আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

কক্সবাজার:

১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশের ঘাড়ে

আবু বক্কর সিদ্দিক বিশেষ প্রতিনিধি উখিয়া:

উখিয়া-টেকনাফ:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ। আর এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ১২ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এটাই সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে শরণার্থী সাড়ে ৪৩ মিলিয়ন। বর্তমানে বিশে^র সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির বাংলাদেশে। উখিয়া-টেকনাফ ও ভাসানচরে আশ্রয় নিয়েছে ১২ লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত এসব বাসিন্দা এখন বাংলাদেশের বোঝা হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, সুদান থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে মিয়ানমার ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রসহ আরও অনেক জায়গায়, সংঘাত, জলবায়ুর বৈরী আচারণ এবং উত্থান-পতন মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে জোর করে সরিয়ে দিচ্ছে, যা গভীর মানবিক দুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ১২ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৩.৫ মিলিয়ন শরণার্থী। এমতাবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে বিশ^ শরণার্থী দিবস।
সাত বছর পেরিয়ে গেলেও নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পাননি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পগুলোতে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গত বছরের ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে এক হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গার পাশাপাশি আরও ছয় হাজার জনকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত হলেও মৌলিক কিছু বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মতপার্থক্য থেকে যায়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৩০০ জন করে সপ্তাহের পাঁচ দিনে দেড় হাজার রোহিঙ্গাকে পাঠানোর কথা।
কুনমিংয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের রাখাইনে আমন্ত্রণ জানায় মিয়ানমার। গত বছরের ৫ মে রাখাইনের মংডু পরিদর্শন করে ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। তারা ফিরে এসে বেশকিছু বিষয়ে পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে প্রত্যাবাসন নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেয়। কিন্তু এরপরও একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আমরা চাই স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন। যত দিন পর্যন্ত তারা ফেরত যাচ্ছে না, তাদের দেখাশোনা আমরা করব। রোহিঙ্গা সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শরণার্থীদের বৈশ্বিক সংহতি এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের জীবন পুনর্নির্মাণের সুযোগ প্রয়োজন। পাশপাশি তাদের সমান সুযোগ, কাজ, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রয়োজন।
উদার আশ্রয়দানকারী দেশগুলো, যেগুলো মূলত নিম্ন বা মধ্যম আয়ের দেশ, তাদের শরণার্থীদের সমাজ এবং অর্থনীতিতে সম্পূর্ণরূপে অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা ও সম্পদের প্রয়োজন।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বাণীতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া দেশগুলোকে আরও বেশি সহায়তার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন আমরা শরণার্থীদের সংঘাতগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিই, যাতে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া লোকেরা তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পারে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে ইরান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ