আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় ২ সদস্য গ্রেফতার ঃ জিহাদী বই জব্দ

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা থেকে জঙ্গি সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়ন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানিয়েছে, তারা নিষিদ্ধ ‘আনসার আল ইসলামে’র মতাদর্শে পরিচালিত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘শাহাদাত’ এর সদস্য। গ্রেফতার দু’জন হলেন, আসাদুজ্জামান আসিফ (২২) ও মো. আহাদ (২১)। এর মধ্যে আসিফের বাড়ি পঞ্চগড়ে ও আহাদের পাবনা জেলায়। আসিফ পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়ার ছাত্র বলে র‌্যাব জানিয়েছে।
র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শরীফ উল আলম জানান, গোপন খবর পেয়ে শিকলবাহার একটি একতলা পরিত্যক্ত ঘর থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাঁচ থেকে ৬ জন পালিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু জিহাদী বই জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, গত ২৩ মে ঢাকার গুলিস্তান ও সাইনবোর্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ তিনজন সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আফগানিস্থানে তালেবানের উত্থানে উদবুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম এ যোগ দেয় বলে জানান। তাদের দেওয়া তথ্যে চটগ্রাম থেকে এ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে তাদের কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়লে তারা আনসার আল ইসলামের মতাদর্শী ‘শাহাদাত’ নামে আরেকটি জঙ্গি সংগঠন চালু করে। এর মাধ্যমে তারা আনসার আল ইসলামের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করত। ‘শাহাদাত’ সংগঠনটি সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি ভারত থেকে পরিচালনা করতেন। যোগাযোগের জন্য তারা ‘বিপ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতেন।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় তাদের গ্রুপের তিন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার পর তারা সতর্ক হয়ে যায়। পরে সালাউদ্দিন একটি অডিও বার্তার মাধ্যমে সবাইকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আমাদের জানিয়েছে, তাদের গ্রুপকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সমমনা উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের তথ্য গোপন রাখতে ‘গোরাবা’ নামে একটি অ্যাপস তারা ব্যবহার করে। সংগঠনের সবপ্রকার নির্দেশনা এ অ্যাপসের মাধ্যমে দেওয়া হতো।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ