আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

দুর্ভোগে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা

চট্টগ্রামে পরিবহণ ধর্মঘটে বিচ্ছিন্ন আশপাশের উপজেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গরমে তীব্র ভোগান্তি

চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহণ ধর্মঘটে  ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। মহানগরী ও পাঁচ জেলায় শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে নগরী থেকে জেলা-উপজেলায় গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ আছে। একইভাবে জেলা-উপজেলা থেকে কোনো গণপরিবহণও নগরীতে ঢুকতে পারেনি। দূরপাল্লার গণপরিবহণেরও একই পরিস্থিতি। এর ফলে কার্যত চট্টগ্রাম অঞ্চল সড়ক পথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

গতকাল রোববার ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন রুটে কিছু বাস, মিনিবাস চলতে দেখা গেছে। অটোরিকশা চলাচল প্রায় স্বাভাবিক আছে। জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস মালিকদের আটটি সংগঠন আছে। এর মধ্যে সাতটি ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা জানালেও একটি সংগঠন জানায়নি। সে সংগঠনের বাসগুলো রাস্তায় চলছে।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গাড়ির অভাবে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কর্মস্থল ও গন্তব্যে যাওয়ার জন্য শত শত মানুষকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। অনেকে গণপরিবহণ না পেয়ে ট্রাকে করে গন্তব্যে ছুটছেন। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ খোলার প্রথম দিনে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। নগরীতে রিকশা, অটোরিকশা চলাচল করলেও বেশি ভাড়া দাবি করছিলেন চালকরা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের গাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানোর প্রতিবাদসহ চার দাবিতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ কর্মসূচি দিয়েছে। । ধর্মঘটের আওতায় আছে সব ধরনের বাস-মিনিবাস, অটোরিকশা, অটোটেম্পু ও হিউম্যান হলার।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, আমাদের বাসগুলো রাস্তায় চলছে। যে ধর্মঘট চলছে, সেটাতে আমরা নেই। এর মধ্যে সকালে ধর্মঘট আহ্বানকারী সংগঠনের শ্রমিকরা নগরীতে বাস-মিনিবাস চলাচল ঠেকাতে রাস্তায় নামেন। নগরীর বহদ্দারহাটসহ কিছু এলাকায় বাস ভাঙচুরের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর থেকে বাস-মিনিবাস চলাচল সীমিত হয়ে এসেছে। তবে অটোরিকশা চলাচলে বাধা দিচ্ছে না পরিবহণ শ্রমিকরা।
নগরীর চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, বহদ্দারহাট মোড়ে ধর্মঘটের মধ্যে গাড়ি চলাচল করা নিয়ে কয়েকজন পরিবহণ শ্রমিকদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। গাড়ি ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। হাতাহাতি করতে গিয়ে হয়তো সামনের একটি বা দুটি কাঁচ ভেঙে যেতে পারে। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
শাহ আমানত সেতু এলাকায় নগরীর প্রবেশমুখে দেখা যায়, বিভিন্ন উপজেলা এবং বান্দরবান-কক্সবাজারমুখী শত শত যাত্রী সেখানে ভিড় করেছেন। গাড়ি না থাকায় তারা কোথাও যেতে পারছেন না। অনেককে পরিবার নিয়ে রাস্তায় বসে থাকতে দেখা গেছে। গরমে হাঁসফাঁস করছে শিশুরা। কক্সবাজার রুটে দুয়েকটি গাড়ি ছাড়লেও ৪২০ টাকার ভাড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ অটোরিকশায়, কেউ ট্রাকে উঠে ছুটছেন গন্তব্যের পথে।
সুরাইয়া বেগম গত শনিবার সাতকানিয়া উপজেলা থেকে নগরীতে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। রাতে আত্মীয়ের বাসা ছিলেন। স্বামীসহ আবার বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু সেতু এলাকায় এসে দেখেন, গাড়ি চলছে না।
বিপাকে পড়া সুরাইয়া বলেন, সাতকানিয়া যাব। দুই ঘণ্টা হয়েছে এখানে এসেছি। কিন্তু কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। কীভাবে যাব, জানি না। কাউন্টারে গিয়েছিলাম। গাড়ি চলবে না বলছে। গরমে খুবই খারাপ অবস্থা।
রুবেল নামে এক যাত্রী বলেন, কক্সবাজার যাব। ৪২০ টাকার ভাড়া ৭০০ টাকা। সব কাউন্টার বন্ধ।
সৈকত মিয়া নামে আরেক যাত্রী বলেন, আধাঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। চট্টগ্রাম মেডিকেলে এক রোগীকে রক্ত দিতে যাচ্ছি। কিন্তু কোনোভাবেই যেতে পারছি না। এটা তো ভালো হচ্ছে না। মামলা-হামলা হলে দেশে আইন আছে। এরা তো আইনের বাইরে কাজ করছে। এদের ডাবল শাস্তি দেওয়া উচিত। হাজার হাজার মানুষ লাইন ধরে আছে। কেউ শহরে সুখে আসেনি। সবাই বিভিন্ন কাজে এসেছে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) তারেক আহমেদ বলেন, দূরপাল্লার গাড়ি বন্ধ আছে। অলঙ্কার, একে খান মোড়, সিটি গেট, কদমতলী থেকে দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়ছে না। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। শহরে বাস চলছে। কোথাও তেমন কোনো গণ্ডগোলের খবর আমরা পাইনি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ঐক্য পরিষদে যুক্ত সংগঠন পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, আমাদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে। দূরপাল্লার বাস কোথাও চলছে না। চট্টগ্রাম শহরে যে বাসগুলো চলছে সেগুলো চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন বাস মালিক সমিতির। তারা ধর্মঘটের সঙ্গে নেই। তাদের ১৫০-২০০টি বাস আছে। সেগুলো হয়তো নগরে চলছে।
ধর্মঘট আহ্বানকারী সংগঠনের দাবির মধ্যে আছে চুয়েটে দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে চার-পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর ও তিনটি বাস জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা গ্রহণ, ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার। চুয়েটের তিন শিক্ষার্থীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি নিবন্ধিত ছিল কি না, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তিনজন একইসঙ্গে মোটরসাইকেলে ওঠার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন হয়েছে কি না ও তারা মাদকাসক্ত ছিল কি না— এসব বিষয় তদন্তে কমিটি গঠনের দাবিও রয়েছে তাদের। চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ওয়েবিল চেকার-লাইনম্যানসহ পরিবহণ শ্রমিকদের গণগ্রেফতার বন্ধের দাবিও জানিয়েছে তারা।
এর আগে ২২ এপ্রিল বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে শাহ আমানত পরিবহণের একটি বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। মোটরসাইকেলে আরোহী ছিলেন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই শান্ত সাহা (২০) ও তৌফিক হোসেন (২১) নামে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। শান্ত চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের ও তৌফিক ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। একই ঘটনায় আরেক শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার দুদিন পর ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে।ঘটনার পর ২২ এপ্রিল বিকেল থেকে ২৫ এপ্রিল রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলনের মধ্যে ২৫ এপ্রিল বিকেলে চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে চুয়েটের পরীক্ষাসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে ছাত্রদের বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এবং ছাত্রীদের শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।এ ঘোষণার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বর ও মূল ফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহণের দুটি বাসে তারা আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় উপাচার্য, সহউপাচার্য ও রেজিস্ট্রার প্রায় দুঘণ্টা ওই ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ও হলত্যাগের নির্দেশনা পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেয় চুয়েট প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের হলে থাকারও অনুমতি দেওয়া হয়।এরপর রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে অবরোধ তুলে নিলে চার দিন পর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি ক্যাবের : ৪৮ ঘণ্টার পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), চট্টগ্রাম। গতকাল রোববার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা বলেন, গণপরিবহণ, শ্রমিক ও মালিকরা দেশের আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বারবার দেশের জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায় করার কারণে তারা বেপরোয়া হয়ে গণপরিবহণের লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যা করবে। আর তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চাইলেই মানুষকে জিম্মি করে ঘর্মঘট ডাকবে, এটা নিছক বর্বরতা ছাড়া কিছুই নয়। তারা যদি আইনের শাসনে বিশ্বাসী হয়, তাহলে আইনিভাবেই তাদের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় হয়ে থাকলে তার প্রতিকার চাইতে পারত।
বিবৃতিতে ক্যাবের নেতারা নিরাপদ গণপরিবহণের দাবিতে চুয়েট শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান। নেতারা আরও বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বা অন্য যারা এই ব্যবসায় যুক্ত, সবাই সরকারি দলের নেতা বা কর্মী। আর তারাই বিভিন্ন সময়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের জন্য জনগণকে বারবার জিম্মি করেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার দলীয় নেতাকর্মী হিসেবে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে তাদের বিরত থাকা উচিত।
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, মো. সেলিম জাহাঙ্গীর ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি আবদুল মান্নান যুক্তভাবে এ বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অধস্তন আদালতও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন।

অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগ। ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম ই ফ্যামিলি কোর্ট উদ্বোধন করতে এলে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাএর সাথে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন,

চট্টগ্রাম বিভাগ ও চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎকালে তাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।তারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এর ন্যায় পদ -পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল নির্ধারণের ও দাবি জানান।নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ বিচার বিভাগ আইনের ধারক ও বাহক।
Pp

কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মকর্তাও কর্মচারীগন বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই বৈষম্য দূরীকরণের জোর দাবি জানান।আইন সচিব অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন, মহানগর দায়রা জজমোঃ হাসানুুল ইসলামও চট্টগ্রামের সকল স্তরের বিচারক মন্ডলী।উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এনামুল হক আকন্দ ।বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পারভেজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাং শামসুল হক, , চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ