আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার পরিদর্শনে চসিক টিম।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চট্টগ্রামের ফিসারিঘাটস্থ মাছবাজারের ঘাট দখলের অভিযোগ উঠেছিল চট্টগ্রামের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। শুধু ঘাটই নয়, অবৈধভাবে এরপর সিটি কর্পোরেশনের নাম ভাঙিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা দখলে নিতে বেশ কিছু স্থাপনা নিমার্ণের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ওই এলাকার পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গণহারে চাঁদা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এত সব অভিযোগে বিরক্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

এবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কর্পোরেশনের একটি টিম। কথা বলেছেন সব শ্রেণির ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও। এরপর মৎস্যজীবি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে; কেউ যদি সিটি কর্পোরেশন, মেয়র, কিংবা মেয়রের পিএসের নামেও মাছবাজার থেকে চাঁদাবাজি করেন; তাদের ধরে যেন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তারা হলেন: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু ও মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান।

বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তারা ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার পরিচালনারা সাথে জড়িত জাতীয় মৎসজীবি সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে মাছ বাজার পরিদর্শন করেন।

এসময় উচ্চ আদালতের স্থিতিআদেশ উপেক্ষা করে বন্দর থেকে লিজ নেয়া জমিতে বেআইনীভাবে চসিকের খাস কালেকশন, পরিবহন ও সাধারণ মৎস্যজীবীদের কাছে চাঁদাবাজি, চসিকের অধিভুক্ত নয় এমন জমিতে চসিকের লোক পরিচয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বাজারের ল্যান্ড ডিমারকেশন, ঘাটের নতুন টেন্ডারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রাজস্ব কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করেন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি।

জানা যায়, দেশের সবচেয়ে আধুনিক এই ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার থেকে মাছের দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় বিদেশেও। এ অঞ্চলের মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িত লক্ষাধিক মৎসজীবি। ২০১৫ সালে সাধারণ মানুষের দাবির মুখে জনবহুল ফিরিঙ্গিবাজার থেকে মাছ বাজার নতুন ফিসারীঘাটে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। পুরোনো বাজারটি সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

কিন্তু ৫ই আগস্টের প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারীরা বাজারটি পুরোনোস্থানে সরিয়ে নিতে নানামুখী প্রচেষ্টা শুরু করে। যদিও ফিরিঙ্গিবাজারে বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, গির্জা থাকার কারণে স্থানান্তরের বিষয়টি একেবারেই অযৌক্তিক বলছেন এলাকাবাসী।

নথি অনুযায়ী, বন্দর ও জেলা প্রশাসনের পারস্পরিক ভূমি বিরোধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলা চলমান আছে (সিভিল বিবিধ পিটিশিন নম্বর ৭৮১/২৪, হাই কোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং ৪৬২৪/২৫)। এছাড়া বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল চট্টগ্রামে (এল. এস. টি নম্বর ৪৮৪৫/২৪) ও বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে আরেকটি মামলা (নম্বর ৭০/২৫) চলমান আছে। মৎস্যজীবীদের পূনঃর্বাসন না করে কোন ধরনের উচ্ছেদ না করার হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে।

এর আগে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাছবাজার দখলের অভিযোগ উঠে দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মাছ বাজারের দুই পাশে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বিএনপির দুই নেতা। সেই ব্যানারে তাদের ছবির সাথে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিও ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাগানো সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছিল চসিকের একটি স্মারক নম্বরও। তারা যে সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে ছিলেন সেখানে দুজনের ছবি ছাড়াও সবার ওপরে দেওয়া হয়েছে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবি। আর সবুজ কালিতে তাদের পরিচয়ে লেখা হয়েছে ‘ইজারাদার’। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর রাতারাতি সেই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়।

সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বন্দর থেকে লিজ নিয়ে বৈধভাবে এই ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। এই বাজারের মাছ আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। অযাচিতভাবে কেউ বাজার দখল করার জন্য অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে সেটি রাষ্ট্রের জন্যই ক্ষতি হবে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’

বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন বলেন, ‘ কতটুকু জায়গা আমাদের লিজ দেওয়া হয়েছে, তা বন্দরের সঙ্গে করা চুক্তিতে উল্লেখ করা আছে। অনেকে ঘাটের কথা বলছেন, অথচ চট্টগ্রামে কিন্তু চাক্তাই-রাজাখালীসহ অনেক ঘাট রয়েছে। এখানে কোনভাবেই ঘাট নির্মাণ করতে দেওয়া যাবে না। বন্দর কোনভাবেই তা প্রশ্রয় দিবে না। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এই জায়গায় কোন অবকাঠামো সৃষ্টি করা যাবে না। বন্দর যদি খাস কালেকশনের জন্য যদি অনুমতি দিয়েই থাকে তাহলে বিষয়টিতো আমাদের জানাতে হবে। যেহেতু বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, ফলে এখানে ডাবল পক্ষ নিয়ে কাজ করতে গেলেই ঠেলাঠেলি হবেএটাই স্বাভাবিক। যার প্রভাব পড়বে বাজারে, পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকেই বেগ পেতে হবে। ফলে যারা ইজারা নিয়েছে আমি তাদের অনুরোধ করবো, আপনারা যেখান থেকে ঘাট নিয়েছে সেখানেই আপনারা ঘাট পরিচালনা করেন। অযথা বাজারে চাঁদাবাজি করবেন না।

তবে ঘাটের ইজারাদার মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান বলেন, ঘাট-বাজার, এসব জায়গা ইজারা দেওয়ার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। ফলে এই ঘাটের ইজারার টাকাগুলো তুলে কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় আমাদের দুইজনকে নিয়োগ করেছেন। কিন্তু এসব জায়গা থেকে টাকা তারা তুলে আমাদের ঘাড়ের উপর চাড়াচ্ছে। তারা বলছে, আমরা নাকি এখানে চাঁদাবাজি করছি। অথচ আমরা গত দুই মাস এখানে আসি না। আমার প্রশ্ন-আইনের মধ্যে আছে কি না, ১৫ বছর মেয়াদে তাদের ঘাট দেওয়া যাবে?

বন্দরের জায়গা সিটি কর্পোরেশন কিভাবে লিজ দেবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘাটই সিটি কর্পোরেশন লিজ দিয়েছে। এখন যেই ঘাট নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, তা সিটি কর্পোরেশন বুঝবে। বন্দরের জায়গা হয়ে থাকলেও ডাক হলে সিটি কর্পোরেশনের। আর বন্দর এদের কিভাবে লিজ দিল গত ১৫ বছর? এত বছর কি বন্দবোস্তি হয়? তাহলে বাজার সমিতির মানুষ কিভাবে আবার এই জায়গা পরিচালনার দায়িত্ব পেল!

ঘাটের আরেক ইজারাদার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু বলেন, চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এই ঘাটের ইজারা দেওয়ার পর থেকেই একটি পক্ষ নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিভাবে ডা. শাহাদাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, সেই চেষ্টা তারা নানাভাবেই করছেন। প্রতিদিন আমরা ১০ হাজার টাকা করে কালেকশন করে সিটি কর্পোরেশনকে দিচ্ছি। ঘাট আর বাজারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বন্দর বলছে, এই বাজারটা তারা সোনালী মৎস্যজীবি সমিতিকে দিয়েছে। তারা বাজারকে ভাড়া দিয়েছে। এসব বিষয় কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা আমাদের দেখতে হবে। সোনালী মৎস্যজীবি সমিতি যদি এই বাজার চালাতে না পারে সেক্ষেত্রে তারা তা বন্দরকে ফেরত দিবে, কিন্তু তা না করে তারা কিভাবে আরেকজনকে ভাড়া দিবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি আইনগতভাবে কতটুকু শুদ্ধ রয়েছে তা জানা নেই, তবে ঘাটের মধ্যে আইন মেনে যতটুকু সম্ভব ততটুকুই কালেকশন করা হচ্ছে। কোনপ্রকার চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসী আমরা করবো না।

সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, ফিসারিঘাট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, উঠে আসছে চাঁদাবাজিসহ অনেক অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে, আমাদের (সিটি কর্পোরেশন) নাম দিয়ে অনেকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা উঠাচ্ছে। বিষয়গুলো নিয়ে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মহোদয় বাজার ও ঘাটের ইজারাদার, সবাইকে ডেকেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে আজ (বৃহস্পতিবার) মেয়র মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসার কথা ছিল। কিন্তু জরুরি কাজে তিনি ঢাকা থাকায় ওনার নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমাদের স্টেড টিমও ঘটনাস্থলে এসেছে। আমরা সবকিছু সার্ভে করে একটি রিপোর্ট মেয়র মহোদয়কে দিব। আমরা বলতে চাই, কেউ যদি সিটি কর্পোরেশন, মেয়র, কিংবা আমার নামেও মাছবাজারে চাঁদাবাজি করে; ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবিসহ সবাইকে বলবো তাকে ধরে আপনারা আমাদের ফোন করবেন।

৬ মাসের জন্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার রায় রয়েছে তারপরও কেন ইজারা দেওয়া হলো জানতে চাইলে মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, বাজারের বিষয়ে আমরা কিছু বলতে চাই না। কারণ বাজার হচ্ছে বন্দরের, ঘাট হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের। ফলে ঘাট বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে দিয়েছে। ঘাট থেকে সিটি কর্পোরেশন খাস কালেকশন করতে পারবে। কিন্তু ইজারাদার বাজার থেকে কোন ধরনের ট্যাক্স, চাঁদা, ফি-বাজার থেকে তুলতে পারবে না। অবৈধভাবে বাজার থেকে কারা চাঁদাবাজি করছে, আপনারা (সাংবাদিক) তাদের ধরেন, তদন্ত করেন। কোন চাঁদাবাজিই এখানে হবে না। আমরা আশা করবো সাংবাদিকদের মধ্যে চাঁদাবাজদের মুখ উন্মোচন হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর কর্মকর্তা ছাবের আহমদ বলেন, বাজারের সীমানা এক জিনিস, ঘাটের সীমানা এক জিনিস। নদীর কূল কর্পোরেশনের ঘাট থাকবেই, তা নীতিমালাতেই বলা আছে। সেই আলোকে এই ঘাট স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে আমরা অনুমতি নিয়েই এই কাজ করেছি। প্রত্যেক বছর বন্দরের তালিকাভুক্ত ঘাটগুলো আমরা ইজারা দিয়ে থাকি। সেই হিসেবে এটিও ইজারা দেওয়া হয়েছে। নদীর কূলের সীমানার মধ্যে কোন ধরনের অবৈধ স্থাপনা রাখার পক্ষে আমরা নই, এগুলো উচ্ছেদ করার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিবো। যেই ঘাট আমরা ইজারা দিয়েছি, ওই ইজারাদার ঘাট রিলেটেড আইন অনুযায়ী যা করণীয় সবটুকু করতে পারবেন। এর বাইরে আমাদের কোন এখতিয়ার নেই। ‘

নথি ঘেটে জানা যায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ হতে লিজ মূলে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর (১৪৭৭৫ নম্বর) এবং ২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের (১৫০৫৩ নম্বর) বোর্ড রেজুলেশনের মাধ্যমে ফিসারিঘাটের ক্যাপিটাল ড্রেজিং থেকে সৃস্ট পরিত্যক্ত এই জমি (১,৭৩,২৬৩ বর্গফুট) বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডকে ১৫ বছর মেয়াদে লিজ দিয়েছিল। সরকারি বিধি মোতাবেক বন্দরের সাথে চুক্তি সম্পাদন করে ২০১৫ সালে ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছিল। সেই বন্দরকে বাৎসরিক ৬৩ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে আসছে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতি। বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক মাছ বাজার। কিন্তু ফিরিঙ্গিবাজার পুরোনো মাছ বাজার বন্দরের এই জমিতে স্থানান্তর নিয়ে সাবেক মন্ত্রী মুহিবুল হাসান নওফেলের সরাসরি আপত্তি ছিল। এছাড়া সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীও ফিরিঙ্গিবাজার থেকে ফিসারিঘাটে নতুন মাছ বাজার স্থানান্তরের ঘোর বিরোধী ছিলেন। সরকার পতনের পর ফিরিঙ্গি বাজার মাছ বাজারের (পুরাতন বাজার) সিন্ডিকেটের সাথে নতুন ফিসারিঘাট মাছবাজার বন্ধে চুক্তিবদ্ধ হন বিএনপি নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, ‘দরপত্রে অংশ নিয়ে সরকারকে রাজস্ব দিতে রাজি নন দখলদাররা। তারা মাসোহারা আদায় করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে ইজারা নেয়া মাছ বাজার দখলে নিতে চাইছেন। বাজার সংলগ্ন ঘাটে চসিকের দরপত্র আহবানে ‘একান্ন লক্ষ টাকা’ ডাক উঠেছে। আইন অনুযায়ী, অভিযোগ উঠা দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথা। উল্টো তারা দিন দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোক দাবি করে ঘর নির্মাণ করছে।’

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, বাজারের খালি জায়গা জোরপূর্বক দখল করার অপচেষ্টা করছে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তি। সিটি করপোরেশনের জায়গা নয় এটি- তাহলে খাস কালেকশন কেন করবে? মেয়রও বেআইনি কাজ কেন করবেন! এদের চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভ হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাসীদের জোরপূর্বক বেআইনী ও অনুপ্রবেশের কারণে বর্তমানে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসহ সকলে ভয়ে ভীত সন্ত্রন্ত।’

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রামে সবজির বাজার চড়া, কমেনি পেঁয়াজের ঝাঁঝ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ফের সবজরি দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দর আবারও উর্ধমূখী। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও কাজির দেউড়ি বাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়েনি। তবে মাছ-মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির দাম আড়ত পর্যায়ে বেশি হওয়ায় খুচরায় এর প্রভাব পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শেষে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতিকেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। কিন্তু গত দুইদিনে কেজিতে অন্তঃত ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। এরপরও খুচরায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারির হিসেবে পেঁয়াজের দর খুচরায় প্রতিকেজি ১০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ মজুত রয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।বাজারে দেশি রসুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে শীতকালীন অধিকাংশ সবজি গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৬০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দেখা গেছে। বাজারে টমেটো মানভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, নতুন শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল, দেশি পটল, দেশি গাজর, দেশি শসা, ছোট করলা প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, কচুরমুখী, লাউ, চালকুমড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ছিল।তবে ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের মতোই আছে। শালগমের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা হয়েছে। বগুড়ার নতুন আলুর দাম কেজিতে অন্তঃত ৪০ টাকা কমে প্রতিকেজি ৪০ টাকায় এবং

মুন্সীগঞ্জের পুরোনো আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, বগুড়ার পুরনো আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচামরিচের দাম কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন লাল শাক-পালং শাকসহ অন্যান্য সব ধরনের শাক আঁটিপ্রতি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্যান্য মুদিপণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি। সরকারিভাবে নির্ধারিত প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯০ টাকা, বুটের ডাল ৬০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা ও খোলা চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজির প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১২০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০ থেকে ১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে এলাচ প্রতিকেজি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।


চালের মধ্যে মোটা চাল ব্রি-২৮ ও স্বর্ণা প্রতিকেজি ৬৪-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা, মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি লালতীর, এসিআই, স্কয়ার কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, লেয়ার ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের মধ্যে দেড় কেজি ওজনের প্রতি পিস দেশি হাঁস ৫০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের চীনা হাঁস প্রতি পিস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৮০ থেকে ৯০০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০ টাকা এবং ছাগল ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা থেকে কমে ১১০ টাকা, সাদা ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও দেশি হাঁসের ডিম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।মাছের মধ্যে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) প্রকারভেদে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া বড় সাইজের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা,

নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।বাজারে এখন ইলিশ আর তেমন নেই। তবে ৭-৮টি মিলে ওজনে এক কেজি হয় এমন কিছু ইলিশ এখনও সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ