আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার পরিদর্শনে চসিক টিম।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চট্টগ্রামের ফিসারিঘাটস্থ মাছবাজারের ঘাট দখলের অভিযোগ উঠেছিল চট্টগ্রামের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। শুধু ঘাটই নয়, অবৈধভাবে এরপর সিটি কর্পোরেশনের নাম ভাঙিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গা দখলে নিতে বেশ কিছু স্থাপনা নিমার্ণের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ওই এলাকার পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গণহারে চাঁদা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এত সব অভিযোগে বিরক্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

এবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কর্পোরেশনের একটি টিম। কথা বলেছেন সব শ্রেণির ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও। এরপর মৎস্যজীবি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে; কেউ যদি সিটি কর্পোরেশন, মেয়র, কিংবা মেয়রের পিএসের নামেও মাছবাজার থেকে চাঁদাবাজি করেন; তাদের ধরে যেন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তারা হলেন: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু ও মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান।

বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তারা ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার পরিচালনারা সাথে জড়িত জাতীয় মৎসজীবি সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে মাছ বাজার পরিদর্শন করেন।

এসময় উচ্চ আদালতের স্থিতিআদেশ উপেক্ষা করে বন্দর থেকে লিজ নেয়া জমিতে বেআইনীভাবে চসিকের খাস কালেকশন, পরিবহন ও সাধারণ মৎস্যজীবীদের কাছে চাঁদাবাজি, চসিকের অধিভুক্ত নয় এমন জমিতে চসিকের লোক পরিচয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বাজারের ল্যান্ড ডিমারকেশন, ঘাটের নতুন টেন্ডারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রাজস্ব কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করেন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি।

জানা যায়, দেশের সবচেয়ে আধুনিক এই ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার থেকে মাছের দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় বিদেশেও। এ অঞ্চলের মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িত লক্ষাধিক মৎসজীবি। ২০১৫ সালে সাধারণ মানুষের দাবির মুখে জনবহুল ফিরিঙ্গিবাজার থেকে মাছ বাজার নতুন ফিসারীঘাটে সরিয়ে নেয়া হয়েছিলো। পুরোনো বাজারটি সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

কিন্তু ৫ই আগস্টের প্রয়াত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারীরা বাজারটি পুরোনোস্থানে সরিয়ে নিতে নানামুখী প্রচেষ্টা শুরু করে। যদিও ফিরিঙ্গিবাজারে বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, গির্জা থাকার কারণে স্থানান্তরের বিষয়টি একেবারেই অযৌক্তিক বলছেন এলাকাবাসী।

নথি অনুযায়ী, বন্দর ও জেলা প্রশাসনের পারস্পরিক ভূমি বিরোধ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলা চলমান আছে (সিভিল বিবিধ পিটিশিন নম্বর ৭৮১/২৪, হাই কোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং ৪৬২৪/২৫)। এছাড়া বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল চট্টগ্রামে (এল. এস. টি নম্বর ৪৮৪৫/২৪) ও বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে আরেকটি মামলা (নম্বর ৭০/২৫) চলমান আছে। মৎস্যজীবীদের পূনঃর্বাসন না করে কোন ধরনের উচ্ছেদ না করার হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে।

এর আগে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাছবাজার দখলের অভিযোগ উঠে দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মাছ বাজারের দুই পাশে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বিএনপির দুই নেতা। সেই ব্যানারে তাদের ছবির সাথে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিও ছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাগানো সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছিল চসিকের একটি স্মারক নম্বরও। তারা যে সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে ছিলেন সেখানে দুজনের ছবি ছাড়াও সবার ওপরে দেওয়া হয়েছে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবি। আর সবুজ কালিতে তাদের পরিচয়ে লেখা হয়েছে ‘ইজারাদার’। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর রাতারাতি সেই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়।

সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বন্দর থেকে লিজ নিয়ে বৈধভাবে এই ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। এই বাজারের মাছ আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। অযাচিতভাবে কেউ বাজার দখল করার জন্য অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে সেটি রাষ্ট্রের জন্যই ক্ষতি হবে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।’

বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন বলেন, ‘ কতটুকু জায়গা আমাদের লিজ দেওয়া হয়েছে, তা বন্দরের সঙ্গে করা চুক্তিতে উল্লেখ করা আছে। অনেকে ঘাটের কথা বলছেন, অথচ চট্টগ্রামে কিন্তু চাক্তাই-রাজাখালীসহ অনেক ঘাট রয়েছে। এখানে কোনভাবেই ঘাট নির্মাণ করতে দেওয়া যাবে না। বন্দর কোনভাবেই তা প্রশ্রয় দিবে না। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এই জায়গায় কোন অবকাঠামো সৃষ্টি করা যাবে না। বন্দর যদি খাস কালেকশনের জন্য যদি অনুমতি দিয়েই থাকে তাহলে বিষয়টিতো আমাদের জানাতে হবে। যেহেতু বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, ফলে এখানে ডাবল পক্ষ নিয়ে কাজ করতে গেলেই ঠেলাঠেলি হবেএটাই স্বাভাবিক। যার প্রভাব পড়বে বাজারে, পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকেই বেগ পেতে হবে। ফলে যারা ইজারা নিয়েছে আমি তাদের অনুরোধ করবো, আপনারা যেখান থেকে ঘাট নিয়েছে সেখানেই আপনারা ঘাট পরিচালনা করেন। অযথা বাজারে চাঁদাবাজি করবেন না।

তবে ঘাটের ইজারাদার মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান বলেন, ঘাট-বাজার, এসব জায়গা ইজারা দেওয়ার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। ফলে এই ঘাটের ইজারার টাকাগুলো তুলে কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয় আমাদের দুইজনকে নিয়োগ করেছেন। কিন্তু এসব জায়গা থেকে টাকা তারা তুলে আমাদের ঘাড়ের উপর চাড়াচ্ছে। তারা বলছে, আমরা নাকি এখানে চাঁদাবাজি করছি। অথচ আমরা গত দুই মাস এখানে আসি না। আমার প্রশ্ন-আইনের মধ্যে আছে কি না, ১৫ বছর মেয়াদে তাদের ঘাট দেওয়া যাবে?

বন্দরের জায়গা সিটি কর্পোরেশন কিভাবে লিজ দেবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘাটই সিটি কর্পোরেশন লিজ দিয়েছে। এখন যেই ঘাট নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, তা সিটি কর্পোরেশন বুঝবে। বন্দরের জায়গা হয়ে থাকলেও ডাক হলে সিটি কর্পোরেশনের। আর বন্দর এদের কিভাবে লিজ দিল গত ১৫ বছর? এত বছর কি বন্দবোস্তি হয়? তাহলে বাজার সমিতির মানুষ কিভাবে আবার এই জায়গা পরিচালনার দায়িত্ব পেল!

ঘাটের আরেক ইজারাদার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু বলেন, চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এই ঘাটের ইজারা দেওয়ার পর থেকেই একটি পক্ষ নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিভাবে ডা. শাহাদাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, সেই চেষ্টা তারা নানাভাবেই করছেন। প্রতিদিন আমরা ১০ হাজার টাকা করে কালেকশন করে সিটি কর্পোরেশনকে দিচ্ছি। ঘাট আর বাজারের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বন্দর বলছে, এই বাজারটা তারা সোনালী মৎস্যজীবি সমিতিকে দিয়েছে। তারা বাজারকে ভাড়া দিয়েছে। এসব বিষয় কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা আমাদের দেখতে হবে। সোনালী মৎস্যজীবি সমিতি যদি এই বাজার চালাতে না পারে সেক্ষেত্রে তারা তা বন্দরকে ফেরত দিবে, কিন্তু তা না করে তারা কিভাবে আরেকজনকে ভাড়া দিবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি আইনগতভাবে কতটুকু শুদ্ধ রয়েছে তা জানা নেই, তবে ঘাটের মধ্যে আইন মেনে যতটুকু সম্ভব ততটুকুই কালেকশন করা হচ্ছে। কোনপ্রকার চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসী আমরা করবো না।

সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, ফিসারিঘাট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, উঠে আসছে চাঁদাবাজিসহ অনেক অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে, আমাদের (সিটি কর্পোরেশন) নাম দিয়ে অনেকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা উঠাচ্ছে। বিষয়গুলো নিয়ে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মহোদয় বাজার ও ঘাটের ইজারাদার, সবাইকে ডেকেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে আজ (বৃহস্পতিবার) মেয়র মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসার কথা ছিল। কিন্তু জরুরি কাজে তিনি ঢাকা থাকায় ওনার নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। আমাদের স্টেড টিমও ঘটনাস্থলে এসেছে। আমরা সবকিছু সার্ভে করে একটি রিপোর্ট মেয়র মহোদয়কে দিব। আমরা বলতে চাই, কেউ যদি সিটি কর্পোরেশন, মেয়র, কিংবা আমার নামেও মাছবাজারে চাঁদাবাজি করে; ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবিসহ সবাইকে বলবো তাকে ধরে আপনারা আমাদের ফোন করবেন।

৬ মাসের জন্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার রায় রয়েছে তারপরও কেন ইজারা দেওয়া হলো জানতে চাইলে মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, বাজারের বিষয়ে আমরা কিছু বলতে চাই না। কারণ বাজার হচ্ছে বন্দরের, ঘাট হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের। ফলে ঘাট বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি কর্পোরেশনকে দিয়েছে। ঘাট থেকে সিটি কর্পোরেশন খাস কালেকশন করতে পারবে। কিন্তু ইজারাদার বাজার থেকে কোন ধরনের ট্যাক্স, চাঁদা, ফি-বাজার থেকে তুলতে পারবে না। অবৈধভাবে বাজার থেকে কারা চাঁদাবাজি করছে, আপনারা (সাংবাদিক) তাদের ধরেন, তদন্ত করেন। কোন চাঁদাবাজিই এখানে হবে না। আমরা আশা করবো সাংবাদিকদের মধ্যে চাঁদাবাজদের মুখ উন্মোচন হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর কর্মকর্তা ছাবের আহমদ বলেন, বাজারের সীমানা এক জিনিস, ঘাটের সীমানা এক জিনিস। নদীর কূল কর্পোরেশনের ঘাট থাকবেই, তা নীতিমালাতেই বলা আছে। সেই আলোকে এই ঘাট স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে আমরা অনুমতি নিয়েই এই কাজ করেছি। প্রত্যেক বছর বন্দরের তালিকাভুক্ত ঘাটগুলো আমরা ইজারা দিয়ে থাকি। সেই হিসেবে এটিও ইজারা দেওয়া হয়েছে। নদীর কূলের সীমানার মধ্যে কোন ধরনের অবৈধ স্থাপনা রাখার পক্ষে আমরা নই, এগুলো উচ্ছেদ করার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিবো। যেই ঘাট আমরা ইজারা দিয়েছি, ওই ইজারাদার ঘাট রিলেটেড আইন অনুযায়ী যা করণীয় সবটুকু করতে পারবেন। এর বাইরে আমাদের কোন এখতিয়ার নেই। ‘

নথি ঘেটে জানা যায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ হতে লিজ মূলে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর (১৪৭৭৫ নম্বর) এবং ২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের (১৫০৫৩ নম্বর) বোর্ড রেজুলেশনের মাধ্যমে ফিসারিঘাটের ক্যাপিটাল ড্রেজিং থেকে সৃস্ট পরিত্যক্ত এই জমি (১,৭৩,২৬৩ বর্গফুট) বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডকে ১৫ বছর মেয়াদে লিজ দিয়েছিল। সরকারি বিধি মোতাবেক বন্দরের সাথে চুক্তি সম্পাদন করে ২০১৫ সালে ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছিল। সেই বন্দরকে বাৎসরিক ৬৩ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে আসছে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতি। বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক মাছ বাজার। কিন্তু ফিরিঙ্গিবাজার পুরোনো মাছ বাজার বন্দরের এই জমিতে স্থানান্তর নিয়ে সাবেক মন্ত্রী মুহিবুল হাসান নওফেলের সরাসরি আপত্তি ছিল। এছাড়া সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীও ফিরিঙ্গিবাজার থেকে ফিসারিঘাটে নতুন মাছ বাজার স্থানান্তরের ঘোর বিরোধী ছিলেন। সরকার পতনের পর ফিরিঙ্গি বাজার মাছ বাজারের (পুরাতন বাজার) সিন্ডিকেটের সাথে নতুন ফিসারিঘাট মাছবাজার বন্ধে চুক্তিবদ্ধ হন বিএনপি নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, ‘দরপত্রে অংশ নিয়ে সরকারকে রাজস্ব দিতে রাজি নন দখলদাররা। তারা মাসোহারা আদায় করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে ইজারা নেয়া মাছ বাজার দখলে নিতে চাইছেন। বাজার সংলগ্ন ঘাটে চসিকের দরপত্র আহবানে ‘একান্ন লক্ষ টাকা’ ডাক উঠেছে। আইন অনুযায়ী, অভিযোগ উঠা দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথা। উল্টো তারা দিন দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোক দাবি করে ঘর নির্মাণ করছে।’

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, বাজারের খালি জায়গা জোরপূর্বক দখল করার অপচেষ্টা করছে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তি। সিটি করপোরেশনের জায়গা নয় এটি- তাহলে খাস কালেকশন কেন করবে? মেয়রও বেআইনি কাজ কেন করবেন! এদের চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভ হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাসীদের জোরপূর্বক বেআইনী ও অনুপ্রবেশের কারণে বর্তমানে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসহ সকলে ভয়ে ভীত সন্ত্রন্ত।’

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ