আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে গণমাধ্যমের ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

স্বৈরাচারের দোসররা এখনো দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালাচ্ছে। তারা নানাভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। গণমাধ্যমেও ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসররা রয়েছে। তাদের বিতাড়িত করতে না পারলে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না।’সোমবার ৩ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

স্বৈরাচারের দোসরদের আত্মসমর্পণের আহবান জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ‘আপনারা আত্মসমর্পণ করুন। জুলাই অভ্যুত্থানকে স্বীকার করুন। আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। আমরা চেয়েছিলাম নিয়মতান্ত্রিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে; কিন্তু তা হচ্ছে না। তাই আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। গণমাধ্যম, পুলিশ, প্রশাসনসহ সব জায়গা থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের বিতাড়িত করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ‘হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরতে হবে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলার জন্য। কিছু গণমাধ্যম জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট ধারণ থেকে সরে এসেছে। আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, কিছু গণমাধ্যম তাঁদের নিহত ও মৃত বলে লিখছে। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা শহীদ। বর্তমানে গণমাধ্যম যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তা অতীতে বা কত দিন আগে সম্ভব ছিল, আমাদের জানা নেই।

বক্তারা আরো বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বহু জায়গায় আছে। গণমাধ্যমেও ষড়যন্ত্রকারীরা রয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ায়ও আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। ভারতের সঙ্গে আমরা বন্ধুত্ব চাই, কিন্তু সেটা হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। যেকোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সাংবাদিকরা প্রস্তুত আছেন।’
জুলাই বিপ্লবের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে ফ্যাসিবাদের দোসরদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার নীতি পরিহার এবং গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে ধারণকারী গণমাধ্যম সংম্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশ প্রবীণ সাংবাদিক সরোয়ার আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অর্ন্তর্বতীকালীন কমিটির সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জাহিদুল করিম কচি। দৈনিক দিনকাল চট্টগ্রামের প্রধান হাসান মুকুল’র সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরোচীফ মোস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সাংবাদিক কামরুল হুদা, ওয়াহিদুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, মাহাবুবুর রহমান, মাহাবুব মাওলা রিপন, জীবন মুছা, আবু সুফিয়ান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী, মোঃ আলমগীর নূর, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ তোয়াহা, বজলুল হক ও কামাল পারভেজ।

সংহতি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সমন্বয়ক রাসেল আহমদ, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর, রিদুয়ান সিদ্দিকী, সাইফুর রহমান খান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার বিশিষ্ট নারী নেত্রী জান্নাতুল নাঈমা রিকু, রাজনীতিবিদ সাব্বির আহমেদ, চট্টগ্রামের যুব সংগঠক মোশাররফ হোসাইন, নাসিম উদ্দিন চৌধুরী নাসিম, শাহেদুল ইসলাম শাহেদ, নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম চট্টগ্রামের দপ্তর সাজ্জাদ হোসেন খান, কোতোয়ালি থানার যুব সংগঠক আব্দুল জলিল, মোঃ হাসান,

গণমাধ্যম কর্মী আবু বক্কর রাজু, ছাত্র সংগঠক সৌরভ প্রিয় পাল, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, চকবাজার থানার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক শহিদুল ইসলাম শহীদ, দেওয়ানবাজার ওয়ার্ড যুব সংগঠক এরশাদ আলী, মোহাম্মদ আসমান, মোহাম্মদ খোরশেদ, কোতোয়ালি থানা ছাত্র সংগঠক শাহাদাত হোসেন নাবিল, আরশে আজিম আরিফ, আহমেদ সেহতাব, যুব সংগঠক সাইফুল ইসলাম প্রমূখ। বিক্ষোভ সমাবেশে গণমাধ্যম কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ