আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

নেমে এসেছে স্থবিরতা ঘরে বসেই অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন চউক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনূছ অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। এরপর থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি-নেতারাও। আতঙ্কে আছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় পরিচয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরাও। সরকার পতনের পর তারা দিয়েছেন গা ঢাকা। চউক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনূছ আওয়ামী সরকারের শেষ সময়ে এসে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকে সশরীরে অফিস করছেন না ‘আত্মসম্মান’ চিন্তা করেই তিনি অফিসে উপস্থিত হচ্ছেন না। তবে ঘরে বসেই অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি।
জানা গেছে, গত ১৬ দিনে একবারও সংস্থাটিতে দেখা যায়নি চেয়ারম্যান ইউনূছকে। ফলে চউকে নেমে এসেছে স্থবিরতা। উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্তও আটকে আছে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে।
চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনূছকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই দিন চউক চেয়ারম্যান হিসাবে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম জহিরুল আলম দোভাষের মেয়াদ শেষ হয়। মোহাম্মদ ইউনূছকে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। মোহাম্মদ ইউনূছ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ চট্টগ্রামের মহাসচিব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএ’র এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিডিএ চেয়ারম্যানও যে কোনো সময় বাতিল হতে পারে। মূলত এই ভয়ে চেয়ারম্যান অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটা পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি। আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থেকে তিনি সিডিএতে চেয়ারম্যান হিসাবে থেকে যাবেন সেটা কেউ মানবেন না। অফিসে আসলেই বিশৃঙ্খলা হবে।
জানতে চাইলে চউক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনূছ বলেন, আত্মসম্মানের ভয়ে অফিস করিনি। পুলিশ একটিভ হোক, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক, তখন অফিস করবো। এখন নির্দেশনা দিচ্ছি। প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রেখেছি। কয়েকদিন যাক, সবাইকে সাথে নিয়ে অফিসিয়াল কাজ শুরু করবো।
চউক সূত্রে জানা গেছে, সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের অফিসেও হামলা হয়েছে। এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে চউকেও। ইতোমধ্যে বিএনপি সমর্থক কর্মচারীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে সংস্থাটিতে। যার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে খোদ সংস্থা প্রধানের মধ্যেও। তাছাড়া চসিক কার্যালয়ে ঘেরাও করেছিল ছাত্ররা। এমন ঘটনা চউকে ঘটতে পারে এমন আশঙ্কাও আছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই প্রতিষ্ঠানের কাজ তদারকি করছেন চউক চেয়ারম্যান ইউনূছ। যোগাযোগ রাখছেন সংস্থার দায়িত্বশীলদের সঙ্গে। তাদের মাধ্যমেই অতিগুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
যোগাযোগ করা হলে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, চেয়ারম্যান স্যার এর মধ্যে অফিস করেননি। কখন থেকে করবেন সেটাও বলতে পারছি না। আমাদের কাজের তেমন সমস্যা হচ্ছে না, আমরা সব কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে নেয়া যায় না। অবশ্য চেয়ারম্যান স্যার শারীরিকভাবেও অসুস্থ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ