আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চালু রাখতে সচেতন নাগরিক সমাজের আকুতি

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চলতি বছরের মে মাসের শেষদিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের চলাচল বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অথচ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন স্থায়ী করা এবং নতুন আরেকটি ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার রেলওয়ে যাত্রী কল্যাণ পরিষদ। কিন্তু ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারসহ (ট্রেনচালক) জনবল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে এই দাবি পূরণ না করে উল্টো বিশেষ ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজসহ যাত্রীদের মধ্যে। যাত্রীবাহী এই ট্রেন বন্ধের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে করেছে চট্টগ্রাম কক্সবাজারের সচেতন নাগরিক সমাজ।সম্মেলনে পুনরায় ট্রেন চালুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানানো হয়েছে। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুনরায় ট্রেন চালুর আহবান জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের সচেতন নাগরিকের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কক্সবাজারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯৫৭ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইনটির জন্য তৎকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন। ইতিহাসের সেই সূর্য সন্তানের পথেই আপনার সাহসী অগ্রযাত্রায় বনাঞ্চল, জমি, বাড়িঘর ভেদ করে মানুষের ক্ষতি পুষিয়ে প্রায়ই বিশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আমাদের জন্য বিশাল এক পাওনা। ‘পর্যটন এক্সপ্রেস’ ও ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামক দুটি ট্রেন ঢাকা থেকে আগমন করছে যার ফলে মানুষ তার গন্তব্যে নিরাপদে ও নির্ভয়ে যাওয়া-আসা করছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় যে, একটি ট্রেন বহু অনুরোধে বিশেষ ট্রেন হিসেবে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার লাইনে চলাচল করছিল।
নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারি এই বিশেষ ট্রেনটি ঈদে বাড়তি যাত্রী বহনে সুবিধা দিয়েছে মাত্র। গত ২৪ মে থেকে এই ট্রেনটি খুবই খোড়া যুক্তিতে বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে যার ফলে টিকেট বিক্রয় এরই মধ্যে বন্ধ। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার ট্রেন চলাচলের ওয়ার্কিং টাইমটেবিল ৫৩ নম্বর অনুসারে এখানে তূর্ণা এক্সপ্রেস, মহানগর গৌধুলী এক্সপ্রেস ও মেঘনা এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাত্রী সেবা দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল। পরে জনস্বার্থ অনুসন্ধানে জানতে পারি যে, প্রায়ই এক লাখ যাত্রী প্রতিদিন ট্রেন টিকেট পেতে ইচ্ছুক হয়েও অনলাইনে ব্যর্থ হচ্ছেন। চট্টগ্রামে বসবাসরত কমজীবী, সাধারণ নাগরিক, মেডিকেল সেবায় আগত রোগী, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তে নির্বাক। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে রেলওয়ে জনগণের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ মাধ্যম ও লাভজনক খাত, যেখানে ৭২ থেকে ১৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত হাজার হাজার কিলোমিটার ট্রেন চলাচল হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা যারা সচেতন মহল আমরা বুঝতে পারছি যে বাংলাদেশ রেলওয়েকে অর্থনৈতিক ‘লাভহীন’ প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করবার জন্য রেলওয়েতে অবস্থানরত একটি ঘাপটি মারা কুচক্রিমহল যারা দেশের উন্নয়ন ও নাগরিক স্বার্থের বিরুদ্ধে নিজ স্বার্থ হাসিলে কাজ করছে। তারা বিভিন্ন প্রাইভেট পরিবহন সংস্থার সাথে আঁতাত করে এডিবির সাড়ে আঠারো হাজার কোটি টাকার প্রকল্পকে অলাভজনক ও অকার্যকর করার কাজে মেতে আছে। অথচ ৫৩ নম্বর টাইম টেবিলের এই তিনটি ট্রেন চট্টগ্রামে নয় ঘণ্টা করে বিরতিতে রয়েছে এবং বিশেষ ট্রেনের টিকিট বিক্রি প্রতিদিন এক ট্রিপে তিন লাখ টাকা। এই চক্রান্তকারীদের হাত থেকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে চুক্তি অনুসারে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের যাত্রীদের জন্য ট্রেন সেবা চালু করলে আমরা উপকৃত ও কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ হবো।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মাহফুজুর রহমান বলেন, কক্সবাজার ট্রেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। সেটা তার মেয়ে শেখ হাসিনা পূরণ করেছে। রেলে কিছু মানুষ আছে, যারা এ প্রকল্পকে বন্ধ করে দিতে চায়। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থের জন্য এটা করছে। সাংবাদিকসহ সবাই মিলে রেলওয়ে ভবন গিয়ে স্মারকলিপি দিতে পারে। যদি এ ট্রেন বন্ধ হয় আমরা রেললাইনে গিয়ে বসব। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিম রেজা বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ট্রেন। কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প বেশ ব্যয়বহুল। যদি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে রেল কর্তৃপক্ষ আয় থেকে বঞ্চিত হবে। আয় না হলে ঋণের সুদ কীভাবে দেবে। এটা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। সংবাদ সম্মেলন থেকে সোমবার (২৪ জুন) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এ কে এম সারয়ার কামাল, স্থপতি আশিক ইমরান ও নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে চলাচলরত যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ করার কারণে দেশের অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মানুষ আনন্দিত। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল করলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উক্ত রুটে ট্রেন বন্ধ করার সিদ্ধান্তে এ অঞ্চলের জনগণের মাঝে হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই রেললাইন কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করেছেন। যেখানে উক্ত লাইনে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর কথা সেখানে ঘটছে তার উল্টো। আর তুলনামূলকভাবে ট্রেনে ভ্রমণ সুবিধা হওয়ায় স্বতস্ফূর্তভাবে মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় এনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ না করার জোর দাবি জানান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, গত বছরের ১১ নভেম্বর চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত বছরের ১ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যটক এক্সপ্রেস নামের আরেকটি ট্রেন চালু করে রেল। শুধু ঢাকা-কক্সবাজার রুটের দুটি ট্রেনের প্রতিটিতে ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয় চট্টগ্রাম স্টেশনের জন্য। ঢাকা থেকে পরপর দুটি ট্রেন চালু করলেও চট্টগ্রাম থেকে কোনো ট্রেন দেওয়া হয়নি। রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও নাগরিক সমাজ ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল। এই পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। গত ৮ এপ্রিল এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চালুর পর থেকে এই ট্রেন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যাত্রীদের চাপে এরপর দুই দফায় বিশেষ ট্রেনের সময় বাড়িয়ে ১০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। কিন্তু ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের সংকট থাকার কারণ জানিয়ে বন্ধ ঘোষণার প্রায় ১০ দিন (৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত) ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ