আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে তিনদিনের সফরে আসছেন আইএসপিএস প্রতিনিধিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম বন্দরে অষ্টমবারের মত পরিদর্শনে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার সদস্যের ইন্টারন্যাশনাল শিপ এন্ড পোর্ট ফ্যাসেলিটি সিকিউরিটি’র (আইএসপিএস) একটি প্রতিনিধি দল। জাহাজ চলাচল ও সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শনে আগামী ২১ জানুয়ারী তারা তিন দিনের সফরে আসবেন বলে জানা গেছে।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সফরে আসা আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে ইউএস কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কমান্ডার খেইম ভি নাইজির নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম পাওয়া গেছে। অন্য সদস্যরা হলেন-মার্টিন এস ডুনুহুই, ইরভিং এ চিনট্রন এবং মিজ ক্রামির।

ওই কর্মকর্তা জানান, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টু-ইন-টাওয়ারে ওয়ান-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বের যেসব দেশ থেকে জাহাজে পণ্য আমদানি রফতানি করে, সে সব দেশের বন্দর ও জাহাজের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে আইএসপিএস কোড চালু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের মেরিটাইম রুলস অনুসরণ করে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল ইতোপূর্বে আরো সাতবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে তারা চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছিল। আগামী ২১

জানুয়ারি থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তিনদিন এখানে অবস্থান করে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ড, জেটি, সিএফএস (কন্টেনার ফ্রেইট স্টেশন), বন্দর গেইট, সিসিটিভি ক্যামেরা, বন্দরের সিকিউরিটি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা এবং পোর্ট

ফ্যাসিলিটিজ’র আওতাধীন কয়েকটি আইসিডি পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিশেষ করে বন্দরে হ্যান্ডলিংকৃত পণ্য স্ক্যানিং, সিসিটিভি ক্যামেরা, লোকবল, পণ্য তল্লাশির ধরণসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়গুলো তারা দেখে থাকেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নীতিমালা অনুসরণ করে। আইএমও বিশ্বের বন্দর সমুহের জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা রক্ষায় আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে সহায়তা দেয়। সেহেতু চট্টগ্রাম বন্দর এই আইএসপিএস কোড অনুসরণ করে তাদের নির্দেশিত কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করছে শুরু থেকেই। যুক্তরাষ্ট্র যে সব দেশ থেকে তৈরী

পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য আমাদনি করে সে সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তৈরী পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে চীন এবং তাইওয়ানের পর বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্ব প্রণিধানযোগ্য। পানি পথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।

আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের সফর শেষে প্রতিবারই চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু উন্নয়নমুলক পরামর্শ দিয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বাস্তবায়ন করে। ফলে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের কোড বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং তা ধরে রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন এবং অগ্রগতি রিপোর্ট প্রদান করে। যে সব বন্দরে আইএসপিএস কোড অনুসরণ পুরোপুরি হয় না, সে সব বন্দরকে একটি সময় দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোডের শর্ত পূরণের সময় দেয়া হয়। যে সব বন্দর এতে ব্যর্থ হয় সেগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। কালো তালিকাভুক্ত বন্দর দিয়ে আমেরিকায় কোন পণ্য পরিবহন করা যায় না। ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকান কোস্টগার্ডের আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শুরু করে।

ইতোপূর্বে তারা চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে সব শর্ত পূরণের তাগাদা দিয়েছিল, তা পূরণ করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে সর্বশেষ সফরে এসেছিলেন। তারা কয়েকটি আইসিডিসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিদর্শন করে সন্তোষজনক রিপোর্ট প্রদান করেছিলেন। প্রায় আড়াই বছর পর আবারো আইএসপিএস কোডের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, আগামী ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি তিনদিন তারা চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও স্থাপনা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। প্রতিনিধি দল জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার বিষয়টি মূল্যায়ন করবে এবং কয়েকটি বেসরকারী কন্টেইনার ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব জানান, আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন নিয়মিত বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধা ও বন্দর উন্নয়নের অংশিদারিত্বের অংশ। তারা আমাদের দেশ থেকে তৈরী পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে থাকে। সেজন্য তাদের প্রেসক্রিপসনের কমপ্লায়েন্সগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা তা দেখে থাকেন।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ