৪ হাজার ৩৭২ টাকা।
একই গ্রাহক কে আবার ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বরে পাঠানো বিল ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৯২ টাকা। রিডিং আবারো অপরিবর্তিত। এমনকি ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪ হাজার ১৮৮ টাকা করে গড় বিল দেখানো হয় ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৮৯ টাকা। এই বিলেও ইলেকট্রিসিটি চার্জ, ডিমান্ট চার্জ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটসহ বিলে যোগ হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯৯৭ টাকার বিল সংযুক্ত।একই গ্রাহককে ২০২২ সালের ২৮শে অক্টোবরে পাঠানো বিল ১ লাখ ১৯ হাজার ১১৬ টাকা। ওখানেও বরাবরের মতো বর্তমান ও পূর্বের রিডিং অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বিলে বিস্তারিত তথ্যে বলা আছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ হাজার ৬১৫ টাকা করে বিল ৯০ হাজার ১৯১ টাকা। ইলেকট্রিসিটি চার্জ, ডিমান্ট চার্জ ও ৫ শতাংশ ভ্যাটসহ আরও ৩ হাজার ৪৫১ টাকা ২৫ পয়সা।
এই বিল লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই বিলের কপিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কতৃক নীল সিল করে গ্রাহক কে জানানো হয়েছে ‘আপনার বকেয়া বিদ্যুৎ পরিশোধ না করায় মামলার জন্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বিলটি পরিশোধ করুন।’ কিন্তু মামলার খবর না পেলেও বিলের খবরে বিস্মিত পরিবারটি।
এদিকে, ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করতে গিয়ে সোলায়মানের বড়পুত্র মোহাম্মদ জোবায়ের বাহাদুর আরো বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে। উনি মারা যাবার পর আমরা আমাদের বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছি। মাহবুব আলম নামে এক ব্যক্তির কাছে। বাড়িটি ছিলো এক তলা সেমিপাকা ভবন। এখন তিন তলা বাড়ি। এমনকি বাড়িতে থাকা আগের বিদ্যুৎ মিটার সারেন্ডার করে দিয়েছি। কিন্তু প্রতিবেদকের কাছে স্বপক্ষে কাগজ দেখাতে পারেনি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর মইজ্জ্যারটেক উপ-কেন্দ্রের বিল প্রস্তুতকারী রনির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।তবে পটিয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রণয় আচার্য্য বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে। যদিও তখন আমি ছিলাম না। এছাড়া আদৌও গ্রাহক সোলায়মানের পরিবার মিটারটি সারেন্ডার করেছিলো কিনা তাও জানার বিষয়। তবে বাড়ির নতুন মালিক মাহবুব আলম আমার কাছে এই বিষয়িটি নিয়ে কয়েকবার এসেছিলেন। আমি সমাধান করে দেবো জানিয়ে ঈদের পরে আসতে বলেছিলাম তিনি আসেননি।
একই বিষয়ে চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ইঞ্জিনিয়ার খাইর আহমেদ সড়কের প্রতিবেশী মো. আজাদ বলেন, তাহলে পিডিবির মিটারটি গেল কোথায়? কে গায়েব করেছে তা খুঁজে বের করা পিডিবির দায়িত্ব ছিলো। তা না করে পিডিবি কিভাবে একই বাড়িতে নতুন দুটি মিটার দিলেন। বুঝা যাচ্ছে সর্ষে-ভূত। আবার ৪ বছর আগে মাহবুব আলম লিখিত অভিযোগ দিলেও পিডিবি তদন্ত করেনি কার স্বার্থে? নিশ্চয় সবকিছু পিডিবির লোকজন জানতেন। তারাই মোটা অঙ্কের সুবিধা নিয়ে এসব করেছে। যা উচ্চ তদন্ত দরকার।
পটিয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী প্রকৌশলী আ. স. ম. রেজাউন নবী বলেন, ‘বিষয়টি আপনি বলার পরে জেনেছি। আমি খোঁজ নিচ্ছি। অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে দক্ষিণ জোনের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল বিউবো’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল কুমার মোহন্ত ভালো বলতে পারবেন। পরে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহন্ত’র মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগের সমস্ত ডকুমেন্টস পাঠিয়েও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী পরিবারের দ্বিতীয় ছেলে মোহাম্মদ নওশের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে মিটার আমরা ব্যবহার করিনি, যে মিটার আমরা ৪ বছর আগে ছেড়ে দিছি। বাড়ি বিক্রি করে রাস্তাঘাটে ঘুরছি। এমনকি মিটারের গ্রাহক মারা গেছেন ২০১৬ সালে। জমি বিক্রি করেছি ২০২০ সালে। এরপরেও মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কেন বিল দিচ্ছে কর্ণফুলী পিডিবি অফিস জানে। এসব আমরা জানি না।
এ প্রসঙ্গে বাড়িটির বর্তমান মালিক মাহবুব আলম বলেন, আমি গত ২০২০ সালে মৃত মো. সোলায়মানের ওয়ারিশ থেকে বাড়িসহ ১০ শতক জমি ক্রয় করি। তখন আমাকে জানানো হয় বাড়িতে থাকা সোলায়মানের মিটারটি পিডিবি’র কাছে সারেন্ডার করা হয়েছে। আমিও কোন মিটার দেখিনি। পরে নিজের নামে মিটারের জন্য আবেদন করি। পিডিবি অফিস সরেজমিনে তদন্ত করে আমার নামে দুটি মিটার স্থাপন করে দেন। যেহেতু বাড়িতে কোন অন্য মিটার ছিলো না। এরপর আমার নামীয় মিটারের নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছি। আমার কোন সমস্যা নেই। অথচ পুর্বের মালিকের নামে এখনো লাখ লাখ টাকার বিল আসছে।
পিডিবিকে বিষয়টি জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মাহবুব আলম আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে সে সময় আমি বিষয়টি হেড অফিসের বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের পরিচালক মো. আবু ছাইদ সাহেব কে জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু সাড়ে তিন বছরেও তারা তা তদন্ত করেনি। সমাধান করেনি। অথচ এরমধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী বদলি হয়েছে কয়েকজন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ