আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

মাদক মামলার আসামীদের সাজা বহালে ব্যবস্থা নিতে হবে ঃ বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখছেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, মাদক একটি বড় সমস্যা। মাদকের ছোবল থেকে আমাদের শিশু-কিশোর ও যুব সমাজকে রক্ষা করতে হবে। হেরোইন, ইয়ারা ও ফেন্সিডিলসহ যারা মাদক নিয়ে আটক হয় তাদের মধ্যে কেউ মামলা থেকে খালাস পায়, আবার কারও কারও নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজা হয়। মাদক মামলার রায়ে যে সকল আসামীর ৫ থেকে ৭ বছর সাজা হয়, আপিলের পরও তাদের সাজা যাতে বহাল থাকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং মামলার সাজা ও খালাসের রায়ের কপি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও বাদীকে দিতে হবে। কাস্টমস অ্যাক্ট আইন ও ফৌজধারী আইনের মামলাগুলোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন কতটুকু তা প্রতিমাসে প্রতিবেদন আকারে জানাতে হবে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। ১৮ বছরের নীচে যে সকল শিশু-কিশোর ড্যান্ডি (মিথাইল মেথাক্রাইলেট) ও মাদক সেবন করে তাদের বিচারের জন্য আলাদা শিশু আদালত রয়েছে। তাদেরকে সংশোধনের জন্য সমাজসেবার সহযোগিতায় গাজীপুরে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে প্রেরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সকল ধরণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত চোরাচালান নিরোধ আঞ্চলিক টাস্কফোর্স সভা, বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা, বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন সহায়তা কমিটির সভা, বিভাগীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন টাস্কফোর্স সভা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণের সাথে সমন্বয় সভা, বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলন ও জেলা প্রশাসকগণের মাসিক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় পৃথক পৃথক সভার আয়োজন করেন। সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও বিভাগের জেলা প্রশাসকগণের মধ্যে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০২৪-২৫’ স্বাক্ষরিত হয়। বিগত সভার কার্যক্রম ও অগ্রগতি তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম অনীক চৌধুরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফখরুল ইসলাম।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ইভটিজিং, খুন ও ধর্ষনের ঘটনা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। ইতোপূবে কিশোর গ্যাংয়ের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে আসা মাদক, অস্ত্রের চোরাচালান, তেল পাচার রোধ ও চোরাচালান রোধে সড়ক পথের পাশাপাশি নৌপথে টহল আরও জোরদার করতে পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও নৌ-পুলিশসহসংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তদারকি বাড়াতে হবে। একইসাথে রিসোর্ট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর প্রতিও নজর রাখতে হবে।
সভায় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা বলেন, সম্মিলিত উদ্যোগের কারণে বিভাগের প্রত্যেক জেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে মাদক সেবন ও উদ্ধারের পর পুলিশ বাদী হয়ে যে সকল মামলা দায়ের করা হয় সেগুলোর রায়ের সাজা ও আপীলের বিষয়টি তদারকি করার জন্য সেগুলো তদারকি করার জন্য পুলিশের আলাদা একটি ইউনিট রয়েছে। এ বিভাগে ৮০ শতাংশ আসামীর সাজা হয় মাদকের মামলায় আর অন্যান্য বাদীর মামলায় সাজা হয় ২০ শতাংশ আসামীর। চামড়ার দাম আরও বৃদ্ধি করতে ব্যবসায়ীদেও দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি ভারত থেকে আসা নিম্নমানের চিনি ও বিপিসি’র নিম্নমানের গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন ডিআইজি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন অনেক গাড়ি চলাচল করে। পুলিশ ও বিআরটিএ কেউ এগুলোর দায় এড়াতে পারে না। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো আটক করে রাখার জন্য জেলা ও হাইওয়েতে কোন ডাম্পিং স্টেশন নেই। ডাম্পিং স্টেশন না দিলে সড়কে দুর্ঘটনা, যানজট ও বিশৃঙ্খলা লেগে থাকবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার সোর্স ও কথিত ক্যাশিয়ার শাহজাহান প্রকাশ আকাশ নামের এক ব্যক্তি পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ ব্যাটারী রিক্সা ও গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সা থেকে প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে। নিরীহ লোকজনদের ধরে থানায় নিয়ে মামলা দেয়ার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় করে পুলিশের কথিত সোর্স আকাশ। তার চাঁদাবাজি ও অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে বায়েজিদ থানাধীন এলাকাবাসী সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করলেও ভূক্তভোগীরা এ পর্যন্ত কোন সুফল পায়নি। পুলিশের সোর্স আকাশের চাঁদাবাজি নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সভায় পণ্য পরিবহণ নেতা গোলাম মোস্তফার এমন বক্তব্যের আলোকে সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, চাঁদাবাজ বা পুলিশের সোর্স যেই হোক, প্রমাণ ও অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বায়েজিদ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি মহানগরীর ট্রাফিফের চার জোনে চারটি ডাম্পিং স্টেশন করার ব্যাপারে সিটি মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চেয়েছেন।
সভায় গাড়ির ডাম্পিং স্টেশনের বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, এখানকার খাস জমিতে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশের আটককৃত গাড়িগুলো রাখার জন্য ডাম্পিং স্টেশন করা যায় কি না সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে চিঠি দিয়ে জানাব। পাশাপাশি মেট্টোপলিটন এলাকায় আটককৃত গাড়িগুলো রাখার জন্য ডাম্পিং স্টেশন চেয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে অবগত করা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোয়ায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক সভাগুলোতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরেআলম মিনা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল মান্নান মিয়া, বিজিবি’র চট্টগ্রাম রিজিয়নের পরিচালক (লজিস্টিক) লেঃ কর্ণেল মোঃ শরীফ উল্লাহ, বিডা’র পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন, নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান (চট্টগ্রাম), শাহীন ইমরান, (কক্সবাজার), মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন (রাঙামাটি), মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), সুরাইয়া জাহান (লক্ষ্মীপুর), খন্দকার মুঃ মুশফিকুর রহমান (কুমিল্লা), মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার (ফেনী), মোঃ কামরুল হাসান (চাঁদপুর), মোঃ সহিদুজ্জামান (খাগড়াছড়ি), শাহ মোজাহিদ উদ্দিন (বান্দরবান), শারমিন আক্তার (নোয়াখালী), রেলওয়ে পুলিশ সুপার মোঃ হাছান চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদ হোসেন মোল্লা, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের পিপি হরিপদ চক্রবর্তী, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাটের উপ-কমিশনার (কুমিল্লা) মোঃ কেফায়েত উল্লাহ মজুমদার, যুগ্ম কমিশনার (চট্টগ্রাম) মোঃ মারুফুর রহমান, সহকারী পরিচালক আবদুল মতিন তালুকদার, পণ্য পরিবহন মালিক গ্রুপের সদস্য গোলাম মোস্তফা প্রমূখ। পৃথক সভাগুলোতে বিভাগের বিভিন্ন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, র‌্যাব-পুলিশ-কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ